শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
মুখোমুখি হচ্ছেন আজ

বাইডেন-পুতিন বৈঠক ঘিরে জল্পনা

ম বৈঠকটি নিয়ে প্রত্যাশা কম ম পুতিনকে 'লাল দাগ' টেনে দেবেন বাইডেন
যাযাদি ডেস্ক
  ১৬ জুন ২০২১, ০০:০০
জো বাইডেন ভস্নাদিমির পুতিন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিন সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় মুখোমুখি হচ্ছেন আজ (বুধবার)। বহুল প্রতীক্ষিত এই বৈঠকটি কেমন হবে, তা নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে চলছে চুলচেড়া বিশ্লেষণ। এ ছাড়া বিশ্ব কূটনীতিক মহলেও আগ্রহ আর জল্পনায় কমতি নেই। তবে উত্তেজনার পারদ চড়লেও বৈঠকটি নিয়ে প্রত্যাশা কম। রাশিয়া সম্প্রতি 'অবন্ধুসুলভ দেশের' তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের নাম যোগ করেছে। এ ছাড়া দুই দেশই বলছে, তাদের মধ্যকার সম্পর্ক এখন প্রায় তলানিতে নেমে এসেছে। সংবাদসূত্র : বিবিসি, সিএনএন

কোনো দেশেরই এখন অন্য দেশে রাষ্ট্রদূত নেই। ঊর্ধ্বতন রুশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে বিভিন্ন কারণে। রাশিয়া যেভাবে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চল 'দখল' করে তা নিজ দেশের অন্তর্ভুক্ত করেছে, সেটি যুক্তরাষ্ট্রকে ক্ষিপ্ত করেছে। এ ছাড়া অন্য দেশের নির্বাচনে রাশিয়ার নাক গলানো- এমন অভিযোগেও কিছু নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

দুই দেশের এই বৈরী সম্পর্কে আরও যুক্ত হয়েছে পুতিনকে নিয়ে বাইডেনের সাম্প্রতিক কিছু মন্তব্য। গত মার্চে এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন তার সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীর সঙ্গে একমত হন, পুতিন আসলেই একজন 'খুনি'। এতকিছুর পরও এই দুই দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথমবারের মতো মুখোমুখি বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন তারা।

এদিকে, রাশিয়ার কিছু মানুষ এটিকে বড় অর্জন বলে মনে করছেন। মস্কোর থিংক ট্যাংক রিয়াকের পরিচালক আন্দ্রে কুর্তানভ বলেন, 'প্রতীকী তাৎপর্যের কথা বিবেচনা করলে এই শীর্ষ বৈঠক বেশ গুরুত্বপূর্ণ, এটি রাশিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের পাশে এক কাতারে স্থান দিচ্ছে। পুতিনের কাছে এই প্রতীকী ব্যাপারটা কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।'

রাজনৈতিক বিশ্লেষক লিলিয়া শেভটসোভার মতে, 'পুতিন নিঃসন্দেহে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সমকক্ষ হতে চান। তিনি চান, তার মতো করে বিশ্বে যেন তাকে শ্রদ্ধা করা হয়। পুতিন তার পৌরুষদীপ্ত পেশী প্রদর্শন করতে চান। আবার একই সঙ্গে এই ক্লাবের সদস্যও হতে চান।'

পুতিন এবং বাইডেনের শীর্ষ বৈঠকটির জন্য জেনেভাকে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত স্নায়ুযুদ্ধের সময় ১৯৮৫ সালে আরেকটি শীর্ষ বৈঠকের কথা মনে করিয়ে দেয়। সেই বৈঠকে প্রথম মুখোমুখি হয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান এবং সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভ। কিন্তু এমন সম্ভাবনা খুবই কম যে, শীর্ষ বৈঠকটি সেই বৈঠকের মতোই কিছু হবে। রিগ্যান এবং গর্বাচেভ যেভাবে ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক স্থাপন এবং রাজনৈতিক বরফ গলাতে সক্ষম হয়েছিলেন, পুতিন-বাইডেন বৈঠক থেকে সে রকম কিছু আশা করা হচ্ছে না।

হোয়াইট হাউস বলছে, তারা রাশিয়ার সঙ্গে একটি স্থিতিশীল এবং অনুমানযোগ্য সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। কিন্তু পুতিনের কাজের ধারা একেবারেই ভিন্ন। তিনি ২০১৪ সালে যখন সেনা পাঠিয়ে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দখল করে নিয়ে এই অঞ্চলটিকে নিজ দেশের অন্তর্ভুক্ত করলেন, তখন থেকে তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে। তিনি এরপর কী করবেন, সেটা কেউ অনুমান করতে পারছেন না। রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতি শুরু হয় তখন থেকেই।

অন্যদিকে, পুতিন সম্প্রতি গণমাধ্যমে বলেছেন, 'কিছু বিষয় আছে, যেখানে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে পারি। এর মধ্যে আছে পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন করে আলোচনা, সিরিয়া এবং লিবিয়ার পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সংঘাত নিরসনে আলোচনা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়। যদি আমরা এসব বিষয়ে কাজ করার একটি কৌশল খুঁজে পাই, তাহলে বলতে পারব এই শীর্ষ বৈঠক ব্যর্থ হয়নি।'

পুতিনকে 'লাল দাগ' টেনে দেবেন বাইডেন

এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সোমবার বলেছেন, পুতিনের সঙ্গে আসন্ন বৈঠকে তিনি 'লাল দাগ' টেনে দেবেন। ন্যাটোর মিত্র দেশগুলোর প্রতি মস্কো ও বেইজিংয়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানোর পর এ কথা বলেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর ন্যাটো সম্মেলনে প্রথমবার অংশগ্রহণ করে বাইডেন বলেন, 'আমি রাশিয়ার সঙ্গে সংঘর্ষ চাই না, কিন্তু রাশিয়া যদি তাদের ক্ষতিকর কর্মকান্ড চালিয়ে যেতে থাকে, তাহলে আমরা এর জবাব দেবো।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে