শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
মিয়ানমার

সু চির বিচার শুরু ৫ অভিযোগে

বিচার প্রক্রিয়াকে অগণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেছে জাতিসংঘ বিবৃতি প্রত্যাখ্যান জান্তার
যাযাদি ডেস্ক
  ১৫ জুন ২০২১, ০০:০০
এনএলডি নেত্রী অং সান সু চি -ফাইল ছবি

রাষ্ট্রের গোপন তথ্য পাচার, নিয়ম বহির্ভূতভাবে ওয়াকিটকি রাখা ও ব্যবহার, ক্ষমতায় থাকাকালে ঘুষ গ্রহণ, নিজের দাতব্য সংস্থার নামে অবৈধভাবে ভূমি অধিগ্রহণ ও করোনা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ায় গাফিলতি- এই পাঁচ অভিযোগে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির বিচার শুরু হয়েছে। সংবাদসূত্র : রয়টার্স

সোমবার মিয়ানমারের রাজধানী নেইপিডোর একটি আদালতে বিচার শুরু হয় সু চির, যিনি দেশটির ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের নির্দেশে গত চার মাস ধরে গৃহবন্দি অবস্থায় আছেন। সু চির বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন ও তার বিচার প্রক্রিয়াকে অগণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে জাতিসংঘ যে বিবৃতি দিয়েছে, পাল্টা এক বিবৃতিতে তা এরই মধ্যে বাতিল করে দিয়েছে ক্ষমতাসীন জান্তা।

মিয়ানমারের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) নেত্রীর আইনজীবী মিন মিন সোয়ে তার (সু চি) বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোকে 'হাস্যকর' বলে উলেস্নখ করেছেন। তবে দেশটির আইন ও বিচার বিভাগ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, জান্তার উত্থাপিত অভিযোগুলোর মধ্যে অন্তত দুটি বেশ স্পর্শকাতর। এগুলো সত্যি প্রমাণ হলে বাকি জীবন কারাগারেই কাটাতে হবে সু চিকে।

২০২০ সালের নভেম্বরে মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে চলতি বছর ১ ফেব্রম্নয়ারি অভু্যত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। মিয়ানমারের সেনা প্রধান মিন অং হ্লাইং এই অভু্যত্থানে নেতৃত্ব দেন। ক্ষমতা দখলের পরপরই গৃহবন্দি করা হয় সু চিকে। গ্রেপ্তার হন তার দল এনএলডির বিভিন্ন স্তরের হাজার হাজার নেতাকর্মী-সমর্থক।

তারপর থেকে গৃহবন্দি অবস্থায়ই আছেন তিনি। সশরীরে কারও সঙ্গে তার দেখা করার অনুমতি দেয়নি জান্তা। অনলাইনে ভিডিওর মাধ্যমে নিজের আইনজীবীর সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগ করতে পেরেছেন তিনি। সোমবার বিচার শুরুর দিন আদালতেও তাকে সশরীরে উপস্তিত করা হয়নি।

বিচার শুরু হওয়ার আগে গত শুক্রবার এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার হাইকমিশনার মিশেল বেশেলেট বলেছিলেন, এই বিচার প্রক্রিয়া মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ক্ষমতাকে স্থায়ী করার ষড়যন্ত্র। শত শত মানুষকে হত্যা করে এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে তারা।

বিবৃতিতে বেশেলেট অভিযোগ করেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর আঞ্চলিক সহযোগিতা জোট 'অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ-ইস্ট এশিয়ান নেশনস' (আসিয়ান) সম্মেলনে মিয়ানমারের জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিলেন, সরকার সু চিকে মুক্তি দেবে এবং দেশের অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতি সমাধানে বিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনা করবে। কিন্তু তিনি সেই প্রতিশ্রম্নতি রাখেননি।

মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের পররাষ্ট্র বিভাগ সোমবার পাল্টা এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ হাইকমিশনারের বিবৃতি বাতিল করে বলেছে, 'জাতিসংঘ একচোখাভাবে সবকিছু বিবেচনা করছে। তারা বেসামরিক লোকজনের মৃতু্য দেখছে। কিন্তু বিদ্রোহীদের হামলায় যেসব সেনা সদস্য মারা গেছে, তাদের কথা জাতিসংঘ ধর্তব্যে আনছে না।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে