সৌদি সাংবাদিক খাশোগি নিখেঁাজ

একজন হত্যাকারী সালমানের ঘনিষ্ঠ

কিছুই জানেন না যুবরাজ, তাই সৌদিকে ‘বেনিফিট অব ডাউট’ দিলেন ট্রাম্প

প্রকাশ | ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান
তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর সাংবাদিক জামাল খাশোগি নিখেঁাজের ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজনদের একজন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ঘনিষ্ঠ সহচর। মঙ্গলবার মাকির্ন সংবাদমাধ্যম ‘নিউইয়কর্ টাইমস’ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। অন্যদের মধ্যে তিনজন যুবরাজ মোহাম্মদের নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং পঞ্চমজন হচ্ছে উচ্চপযাের্য়র ফরেনসিক চিকিৎসক। তুরস্ক দাবি করে আসছে, সৌদি আরব থেকে পাঠানো ১৫ জনের একটি দল খাশোগি হত্যায় জড়িত। তাদের এ ব্যাপারে বিশেষ নিদের্শনা দিয়েই ইস্তাম্বুলে পাঠিয়েছিল রিয়াদ। এদিকে ট্রাম্প বলেছেন, খাশোগির ব্যাপারে জানার কথা অস্বীকার করেছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। সংবাদসূত্র : রয়টাসর্, বিবিসি, এএফপি নিউইয়কর্ টাইমস তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই ১৫ জনের মধ্যে অন্তত ৯ জন সৌদি নিরাপত্তা বাহিনী, সেনাবাহিনী অথবা সরকারের অন্যান্য মন্ত্রণালয়ে কমর্রত। চেহারা চিহ্নিতকরণ সফটওয়্যার, সৌদি মোবাইল ফোন নম্বর, ফঁাস হওয়া সৌদি সরকারের গোপন নথি, প্রত্যক্ষদশীর্ এবং গণমাধ্যমের সহযোগিতায় সন্দেহভাজনদের সম্পকের্ বিস্তারিত তথ্য জানা সম্ভব হয়েছে। সন্দেহভাজনদের একজনের নাম মাহের আবদুল আজিজ মাতরেব। তিনি ২০০৭ সালে লন্ডন দূতাবাসে নিয়োগ পেয়েছিলেন। তিনি সম্ভবত দেহরক্ষী ছিলেন। সম্প্রতি যুবরাজ সালমানের মাদ্রিদ ও প্যারিস সফরকালে বিমান থেকে নামার সময় মাতরেবকে তার সঙ্গে দেখা গেছে। এ ছাড়া সালমানের যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন, বোস্টন ও জাতিসংঘ সফরের সময়ও তার দেহরক্ষী হিসেবে তাকে দেখা গেছে। অপর তিন সন্দেহভাজনদের মধ্যে আবদুল আজিজ মোহাম্মদ আল-হাওসাউই যুবরাজের সফরসঙ্গী নিরাপত্তা টিমের সদস্য, থার ঘালিব আল-হারবি ও মোহাম্মদ সাদ আলজাহারআনি সৌদি রাজকীয় গাডর্ ইউনিটের সদস্য। পঞ্চম সন্দেহভাজন সালা আল-তুবাইজি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ। টুইটার থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, তিনি ‘সৌদি সায়েন্টিফিক কাউন্সিল অব ফরেনসিক’র প্রধান। তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সৌদির শীষর্ মেডিকেল কলেজের শীষর্ পদে রয়েছেন। গত ২ অক্টোবর খাশোগি তার তুকির্ বাগদত্তাকে বাইরে দঁাড় করিয়ে রেখে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করেন। সৌদি নাগরিক খাশোগি সেখানে তার প্রথম বিয়ের তালাকের কাগজপত্র সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন। ওইদিন বিকালে তার বাগদত্তা জানান, খাশোগি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর আর সেখান থেকে বের হননি। তুরস্কের দাবি, খাশোগিকে কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে হত্যার পর তার লাশ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে সৌদি আরব তুরস্কের দাবিকে ‘মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। অস্বীকার করেছেন সৌদি যুবরাজ : ট্রাম্প এদিকে, নিখেঁাজ সাংবাদিক জামাল খাশোগির সঙ্গে কী ঘটেছে, সেটা জানার কথা অস্বীকার করেছেন সৌদি যুবরাজ সালমান। তার ফোন পাওয়ার পর এক টুইটার বাতার্য় মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ কথা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে বাতার্ সংস্থা ‘এপি’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি সৌদি আরবকে দোষারোপ করারও সমালোচনা করেছেন। তার মতে, সৌদি আরবকে দোষারোপ করা অনেকটা ‘নিদোর্ষ প্রমাণিত না হওয়া পযর্ন্ত দোষী’ মতবাদের মতো। ফলে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগির নিখেঁাজের ঘটনায় সৌদি আরবের দায় প্রমাণিত না হওয়া পযর্ন্ত তাদের ‘বেনিফিট অব ডাউট’ (দ্বিধার সুবিধা) দেয়ার কথা বলেছেন মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সাংবাদিক নিখেঁাজের ঘটনায় সৌদি নেতৃত্বের দিকে আঙুল তুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের অনেক সদস্য। পশ্চিমা দেশগুলোও এ বিষয়ে জবাব চেয়ে রিয়াদের ওপর চাপ বৃদ্ধি করছে।