মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মেধাস্বত্ব প্রত্যাহার চান বাইডেন

ম বিরোধিতায় করোনার টিকা তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলো
যাযাদি ডেস্ক
  ০৭ মে ২০২১, ০০:০০
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন

বিশ্বজুড়ে করোনা সংকট আরও দ্রম্নত মোকাবিলা করতে এর টিকার মেধাস্বত্ব (পেটেন্ট) প্রত্যাহারের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে জো বাইডেন প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে বিরোধিতা করছে টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। সংবাদসূত্র : ডিডবিস্নউ নিউজ, রয়টার্স, এএফপি

গত বছর বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ার সময় একমাত্র টিকার মাধ্যমে এমন সংকট থেকে রেহাই পাওয়ার আশা প্রকাশ করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। এরপর অভূতপূর্ব গতিতে একের পর এক কোম্পানি করোনা প্রতিষেধক আবিষ্কার করে জনজীবন স্বাভাবিক করার পথ সুগম করে দেয়। অনুমোদন, উৎপাদন, রপ্তানি, স্বত্ব নিয়ে জটিলতার মতো বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কারণে এখন পর্যন্ত যথেষ্ট-সংখ্যক মানুষ করোনা টিকা পায়নি। মূলত ধনী দেশগুলোই দুর্লভ টিকার সিংহভাগ দখল করে বসে রয়েছে। অথচ মানবজাতি দ্রম্নত এই রক্ষাকবচ না পেলে ভাইরাস আরও রূপান্তর ঘটিয়ে প্রাথমিক সাফল্যকে ম্স্নান করে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এমনই প্রেক্ষাপটে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকাসহ শতাধিক দেশ করোনা টিকার মেধাস্বত্ব সাময়িক প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে। এমনটা সম্ভব হলে, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যেকোনো কোম্পনি বিনা জটিলতায় সেই টিকা উৎপাদন করতে পারবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও এবার এমন উদ্যোগের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। অথচ অতীতে প্রায় সব মার্কিন প্রশাসনই যেকোনো অবস্থায় মেধাস্বত্ব শিথিল করার তীব্র বিরোধিতা করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় (ডবিস্নউএইচও) বাইডেন প্রশাসনের শীর্ষ মধ্যস্থতাকারী ক্যাথরিন টাই এমন অবস্থানের ব্যাখ্যা করে বলেন, বিশ্বজুড়ে এমন স্বাস্থ্য সংকটের ফলে যে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, সেটা মোকাবিলা করতে অভূতপূর্ব পদক্ষেপ নিতে হবে। তার আশঙ্কা, ভারতে বর্তমানে বিশাল আকারে করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাবের ফলে মিউটেশনের (রূপান্তর) মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের এমন সংস্করণ সৃষ্টি হতে পারে, যেগুলো টিকা উপেক্ষা করে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

তবে টিকা প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো এমন উদ্যোগের বিরোধিতা করছে। তাদের যুক্তি, টিকা আবিষ্কার এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী টিকার ক্রমাগত নবায়নের জন্য গবেষণায় বিপুল অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করতে হয়। একমাত্র বাণিজ্যিক স্বার্থেই এমন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা সম্ভব। মেধাস্বত্বের ওপর কোম্পানির অধিকার প্রত্যাহার করলে বাজার থেকে সেই অর্থ সংগ্রহের উপায় থাকবে না। এ ছাড়া উন্নয়নশীল দেশগুলোতে টিকা উৎপাদনের লক্ষ্যে দুই শতাধিক চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। ফলে টিকা তৈরির কাঁচামালসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সমন্বয় নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে বলে ওষুধ কোম্পানিগুলো দাবি করছে।

উলেস্নখ্য, বাইডেন প্রশাসনের সমর্থনের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর পুঁজিবাজারে মডার্না ও নোভাভ্যাক্স কোম্পানির দরপতন ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানিগুলো সম্মিলিতভাবে এমন সিদ্ধান্ত প্রতিরোধ করবে বলে জানিয়েছে।

মার্কিন প্রশাসনের নীতিগত সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও এমন উদ্যোগ কার্যকর করতে অনেক মাস সময় লাগবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৬৪টি সদস্য দেশের মধ্যে ঐকমত্য গড়ে তোলাও সহজ কাজ নয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্য এখনো সমর্থনের সিদ্ধান্ত নেয়নি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে