সিবিআই : বিক্ষোভে উত্তাল দিল্লি প্রতীকী গ্রেপ্তার বরণ রাহুলের

কংগ্রেসের পাশে বিভিন্ন দল ভারপ্রাপ্ত প্রধান নাগেশ্বর রাওয়ের ক্ষমতা খবর্ করেছে শীষর্ আদালত

প্রকাশ | ২৭ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ভারতের রাজনীতিতে টগবগ করে ফুটছে রাফায়েল যুদ্ধবিমান দুনীির্ত ইস্যু। রাফায়েল তদন্তে অগ্রগতির দিকে এগিয়েছিলেন বলেই সিবিআই প্রধান অলোক ভামাের্ক মোদি সরকার সরিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর। সিবিআই-প্রধানকে অবৈধ অপসারণের প্রতিবাদে শুক্রবার কংগ্রেসকমীর্রা দিল্লির সিবিআইয়ের প্রধান দপ্তরের সামনে রাহুলের নেতৃত্বে বিক্ষোভ করেন। এ সময় ওই যুদ্ধবিমানের পোস্টার নিয়ে সমাবেশের একেবারে সামনে ছিলেন কংগ্রেস সভাপতি Ñআউটলুক ইনডিয়া
ভারতের সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (সিবিআই) ‘গৃহযুদ্ধ’কে কাজে লাগিয়ে কেন্দ্রীয় মোদি সরকারকে চাপে ফেলতে মাঠে নেমে পড়েছে কংগ্রেস। তাদের পাশে দঁাড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসসহ বিভিন্ন দল। সিবিআই-প্রধান অলোক ভামাের্ক হঠাৎ ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে শুক্রবার ব্যাপক বিক্ষোভ হয় দিল্লিতে। কংগ্রেস সভাপতির নেতৃত্বে এদিন দিল্লিতে সিবিআই-এর প্রধান দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ করে কংগ্রেস। এক পযাের্য় প্রতীকী গ্রেপ্তারও বরণ করেন তিনি। একইভাবে প্রতীকী গ্রেপ্তার করা হয় অন্য কংগ্রেস নেতাদেরও। সংবাদসূত্র : পিটিআই, ইনডিয়ান এক্সপ্রেস, এবিপি নিউজ দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, কেবল দিল্লিতেই নয়, এদিন ভারতজুড়েই সিবিআইয়ের সব দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ করেছে কংগ্রেস। দলটির নেতাকমীর্রা বিক্ষোভ করেছেন চÐিগড়, লক্ষেèৗসহ উত্তরপ্রদেশের অন্যান্য শহরগুলোতেও। চÐিগড়ে মিছিলের জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। এদিকে, দিল্লির লোধি রোড থেকে সিবিআই দপ্তর পযর্ন্ত মিছিল করে যান কংগ্রেস নেতাকমীর্রা। এরপর সিবিআই দপ্তরের সামনে শুরু হয় বিক্ষোভ। এক সময় রাহুল গান্ধীকে দেখা যায় ব্যারিকেডের ওপর উঠে সমবেত কমির্-সমথর্কদের উৎসাহিত করতে। কমীর্রা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। যদিও পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এরপরই থানায় ঢুকে পড়েন রাহুল গান্ধী। থানায় ঢুকে এক ঘণ্টারও বেশি সময় কাটান তিনি। বাইরে তখন বিক্ষোভে উত্তাল ছিলেন কংগ্রেস সমথর্করা। তৃণমূল কংগ্রেস, আম আদমি পাটির্ (আপ), সিপিএম, সিপিআই ও লোকতান্ত্রিক জনতা দলের নেতাকমীর্রাও এই বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেন। রাফায়েল যুদ্ধবিমানের পোস্টার নিয়ে সমাবেশের একেবারে সামনেই ছিলেন রাহুল। রাহুলের সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেস নেতা অশোক গেহলট, সিপিআই-এর ডি রাজা, এলজেডি শারদ যাদব এবং তৃণমূল নেতা নাদিমুল হক। উল্লেখ্য, শুক্রবার সকালেই টুইট বাতার্য় অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে এই বিক্ষোভে যোগ দেয়ার আহŸান জানান কংগ্রেস সভাপতি। এরপরই বিক্ষোভে যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেসসহ অন্য দলের নেতারা। বিক্ষোভ চলার সময় রাহুল গান্ধী বলেন, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কাজকমর্ পছন্দ না হওয়ায় তাতে হস্তক্ষেপ করছে কেন্দ্র। কংগ্রেস সভাপতি বলেন, সরকার স্বাধীনভাবে কাজ করতেই দিচ্ছে না সংস্থাটিকে। অলোক ভামার্র অপসারণকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন রাহুল। অবিলম্বে ‘নিবাির্সত’ সিবিআই প্রধান ভামাের্ক তার পদে ফিরিয়ে দেয়ারও দাবি জানানো হয়। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেন, রাফায়েল দুনীির্তর তদন্ত বন্ধ করতেই সিবিআই প্রধানকে ছুটিতে পাঠিয়েছে কেন্দ্রের মোদি সরকার এবং একটা দুনীির্ত ঢাকতে আরও একটা দুনীির্তর আশ্রয় নিয়েছে সরকার। আগেরদিন এক সংবাদ সম্মেলনে রাহুল বলেন, ‘রাফায়েল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি দুনীির্তর তদন্ত শুরু হচ্ছিল বলেই রাত ২টায় সিবিআই প্রধানকে সরিয়ে দিলেন তিনি। কারণ প্রধানমন্ত্রী জানেন, তদন্ত শুরু হলেই তিনি শেষ।’ এরআগে, কংগ্রেসের এই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় পুরো সিবিআই দপ্তর ও সামনের রাস্তা। মোতায়েন করা হয় আধা সামরিক বাহিনী ও প্রচুর পুলিশ। যাতে কোনোভাবেই অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সেদিকেও নজর রাখে প্রশাসন। এদিকে, শুক্রবারই ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের এজলাসে ওঠে অলোক ভামার্র দায়ের করা মামলা। রায়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান নাগেশ্বর রাওয়ের ক্ষমতা খবর্ করেছে শীষর্ আদালত। বলা হয়েছে, রুটিন কাজ করলেও কোনো গুরুত্বপূণর্ সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না নাগেশ্বর। পাশাপাশি, ‘সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশন’কে সম্পূণর্ ঘটনার তদন্ত করে ২০ দিনের মধ্যে রিপোটর্ জমা দিতেও বলা হয়েছে সুপ্রিম কোটের্র রায়ে।