খাশোগির অন্তধার্ন :হুমকিতে সৌদি-তুরস্ক সম্পকর্

প্রকাশ | ০৯ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০ | আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৮, ১০:১১

যাযাদি ডেস্ক
সাংবাদিক জামাল খাশোগি

স্বেচ্ছা নিবাির্সত সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের (রাষ্ট্রদূত নেই এমন দূতাবাস) মধ্যে হত্যা করা হয়েছে বলে তুরস্কের সরকারি সূত্রের দাবি বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এখনো অবশ্য তুকির্ কতৃর্পক্ষ কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। তবে ইস্তাম্বুলে বিবিসির মাকর্ লোয়েন বলছেন, কোনো ভিত্তি ছাড়া এই ধরনের বোমা ফাটানোর অভিযোগ তুরস্ক করবে বলে বিশ্বাস করা কঠিন। সংবাদসূত্র : বিবিসি নিউজ আঙ্কারায় প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেছেন, তিনি নিজে এই ঘটনার তদন্তের ওপর নজর রাখছেন এবং ফলের অপেক্ষায় আছেন। এমনিতেই কাতার, মুসলিম ব্রাদারহুড, ইরান এবং ইয়েমেন প্রশ্নে মুসলমান বিশ্বের দুই বৃহৎ শক্তি সৌদি আরব এবং তুরস্কের সম্পকের্ টানাপড়েন চলছে। এখন যদি সত্যিই তুরস্ক প্রমাণ হাজির করতে পারে যে, জামাল খাশোগিকে ইস্তাম্বুলে কনস্যুলেটের মধ্যে হত্যা করা হয়েছে, তাহলে রিয়াদ-আঙ্কারা সম্পকের্র ওপর তার পরিণতি নিয়ে পযের্বক্ষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। বিবিসির মাকর্ লোয়েন বলছেন, হত্যাকাÐ প্রমাণিত হলে দুই দেশের ক‚টনৈতিক সম্পকর্ স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক খারাপের দিকে মোড় নেবে। কানাডার ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বেসমা মোমানি বাতার্ সংস্থা ‘এএফপি’কে বলেছেন, সৌদি-তুরস্ক সম্পকের্ মারাত্মক সংকট তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তুরস্ক বলবে, তাদের মাটিতে এ ধরনের হত্যাকাÐ তাদের সাবের্ভৗমত্বের প্রতি অসম্মান। পযের্বক্ষকরা বলছেন, তদন্তে তুরস্কের অভিযোগ প্রমাণিত হলে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষেও তাদের মিত্র সৌদি যুবরাজ মোহামেদ বিন সালমানের প্রতি প্রশ্নাতীত সমথর্ন অব্যাহত রাখা কঠিন হবে। বেসমা মোমানি বলেন, ওয়াশিংটনে অনেকের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে যে, পরিণতি চিন্তা না করেই মোহামেদ বিন সালমান অনেক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। কাতারের ওপর নিষেধাজ্ঞা, কানাডার সঙ্গে ঝগড়া, সাদ হারিরিকে (লেবাননের প্রধানমন্ত্রী) জোর করে আটকে রাখা। এসব ঘটনা নিয়েও অস্বস্তি রয়েছে। ইস্তাম্বুলের সাংবাদিক হত্যার ঘটনা প্রমাণিত হলে মোহামেদ বিন সালমান সম্পকের্ সেই ধারণা ওয়াশিংটনে আরও প্রতিষ্ঠিত হবে। সিঙ্গাপুরে আন্তজাির্তক সম্পকের্র গবেষক জেমস ডসির্ও বলেন, জামাল খাশোগির অন্তধার্ন সৌদি-তুরস্ক সম্পকের্ বড় ধরনের অবনতি হবে। ইরান, কাতার, মুসলিম ব্রাদারহুডÑ এমন অনেক ইস্যুতে তাদের মতভেদ রয়েছে। সেই মতভেদ আরও বাড়বে। তুরস্ক যদি প্রমাণ করতে পারে যে, খাশোগিকে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের মধ্যে হত্যা করা হয়েছে, তার পরিণতি হবে সুদূরপ্রসারী। তবে সৌদি আরব বলছে, সাংবাদিক খাশোগিকে তারা হত্যা করেনি। তবে ওয়াশিংটনে সৌদিপন্থি গবেষণা সংস্থা ‘অ্যারাবিয়া ফাউন্ডেশন’-এর পরিচালক আলি শিহাবি বলেন, আগে থেকেই কোনো উপসংহারে পেঁৗছানো ঠিক হবে না। বিশ্লেষকরা বলছেন, কেন একটি সরকার তাদের কোনো সমালোচককে তারই কনস্যুলেটের মধ্যে হত্যা করতে যাবে? তাছাড়া তুরস্ক কোনো নিরপেক্ষ পক্ষ নয়, পুরো গল্পের মধ্যে বিরাট ফঁাক রয়ে যাচ্ছে। জামাল খাশোগিকে আটকে রাখা হয়নি এটা প্রমাণ করতে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর বিভিন্ন জায়গায় ‘রয়টাসর্’ বাতার্ সংস্থার একজন সাংবাদিককে ঘুরিয়ে দেখানো হয়েছে। তবে যেদিন খাশোগি সেখানে ঢুকেছিলেন সেদিনের সিসিটিভির কোনো রেকডর্ নেই। যান্ত্রিক গোলযোগের যুক্তি দেখানো হয়েছে। তাই রহস্য ক্রমেই ঘনীভ‚ত হচ্ছে।