ধনীরা সাধারণ মানুষের বিষয়ে খুব কমই আগ্রহ দেখায়!

প্রকাশ | ২১ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
আপনার সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটের মতো, আথর্-সামাজিক অবস্থানও ঠিক করে দেয় আপনি কীভাবে ভাববেন। কিংবা কোন্ বিষয়গুলোকে বা কাদের খেয়াল করবেন। সহজ করে বললে, আপনি ধনী নাকি গরিব, সেটাও প্রভাবিত করবে আপনার চিন্তাধারাকে। এমনটাই বেরিয়ে এসেছে নিউইয়কর্ ইউনিভাসিির্টর মনস্তাত্তি¡ক বিজ্ঞানের ওপর করা এক গবেষণা থেকে। এতে দেখা গেছে, শ্রমজীবী বা নিম্নবিত্ত মানুষদের তুলনায় ধনী বা উচ্চবিত্তের মানুষরা তাদের চারপাশের লোকজনের ব্যাপারে কম আগ্রহী হন। অন্যদিকে, নিম্নবিত্তরা তাদের চারপাশের মানুষদের গভীরভাবে পযের্বক্ষণ করে এবং তাদের আবেগ, কষ্ট ও ভোগান্তি গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারে। মাঠপযাের্য় গবেষণাগারসহ অনলাইন জরিপের মাধ্যমে এই গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে। গবেষণার প্রথম ধাপে গবেষকরা নিউইয়কর্ শহরের রাস্তাগুলোতে গিয়ে পযের্বক্ষণ শুরু করেন। এ সময় তারা গুগল গøাস পরে যান, যাতে করে সবকিছু রেকডর্ করা যায়। পযের্বক্ষণে দেখা যায়, নিম্নবিত্ত বা মধ্যবিত্তরা রাস্তায় কোনো ব্যক্তি বা কোনো কিছুকে খুব সূ²ভাবে খেয়াল করেন। এমনকি বার বার ফিরে তাকান। অন্যদিকে, উচ্চবিত্তরা কোনো কিছুতেই বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকেন না। কিংবা খুব কমই আগ্রহ দেখান। গবেষণার দ্বিতীয় ধাপে আরও সুনিদির্ষ্টভাবে জানতে স্মাটর্ গøাস ব্যবহার করা হয়। এই প্রযুক্তি মানুষের দৃষ্টির লক্ষ্য সুনিদির্ষ্টভাবে চিহ্নিত করতে পারে। এবার গবেষকরা দেখলেন, নিম্নবিত্তরা ছবির মানুষের দিকে তাকিয়ে বেশি সময় ব্যয় করে। অন্যদিকে, উচ্চবিত্তরা সাধারণ মানুষ নয়, বরং বস্তুর দিকেই বেশি মনোযোগী হয়ে থাকেন। এ পযাের্য় গবেষকরা পযের্বক্ষণের আলাদা এই প্রবণতার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে যান। তবুও তারা নিশ্চিত হতে চাইছিলেন, আচরণে এই পাথর্ক্য মানুষ সচেতনভাবেই করে থাকে কিনা। তারা বলেন, ‘এটা এমন হতে পারে, উচ্চবিত্তরা সচেতনভাবেই নিম্নবিত্তদের দিকে কম আগ্রহ দেখান। আবার সামাজিক শ্রেণির বিভিন্ন মানুষ সামাজিকতা রক্ষা করতে ইচ্ছাকৃতভাবে প্রাণবন্ত আগ্রহ দেখাতে পারেন।’ তৃতীয় ধাপে, অনলাইন জরিপের আশ্রয় নেন গবেষকরা। এই জরিপে অংশ নেন প্রায় ৪০০ জন। তাদের একজোড়া ছবি দেখতে দেয়া হয়। ছবিগুলো আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের নানা বিষয়েরই। যেমন, গাছপালা, পোশাক, একজোড়া মানুষের মুখ কিংবা অন্য কিছু। এরপরই ছবিগুলোর মধ্যে খুব সূ² পরিবতর্ন করে দেখতে দেয়া হয় এবং অংশগ্রহণকারীদের বলতে বলা হয়, আগের ছবিটির সঙ্গে এই ছবিটির পাথর্ক্য কী। এ সময় কোনো মানুষের মুখচ্ছবির ক্ষেত্রে দেখা যায়, উচ্চবিত্তরা কম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন। আর নিম্নবিত্তরা খুব দ্রæত সুনিদির্ষ্টভাবে পাথর্ক্যগুলো চিহ্নিত করতে পেরেছেন। মানুষের আথর্-সামাজিক অবস্থার সঙ্গে মনস্তাত্তি¡ক অবস্থার এই আন্তঃনিভর্রশীলতার বিষয়ে এর আগেও গবেষণা হয়েছিল। দেখা গিয়েছিল, দরিদ্র বা নিম্নবিত্তরা অন্য মানুষের আবেগকে সুনিদির্ষ্টভাবে বুঝতে পারে এবং অন্যের ভোগান্তি আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারে। এই গবেষণা আগের এই গবেষণাকে সত্য প্রমাণিত করে। গবেষক ডায়াচড বলেন, ‘মানুষের সামাজিক শ্রেণি তার মনস্তাত্তি¡ক প্রক্রিয়ায় কীভাবে প্রভাব ফেলে, সে ধরনের জ্ঞানে আমাদের এই গবেষণা অবদান রাখবে। সামাজিক এই শ্রেণিগুলোর মধ্যে পাথর্ক্যগুলো বিষয়ে আমরা যত বেশি জানবো, সামাজিক বিভিন্ন বিষয়ে আমরা ততোই বুঝতে পারব। এই গবেষণা এই ধঁাধারই একটা অংশ মাত্র।’ সংবাদসূত্র : সিএনবিসি