সাংবাদিক খাশোগি নিখেঁাজ

সৌদির সঙ্গ ছাড়তে চান না ট্রাম্প

তুরস্কের কাছে প্রমাণ চায় যুক্তরাষ্ট্র সৌদি কনস্যুলেটে আবারও তল্লাশি

প্রকাশ | ১৯ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্প
নিখেঁাজ সাংবাদিক জামাল খাশোগির ঘটনায় ঘনিষ্ঠ মিত্র সৌদি আরবের সঙ্গ ছাড়তে চান না মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার দেশটির সংবাদমাধ্যম ‘ফক্স নিউজ’কে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ ব্যাপারে নিজের অবস্থানের কথা সাফ জানিয়েছেন তিনি। সাক্ষাৎকারে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তিনি রিয়াদের সঙ্গ ছাড়তে চান কিনা। জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এটা করতে চাই না।’ এর পেছনে যুক্তি তুলে ধরে ট্রাম্প বলেন, তিনি আশা করছেন খাশোগির নিখেঁাজের পেছনে সৌদি নেতারা সংশ্লিষ্ট নন। খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে বলে তুরস্ক যে দাবি করেছে, তার প্রমাণও চেয়েছেন তিনি। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টাসর্ খাশোগি ইস্যুতে এরই মধ্যে সৌদি আরব ও তুরস্ক সফর করে এসেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। চলতি সপ্তাহে এ বিষয়ে তার কাছ থেকে একটি প্রতিবেদন প্রত্যাশা করছেন বলেও জানিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘আমি চাই কী ঘটেছিল সেটা খুঁজে বের করা হোক, ভুলটা কোথায় হয়েছিল এবং সম্ভবত আমরা এই সপ্তাহের শেষেই সেটা জানতে পারব।’ তিনি সৌদি আরবকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন কি-না, এমন প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, ‘না, মোটেই না, কী হচ্ছে আমি শুধু তাই বের করতে চাই।’ সাংবাদিক খাশোগির নিখেঁাজের পেছনে ‘দুবৃর্ত্ত ঘাতকরা’ জড়িত থাকতে পারে, গত কয়েকদিন ধরে ট্রাম্প এমন সম্ভাবনার কথাও বলে আসছেন। এ ঘটনায় আগেভাগেই সৌদি আরবকে দোষারোপ করতে নারাজ তিনি। বরং ‘দোষ প্রমাণ না হতেই’ সৌদি আরবকে দোষী ঠাওরানো হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। খাশোগি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কঠোর সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। গত ২ অক্টোবর জামাল খাশোগি তার তুকির্ বাগদত্তাকে বাইরে দঁাড় করিয়ে রেখে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করেন। সৌদি নাগরিক খাশোগি সেখানে তার প্রথম বিয়ের তালাকের কাগজপত্র সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন। ওই দিন বিকালে তার বাগদত্তা জানান, খাশোগি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর আর সেখান থেকে বের হননি। তুরস্কের দাবি, খাশোগিকে কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে হত্যার পর তার লাশ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে সৌদি আরব তুরস্কের দাবিকে ‘মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তুরস্কের কাছে প্রমাণ চায় যুক্তরাষ্ট্র ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে, এমন জোরালো প্রমাণ আছে বলে দাবি করা রেকডির্ং তুরস্কের কাছে চেয়েছেন ট্রাম্প। বুধবার হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেছেন ‘আমরা সেগুলো (রেকডির্ং) চেয়ে পাঠিয়েছি, যদি সেগুলো থেকে থাকে।’ যে টেপে খাশোগি হত্যার প্রমাণ আছে বলে বলা হচ্ছে, সেটি চেয়ে পাঠানোর কথা নিশ্চিত করে ট্রাম্প বলেছেন, ‘এটার অস্তিত্ব আছে কি-না আমি নিশ্চিত নই। সম্ভবত আছে, খুব সম্ভবত আছে।’ যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের অন্যতম সৌদি আরব। তাই খাশোগির বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তিতে আছে ট্রাম্প প্রশাসন। তুরস্ক দাবি করে আসছে, সৌদি আরব থেকে পাঠানো ১৫ জনের একটি টিম খাশোগি হত্যায় জড়িত। তাদের এ ব্যাপারে বিশেষ নিদের্শনা দিয়েই ইস্তাম্বুলে পাঠিয়েছিল রিয়াদ। ‘নিউইয়কর্ টাইমস’ তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই ১৫ জনের মধ্যে অন্তত ৯ জন সৌদি নিরাপত্তা বাহিনী, সেনাবাহিনী অথবা সরকারের অন্যান্য মন্ত্রণালয়ে কমর্রত। চেহারা চিহ্নিতকরণ সফটওয়্যার, সৌদি মোবাইল ফোন নম্বর, ফঁাস হওয়া সৌদি সরকারের গোপন নথি, প্রত্যক্ষদশীর্ ও গণমাধ্যমের সহযোগিতায় সন্দেহভাজনদের সম্পকের্ বিস্তারিত তথ্য জানা সম্ভব হয়েছে। সৌদি কনস্যুলেটে ফের তল্লাশি জামাল খাশোগির নিখেঁাজের ঘটনা তদন্তের অংশ হিসেবে তুরস্কের একটি তদন্ত দল দ্বিতীয়বারের মতো তল্লাশি চালিয়েছে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে। ইস্তাম্বুলের সৌদি কনসাল মোহাম্মদ আল-ওতাইবি রিয়াদের উদ্দেশে ইস্তাম্বুল ছাড়ার একদিন পর বুধবার রাতে তুরস্কের পুলিশ তার বাসভবনে তল্লাশি চালায়। তল্লাশি দলে পুলিশের সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ। তারা প্রায় নয় ঘণ্টা তল্লাশি চালান সেখানে। তুরস্কের সংবাদমাধ্যম বলছে, খাশোগিকে যখন হত্যা করা হয়, তখন ওতাইবি সেখানে ছিলেন। তদন্ত কমর্কতার্রা বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে ওতাইবির বাসভবন ত্যাগ করেন।