সালমানের নিদেের্শ খাশোগি অভিযান!

ম আড়ি পেতে পরিকল্পনা জানতে পারে মাকির্ন গোয়েন্দারা ম ঘটনার ব্যাখ্যা দাবি ট্রাম্পের

প্রকাশ | ১২ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সাংবাদিক জামাল খাশোগি
তুরস্কে সৌদি আরবের ‘কনস্যুলেট’ (রাষ্ট্রদূত নেই এমন দূতাবাস) থেকে নিখেঁাজ হওয়া সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে ‘টাগের্ট’ করে অভিযান পরিচালনার নিদের্শ দিয়েছিলেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। খাশোগিকে আটক করার ব্যাপারে সৌদির এই পরিকল্পনা সম্পকের্ জানতেন মাকির্ন গোয়েন্দারা। প্রভাবশালী মাকির্ন পত্রিকা ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’র এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। এদিকে, মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিক জামাল খাশোগির নিখেঁাজ হওয়ার বিষয়ে সৌদি আরবের কাছে বুধবার ব্যাখ্যা দাবি করেছেন। সংবাদসূত্র : আল-জাজিরা, বিবিসি, রয়টাসর্, এএফপি অনলাইন ওয়াশিংটন পোস্ট এই ঘটনার সঙ্গে পরিচিত এক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, সৌদি কমর্কতাের্দর যোগাযোগে আড়ি পেতে খাশোগিকে আটকের পরিকল্পনা সম্পকের্ জানতে পারে মাকির্ন গোয়েন্দারা। খাশোগিকে যুক্তরাষ্ট্রের ভাজিির্নয়া অঙ্গরাজ্য থেকে প্রলোভন দেখিয়ে বের করে এনে আটক করার পরিকল্পনা করেছিল সৌদি কমর্কতার্রা। সূত্রের নাম প্রকাশ করেনি ওয়াশিংটন পোস্ট। তবে খাশোগিকে আটক করার ক্ষেত্রে তাকে আঘাত করার কোনো পরিকল্পনা সৌদির ছিল কি-না, সে বিষয়ে কিছু জানতে পারেনি মাকির্ন গোয়েন্দারা। খাশোগির বন্ধু খালেদ সাফুরি ওয়াশিংটন পোস্টকে জানান, যুবরাজ (ক্রাউন প্রিন্স) ঘনিষ্ঠ সৌদি কমর্কতার্রা বিগত চার মাসে খাশোগির কাছে সৌদি আরবের ফেরত যাওয়ার প্রস্তাব নিয়ে আসে। এমনকি তাকে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূণর্ পদে আসীন করার প্রতিশ্রæতিও দেয়া হয়। কিন্তু খাশোগি রাজি হননি। সাফুরি জানান, জবাবে খাশোগি বলেন, ‘মজা করছো? আমি তাদের এক বিন্দু পরিমাণ বিশ্বাস করি না।’ উল্লেখ্য, খাশোগি ওয়াশিংটন পোস্টে সৌদি সরকারের বতর্মান নীতিমালার সমালোচনা করে নিবন্ধ করে লেখা লিখতেন। সৌদি রোষানল থেকে বঁাচতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস শুরু করেন। গত ২ অক্টোবর তিনি নতুন করে বিয়ে করার জন্য আগের স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের বিষয়ে একটি নথিপত্র সত্যায়িত করার উদ্দেশে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করেছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে তাকে বের হতে দেখা যায়নি। তুকির্ সূত্র বলেছে, তাদের বিশ্বাস খাশোগিকে কনস্যুলেটের ভেতরে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু সৌদি আরব এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের দাবি, খাশোগি নিখেঁাজ হওয়ার আগে কনস্যুলেট ভবন থেকে বের হয়ে গেছেন। তবে সৌদি কতৃর্পক্ষ তাদের দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ সরবরাহ করতে পারেনি। ব্যাখ্যা দাবি করেছেন ট্রাম্প এদিকে মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তার দেশ তুরস্কের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ‘নিখোঁজ’ সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে ঘিরে চলা রহস্যের শেষ দেখতে চায়। কনসুলেটের ভেতর থেকে সাংবাদিক গায়েবকে ‘খুবই গুরুতর ঘটনা’ অ্যাখ্যা দিয়ে এ বিষয়ে রিয়াদের কাছে ‘ব্যাখ্যা চেয়েছেন’ বলেও জানিয়েছেন তিনি। খাশোগিকে ঘিরে সৌদি আরব ও তুরস্কের ক‚টনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যেই ওয়াশিংটন যে রিয়াদের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে, ট্রাম্পের বক্তব্যকে তার ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। সাংবাদিক নিখেঁাজের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র সৌদি রাজপরিবারকে দায়ী ভাবছে কিনা, বুধবার টেলিফোনে ‘ফক্স নিউজ চ্যানেল’র করা এমন প্রশ্নের জবাবে মাকির্ন প্রেসিডেন্টের কণ্ঠে ছিল উদ্বেগের সুর। ট্রাম্প বলেন, ‘তেমনটাই মনে হচ্ছে বলে আপনারা বলতে পারেন, আমরা এটি দেখছি।’ এর আগে ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনে রিপাবলিকান এ প্রেসিডেন্ট খাশোগির নিখেঁাজের বিষয়টি নিয়ে সৌদি নেতৃত্বের সঙ্গে বেশ কয়েকবার কথা হয়েছে বলে জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা সবকিছু জানতে চেয়েছি। কী ঘটছে, তা দেখতে চাই আমরা। যুক্তরাষ্ট্র ও হোয়াইট হাউসের জন্য এটা খুবই গুরুতর পরিস্থিতি, আমরা এর শেষ দেখতে চাই।’ ট্রাম্প বলেন, এ ব্যাপারে তিনি সৌদি আরবের ‘সবোর্চ্চ পযাের্য়’ একাধিকবার কথা বলেছেন। উল্লেখ্য, সৌদি আরব ওয়াশিংটনের ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশগুলোর অন্যতম এবং মাকির্ন অস্ত্রের একটি বড় বাজার। মাকির্ন প্রেসিডেন্ট বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, এ ব্যাপারে সৌদি অরবের কাছে ‘আমরা সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘শুধু সাংবাদিক কেন, কারো ক্ষেত্রেই আমরা এমন ঘটনা ঘটতে দিতে পারি না।’ ট্রাম্পের ভাষায়, ‘এটা নিয়ে যা চলছে, তাতে আমরা খুবই হতাশ। আমরা এমনটা পছন্দ করি না এবং এ ব্যাপারে আমরা সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা চাইছি।’ ট্রাম্পের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডাসর্ জানান, গত দুদিনেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহকারি ও তার জামাই জ্যারেড কুশনার যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন।