সৌদি কনস্যুলেট থেকে নিখেঁাজ

সাংবাদিক খাশোগির বের হয়ে যাওয়ার প্রমাণ চায় তুরস্ক

ট্রাম্পও নিখেঁাজ সাংবাদিকের পরিণতি নিয়ে উদ্বিগ্ন একটি কালো ভ্যান খুঁজছে তুকির্ পুলিশ

প্রকাশ | ১০ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান
নিখেঁাজ সাংবাদিক জামাল খাশোগি ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে (রাষ্ট্রদূত নেই এমন দূতাবাস) প্রবেশের কিছু সময় পরই বেরিয়ে গিয়েছিলেন, সৌদি আরবকে এ দাবির পক্ষে প্রমাণ হাজির করতে বলেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। গত সপ্তাহে ইস্তাম্বুলের ওই কনস্যুলেট ভবনে প্রবেশের পর থেকেই সৌদি নাগরিক খাশোগির আর খেঁাজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তার হবু স্ত্রী। সোমবার মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও নিখেঁাজ এই সাংবাদিকের পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সংবাদসূত্র : বিবিসি, গাডির্য়ান তুরস্ক বলছে, খাশোগিকে সৌদি কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে হত্যা করার পর তার লাশ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে রিয়াদ এ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। সৌদি ওই কনস্যুলেট ভবনে তল্লাশি চালাতে চেয়ে আঙ্কারা অনুরোধ জানিয়েছে। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এরদোয়ান বলেন, ‘তিনি ভবনটি ছেড়ে বেরিয়ে গেছেন, এটুকু বলেই নিজেদের রক্ষা করতে পারবেন না কনস্যুলেট কমর্কতার্রা। তিনি যদি বেরিয়েই যান, ফুটেজসহ তার প্রমাণ দিতে হবে আপনাদের।’ এর আগের দিন তুরস্কের কমর্কতার্রা জানান, খাশোগিকে যে হত্যা করা হয়েছে, এ ব্যাপারে ‘সুনিদির্ষ্ট প্রমাণ’ পেয়েছেন তারা। গত সপ্তাহে তুরস্কে আসা সৌদি আরবের ১৫ সদস্যের একটি দল এ হত্যাকাÐটি সংঘটিত করেছে বলেও দাবি তাদের। তুরস্কের কমর্কতার্রাও অবশ্য এখন পযর্ন্ত তাদের দাবির সপক্ষে কোনো ধরনের প্রমাণ হাজির করেননি। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এর আগে বলেছিলেন, তুকির্ কমর্কতার্রা যদি কনস্যুলেটে তল্লাশি চালাতে চান, তাহলে তাদেরকে স্বাগত জানানো হবে। এ বিষয়ে ‘লুকানোর কিছু নেই’ বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। বছরখানেক ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বাস করা খাশোগি ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’র মতামত পাতায় লেখালেখি করতেন। কনস্যুলেটের ভেতর সাংবাদিক নিখেঁাজের ঘটনায় সৌদি আরবের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের জবাব চাওয়া উচিত বলে দাবি জানিয়েছে মাকির্ন এ গণমাধ্যমটি। পরে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনে ট্রাম্পও খাশোগির অন্তধাের্ন উদ্বেগ জানিয়েছেন। ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এতে উদ্বিগ্ন। এটি শুনতেও পছন্দ করছি না আমি। আশা করছি দ্রæতই এ রহস্য উদ্ঘাটিত হবে। এখন পযর্ন্ত কেউই এ সম্পকের্ কিছু জানে না।’ এর আগে মাকির্ন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স তার টুইটার পেজে লিখেছেন, আরবীয় সাংবাদিক জামাল খাশোগির ঘটনা শুনে তিনি খুবই বিব্রত হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, যদি ঘটনাটি সত্যি হয়, তাহলে এটা খুবই একটা ‘করুণ দিন’। সারা বিশ্বে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা হলো বাকস্বাধীনতা ও মানবাধিকারের জন্য হুমকি। মুক্ত বিশ্ব এর জবাব পাওয়ার অধিকার রাখে। সাংবাদিক নিখেঁাজের ঘটনাটির বিস্তৃত তদন্ত করতে সৌদি কতৃর্পক্ষের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন মাকির্ন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। তদন্তের ফল নিয়ে স্বচ্ছতাও চেয়েছেন তিনি। কালো ভ্যান খুঁজছে তুকির্ পুলিশ এদিকে সাংবাদিক জামাল খাশোগির নিখেঁাজ রহস্য উন্মোচনে একটি কালো ভ্যান খুঁজছে তুরস্কের পুলিশ। তাদের ধারণা, ওই কালো গাড়িতে করেই খাশোগির লাশ কনস্যুলেট ভবন থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এছাড়া তুকির্ পুলিশ রাস্তায় লাগানো ক্যামেরার রেকডর্ও খতিয়ে দেখছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ছয়টি গাড়ির বহরে একটি গাড়িতে সৌদি ‘হিট স্কোয়াড’ ছিল, এরাই সাংবাদিককে হত্যা করেছে। তুকির্ কমর্কতার্রা জানান, ইস্তম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে খাশোগি প্রবেশের দুই ঘণ্টা পর ছয়টি গাড়ির একটি বহর বের হয় ভবন থেকে। নিরাপত্তা ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, বহরের একটি কালো ভ্যানে বাক্স তোলা হচ্ছে। এই গাড়িটির ক‚টনৈতিক নম্বর প্লেট রয়েছে। কনস্যুলেট ভবন থেকে বের হয়ে বহরের তিনটি গাড়ি বামদিকে মোড় নেয় এবং তিনটি গাড়ি ডান দিকে চলতে থাকে। তদন্তকারীরা বলছেন, বহরের একটি গাড়ি, কালো কাচ লাগানো ভ্যান তাদের তদন্তের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। ভ্যানটিকে কাছের একটি সড়কে শনাক্ত করা হয়েছে।