ইরানের নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্রে আঞ্চলিক চিরশত্রম্ন ইসরাইল 'নাশকতা' চালিয়েছে দাবি করে কঠিন প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে তেহরান। সোমবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ বলেন, রোববার নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনা দুর্ঘটনায় ইসরাইল জড়িত এবং এর প্রতিশোধ নেওয়া হবে। একদিন আগের এই ঘটনাকে ?'পারমাণবিক সন্ত্রাসবাদ' হিসেবে অভিহিত করেছে ইরানি কর্তৃপক্ষ। দেশটি জানায়, অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার তেহরানের রয়েছে। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, বিবিসি
রোববার ইরানের ইসফাহান প্রদেশের নাতাঞ্জ কাউন্টির ভূগর্ভস্থ এই পারমাণবিক কেন্দ্রে বৈদু্যতিক গোলযোগের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে দেশটির গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছিল। পরে জানানো হয়, কেন্দ্রটির একটি উৎপাদন কক্ষে বিদু্যৎ বিভ্রাটের জন্য দায়ী ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। এই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ২০১৫ সালে তেহরানের করা পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক উদ্যোগের মধ্যেই নাতাঞ্জের ঘটনাটি ঘটল। তিন বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তিটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। আর ইসরাইল সবসময়ই এই চুক্তির তীব্র বিরোধিতা করে এসেছে। চুক্তিটি থেকে সরে যাওয়ার পর তেহরানের বিরুদ্ধে আগের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের পাশাপাশি নতুন করে আরও কঠোর করে তা আরোপ করেছিলেন ট্রাম্প। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরানও চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের হার বাড়াতে শুরু করে।
সোমবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাভেদ জারিফ বলেন, 'নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পথে আমাদের অগ্রগতির কারণে ইহুদিবাদীরা প্রতিশোধ নিতে চায়...তারা প্রকাশ্যে বলেছে, আমাদের এটি করতে দেবে না। কিন্তু আমরা ইহুদিবাদীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেব।'
এদিকে ইসরাইলের বেশকিছু গণমাধ্যমে অজ্ঞাত গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা 'মোসাদ' একটি সফল নাশকতা অভিযান পরিচালনা করেছে। এর ফলে সেখানে পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণের কাজ কয়েক মাসের জন্য পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ওই গোয়েন্দাদের জাতীয়তা প্রকাশ করেনি তারা। আর দুর্ঘটনার দিন রোববার বিকালেই ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ইরানের বিরুদ্ধে বিস্তর লড়াই বাকি। কিন্তু আজ যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, কালও যে একই অবস্থা থাকবে এমনটি নয়।
তবে ইসরাইল নাতাঞ্জ নাশকতার বিষয়ে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনা নাতাঞ্জের অধিকাংশই ভূগর্ভে অবস্থিত। দেশটিতে যে কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনায় জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) নজরদারির অনুমতি রয়েছে, নাতাঞ্জ সেসবের একটি।