প্রত্যাশা ছিল, রাজধানী দিলিস্ন সফরে গিয়ে বিরোধী জোটের বিষয়টি অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে যাবেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তৃণমূল নেত্রীর সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সংবাদসূত্র : ডিডবিস্নউ নিউজ
গত ২১ জুলাই 'শহীদ দিবস'র ভাষণে কলকাতায় বসে মমতা জানিয়েছিলেন, দিলিস্ন গিয়ে তিনি শারদ পাওয়ারসহ অন্য নেতাদের সঙ্গে দেখা করবেন। তৃণমূলের সেদিনের অনুষ্ঠানে (ভার্চুয়াল) শারদ পাওয়ার, রামগোপাল যাদব, পি চিদম্বরমসহ অনেক নেতা এসেছিলেন। তারাও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। মমতা তাদের অনুরোধ করেছিলেন, তারা যেন দিলিস্নতে বিরোধী দলগুলোকে নিয়ে একটা বৈঠক ডাকেন। সেই বৈঠকে মমতাও থাকতে চেয়েছিলেন।
দিলিস্নতে তৃণমূলনেত্রী চার দিন থাকলেন। কিন্তু বিরোধী বৈঠক হয়নি। এমনকি শারদ পাওয়ারের সঙ্গেও তার কোনো বৈঠক হয়নি। মমতা যখন দিলিস্নতে, তখন শারদ পাওয়ারও দিলিস্নতে ছিলেন। কিন্তু দুই নেতার সাক্ষাৎ হয়নি। তার মেয়ে সুপ্রিয়া সুলেও দিলিস্নতে ছিলেন। ২১ জুলাইয়ের অনুষ্ঠানে সুপ্রিয়াকে সঙ্গে নিয়েই গিয়েছিলেন শারদ। মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে বলা হয়েছিল, সোনিয়া গান্ধী ও শারদ পাওয়ারের বাড়িতে তিনি নিজে যাবেন। বাকিদের সঙ্গে ভাতিজা অভিষেকের বাসভবনে বৈঠক হবে। দিলিস্ন গেলে সেখানেই ওঠেন মমতা। সোনিয়া গান্ধীর বাড়িতে মমতা গিয়েছিলেন। বৈঠকও হয়েছে। সোনিয়া সেখানে রাহুলকেও রেখেছিলেন।
দিলিস্নতে অভিষেকের বাসায় গিয়ে মমতার সঙ্গে দেখা করেছেন দিলিস্নর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, ডিএমকে নেত্রী কানিমোরি, তিন কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা, অভিষেক মনু সিংভি ও কমল নাথ। এছাড়া জাভেদ আখতার ও শাবানা আজমিও দেখা করেছেন।
আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণমন্ত্রী নীতিন গড়করি ও সোনিয়া গান্ধীর কাছে গিয়েছিলেন মমতা। কিন্তু শারদ পাওয়ার, শিবসেনা, সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি, টিআরএস, আরজেডি, ওয়াইএসআর কংগ্রেসের মতো আঞ্চলিক প্রভাবশালী দলগুলোর কোনো নেতাই মমতার সঙ্গে দেখা করেননি।
মমতা নিজে যাই বলুন না কেন, তৃণমূল সংসদীয় দলের বৈঠকের পর কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, দল তাকেই প্রধানমন্ত্রী দেখতে চায়। কারণ, তিনিই একমাত্র নরেন্দ্র মোদিকে হারাতে সক্ষম। দল চায়, তিনি বিরোধী জোটের নেতৃত্ব দিন।
সেই নিরিখে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এবারের সফর কি সফল হলো? বিশেষ করে আঞ্চলিক দলগুলোর মনোভাবের নিরিখে? প্রবীণ সাংবাদিক শুভাশিস মৈত্রের মতে, 'অন্য কেউ এখন বিরোধী ঐক্যের চেষ্টা করছেন না। সেখানে দাঁড়িয়ে মমতা একটা চেষ্টা করলেন। কিন্তু যে সাড়া তিনি দিলিস্নতে পেয়েছেন, তা একেবারেই যথেষ্ট নয়। দেখা গেল, বিরোধী দলের নেতারাই মমতার সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখলেন।'