কোরীয় যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি শিগগিরই :মুন

‘উনকে পরমাণু অস্ত্র ছাড়তে ক‚টনৈতিক বাধা ও দাগ পার করতে হবে’

প্রকাশ | ১৩ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন
উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কোরীয় যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তির ঘোষণা শিগগিরই আসছে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন। তিনি জানিয়েছেন, আনুষ্ঠানিক শান্তিচুক্তি হতে কেবল সময়ের অপেক্ষা। সংবাদসূত্র : বিবিসি ১৯৫০-৫৩ সাল পযর্ন্ত চলা ওই লড়াই অস্ত্রবিরতির মাধ্যমে শেষ হলেও যুদ্ধ শেষের ঘোষণা দিয়ে এখন পযর্ন্ত কোনো চুক্তি হয়নি। চলতি বছরের ১২ জুন সিঙ্গাপুরে মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তরের শীষর্ নেতা কিম জং-উনের মধ্যে এক ঐতিহাসিক বৈঠকের পর শান্তিচুক্তির সম্ভাবনা বাড়ে। চলতি সপ্তাহে বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মুন ওয়াশিংটন ও পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে দ্রæত শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিলেন। দক্ষিণের এ প্রেসিডেন্টই গত কয়েক মাস ধরে ট্রাম্প ও কিমের মধ্যে মধ্যস্থতার ভ‚মিকা পালন করে আসছেন। উত্তর কোরিয়া থেকে দক্ষিণে শরণাথীর্ হয়ে আসা পরিবারের সন্তান মুন বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে কিমকে ‘অকপট’ হিসেবেও অভিহিত করেছেন। পিয়ংইয়ং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ক আলোচনায় স্থবিরতা দেখা দিলে ইউরোপীয় নেতারা এগিয়ে আসবেন বলেও মন্তব্য করেছেন তিরি। চলতি বছরেই তিনবার দেখা হওয়া কিম জং-উনকে পরমাণু অস্ত্র ছাড়তে ক‚টনৈতিক বাধা ও দাগ পার করতে হবে বলেও মত তার। কোরীয় যুদ্ধ শেষের ঘোষণা দিতে ট্রাম্প ও শীষর্ মাকির্ন কমর্কতাের্দর সঙ্গে দীঘর্ আলোচনা হয়েছে বলেও জানান দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট। মুন বলেন, ‘উত্তর কোরিয়া যদি সুনিদির্ষ্ট পদক্ষেপ নেয়, তাহলে যুদ্ধ শেষের ঘোষণাটি রাজনৈতিক বিবৃতিতে পরিণত হবে; যার মাধ্যমে ওয়াশিংটন ও পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে চলে আসা দীঘির্দনের শত্রæতার অবসান ঘটবে। তিনি জানান, ‘যত দ্রæত সম্ভব’ এই চুক্তি করার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে বোঝাপড়া আছে বলেও গত মাসে উত্তরের জনগণের সামনে প্রথম ভাষণ দেয়া দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছিলেন। পিয়ংইয়ংয়ের বৃহৎ ক্রীড়াশৈলী ‘আরিরাং গেমসে’ দেয়া ওই ভাষণের সময় উপস্থিত দেড় লাখ উত্তর কোরীয় দঁাড়িয়ে মুনকে অভিবাদন জানিয়েছিল। তিনি বলেন, ‘ভাষণ দেয়ার সময় আমি খানিকটা নাভার্স ছিলাম। আমাকে নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে বলতে হতো, উত্তর কোরিয়ার জনগণের কাছ থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেতে হতো। কোরীয় জনগণ ও বিশ্বের মানুষকেও সন্তুষ্ট করতে হতো। সে কারণেই কাজটি মোটেও সহজ ছিল না।’ ভাষণে উত্তরের শীষর্ নেতা কিম কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করেননি বলেও জানান দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট। তার মতে, ‘ভাষণের আগে তিনি (কিম) জানতেও চাননি আমি কী বলতে যাচ্ছি। আমার মনে হয়, উত্তর কোরিয়ায় যে পরিবতর্ন ঘটছে, এটা তারই প্রমাণ।’ যুদ্ধ ও পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার বেদনা ধরতে পারেন বলেই কোরীয় উপদ্বীপে যেন আর যুদ্ধ ফিরে না আসে, তার জন্য কাজ করে যেতেই দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন বলেও মন্তব্য মুনের। যুদ্ধের সময়ই ১৯৫৩ সালে তার বাবা-মা উত্তর কোরিয়া থেকে পালিয়ে দক্ষিণে চলে এসেছিলেন, এরপর আর কখনোই পরিবারের সঙ্গে দেখা হয়নি তাদের।