শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
চীনবিরোধী ঢাক

ন্যাটোকে হুঁশিয়ারি বেইজিংয়ের

অহেতুক উত্তেজনা না বাড়াতে ন্যাটোর প্রতি আহ্বান
যাযাদি ডেস্ক
  ১৬ জুন ২০২১, ০০:০০

জি-৭ দেশগুলো চীনের প্রভাব ঠেকাতে একাট্টা হওয়ার পর বেইজিংয়ের উত্থান মোকাবিলার ডাক দিয়েছে সামরিক জোট ন্যাটোও। সোমবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে একদিনের ন্যাটো সম্মেলনে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে এ আহ্বান জানান ন্যাটোপ্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ। এদিকে, এ ঘটনায় ন্যাটোকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছে চীন। বেইজিংকে হুমকি দেওয়ার মাধ্যমে ফাঁকা মাঠে অহেতুক উত্তেজনা না বাড়াতে জোটটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চীন। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, আল-জাজিরা

ইউরোপীয় ইউনিয়নে পাঠানো এক বিবৃতিতে চীনা মিশন জানিয়েছে, বেইজিংয়ের প্রতিরক্ষা ও সামরিক আধুনিকায়নের বিষয়টি পুরোপুরি ন্যায় ও যুক্তিসঙ্গত। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, চীনের প্রতিরক্ষানীতি স্বচ্ছ ও উন্মুক্ত।

ন্যাটোকে বেইজিংয়ের বিষয়ে আলোচনা বাদ দিয়ে নিজেদের মধ্যে আরও কার্যকর আলাপ করার তাগিদ দিয়েছে চীন। এক বিবৃতিতে দেশটি জানিয়েছে, ন্যাটোর উচিত বেইজিংয়ের সার্বিক উন্নয়নকে যৌক্তিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা এবং ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা বন্ধ করা। একই সঙ্গে চীনের সার্বিক উন্নয়নে ন্যাটোকে ঈর্ষান্বিত না হওয়ারও আহ্বান জানানো হয়।

ব্রাসেলসে ন্যাটো সম্মেলনে শীর্ষ নেতারা চীনের সাম্প্রতিক সামরিক তৎপরতাকে সতর্ক করেছেন। নেতারা বলেন, চীন নিজেদের পারমাণবিক কর্মসূচি ক্রমবর্ধমান হারে বাড়াচ্ছে। একই সঙ্গে রাশিয়ার সঙ্গে দেশটির সামরিক ঘনিষ্ঠতা রয়েছে, যাকে সারাবিশ্বের জন্য হুমকি হিসেবে উলেস্নখ করেন তারা। সম্মেলনে ন্যাটো মহাসচিব বলেন, 'চীনের সঙ্গে কোনো ধরনের স্নায়ুযুদ্ধে যেতে চায় না ন্যাটো।'

সম্মেলন শুরুর আগে থেকেই চীনকে সতর্ক করে আসছে ন্যাটো। জোটটির প্রধান বলেন, বিশ্বে চীনের ক্রমবর্ধমান উত্থান ঠেকাতে সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে আরও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

কানাডার রাষ্টীয় গণমাধ্যম 'সিবিসি'কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেনস স্টলটেনবার্গ বলেন, 'চীনের সামরিক খাতের বাজেট বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। দেশটির নৌবাহিনী বিশ্বে সবচেয়ে শক্তিশালী। চীন ধীরে ধীরে সামরিক খাতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে, যা ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর নিরাপত্তার জন্য হুমকি।' আরও বলেন, চীন বিশ্বশান্তি রক্ষায় প্রতিশ্রম্নতিবদ্ধ নয়। হংকংয়ের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে হামলা চালিয়েছে চীন। আটক করা হয়েছে হংকংয়ের আন্দোলনকর্মীদের। অধিকার ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর, কাজাখ ও অন্য সংখ্যালঘুদের। বন্দিশিবিরে আটক রাখা হয়েছে সংখ্যালঘু মুসলিমদের। একই সঙ্গে চীন আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিজ দেশের নাগরিকদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। চীনের এমন আচরণকে মানবাধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন বলছেন তিনি।

এর আগে বিশ্বের শীর্ষ সাত ধনী দেশের জোট জি-৭ চীনের বাড়তে থাকা প্রভাব মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য অবকাঠামো সহায়তা পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। গত শনিবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের লক্ষ-কোটি ডলারের 'বেল্ট অ্যান্ড রোড' উদ্যোগের জবাবে এই বিশাল পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়।

যুক্তরাজ্যে কারবিস বের অবকাশযাপন কেন্দ্রে একত্রিত হয়ে বিশ্বের ধনী দেশগুলো, যেমন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি, ক্যানাডা ও জাপান বিশ্বকে এটাই দেখাতে চেয়েছে, চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের বিকল্প প্রস্তাব তারা দিতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে