জানতে চান এরদোয়ান

সাংবাদিক খাশোগি হত্যা কার নিদেের্শ

এখন পযর্ন্ত প্রকাশিত তথ্যের চেয়েও আমাদের কাছে বেশি আছে : তুকির্ প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্রে পেঁৗছেছেন খাশোগির ছেলে সালাহ

প্রকাশ | ২৭ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান
সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার নিদের্শ কে দিয়েছে, তা সৌদি আরবের কাছে জানতে চেয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। শুক্রবার আঙ্কারায় ক্ষমতাসীন একে পাটির্র সদস্যের উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে তিনি এই আহŸান জানান। একই সঙ্গে তিনি খাশোগির লাশের সন্ধানও দাবি করেছেন। ভাষণে এরদোয়ান জানান, ‘তুকির্ তদন্তকারীদের কাছে খাশোগি হত্যাকাÐের অনেক প্রমাণ রয়েছে। যেগুলো এখন পযর্ন্ত প্রকাশ করা হয়েছে, তারচেয়েও বেশি তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। সময় হলে সেগুলো প্রকাশ করা হবে।’ সংবাদসূত্র : রয়টাসর্, বিবিসি, ট্রিবিউন, বিবিসি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান তার ভাষণে বলেন, খাশোগি হত্যার স্থানীয় সহযোগিতাকারীদের পরিচয় প্রকাশ করতে হবে সৌদি আরবকে। তিনি বলেন, ‘কে নিদের্শ দিয়েছে? কে ১৫ জনকে তুরস্কে আসার নিদের্শ দিয়েছে?’ তিনি জানান, সৌদি আরবের পাবলিক প্রসিকিউটর (সরকারি কেঁৗসুলি) তুরস্কের পাবলিক প্রসিকিউটরের সঙ্গে ইস্তাম্বুলে রোববার বৈঠক করবেন। খাশোগি হত্যাকাÐ নিয়ে একাধিকবার নিজেদের অবস্থান পরিবতর্ন করার পর বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো সৌদি আরব স্বীকার করে এই হত্যাকাÐ ছিল পূবর্পরিকল্পিত। তুকির্ বাগদত্তার সঙ্গে বিয়ের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আনতে গত ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করার পর ‘নাই’ হয়ে যান ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার কলাম লেখক ও স্বেচ্ছানিবাির্সত সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি। শুরুতে অস্বীকার করলেও ১৯ অক্টোবর সৌদি জানায়, কনস্যুলেটে গোয়েন্দা কমর্কতাের্দর সঙ্গে ধস্তাধস্তির একপযাের্য় খাশোগির মৃত্যু হয়। এর দুদিন পরই খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে বলেও স্বীকার করেন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে তাদের দাবি ছিল, জিজ্ঞাসাবাদের সময় ভুলবশত তার মৃত্যু হয়েছে। তুরস্কের কমর্কতার্রা নাম প্রকাশ না করার শতের্ শুরু থেকেই সে দেশের সংবাদমাধ্যমকে বলে আসছিলেন, খাশোগিকে হত্যা করার পর তার দেহ সরিয়ে দেয়ার জন্য টুকরা টুকরা করা হয়েছে। তাদের কথার প্রমাণ হিসাবে তুকির্ সংবাদমাধ্যমগুলোতে সৌদি টিমের সদস্যদের নাম, ছবি দেয়াসহ বিমানবন্দরে তাদের উপস্থিতি এবং ইস্তাম্বুলে তাদের পদচারণারও তথ্য দিয়েছে। খাশোগির রূপ ধারণ করা আরেকজনের সিসি ক্যামেরার ছবিও তারা চলতি সপ্তাহে প্রকাশ করে। এরপরই এরদোয়ানও দাবি করেছিলেন, এই সাংবাদিককে হত্যা পূবর্পরিকল্পিত এবং এটি যে রাজনৈতিক অপরাধ, তার স্পষ্ট প্রমাণ তুকির্ গোয়েন্দারা পেয়েছেন। উল্লেখ্য, এই হত্যাকাÐে জড়িত থাকার অভিযোগে রিয়াদ ১৮ জনকে গ্রেপ্তার ও পঁাচ উধ্বর্তন কমর্কতাের্ক বরখাস্ত করেছে বলে জানিয়েছে সৌদি গণমাধ্যম। বরখাস্তদের মধ্যে রাজপরিবারের উপদেষ্টা সৌদ আল-কাহতানিও আছেন। স্কাইপিতে তিনিই খাশোগিকে হত্যায় সৌদি গুপ্তচরদের নিদের্শ দিয়েছিলেন বলে বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে দাবি করছে আন্তজাির্তক গণমাধ্যমগুলো। পযের্বক্ষকরা অবশ্য বলছেন, কাহতানির ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা হলেও, ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস) অনুমতি ছাড়া এই উপদেষ্টার পক্ষে এমন ধরনের ঘটনা ঘটানো সম্ভব হতো না। যুক্তরাষ্ট্রে পেঁৗছেছেন খাশোগির ছেলে এদিকে সাংবাদিক খাশোগির বড় ছেলে সালাহ দেশ ছেড়ে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রে পেঁৗছেছেন। সৌদি-মাকির্ন দ্বৈত নাগরিক সালাহর ওপর রিয়াদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু মাকির্ন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করার পর বুধবার তাকে স্বপরিবারে দেশ ছাড়ার সুযোগ দেয় সৌদি। বৃহস্পতিবার সালাহ ওয়াশিংটনে পেঁৗছেছেন বলে তার পরিবার-সংশ্লিষ্ট দুটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। তার মা ও তিন ভাইবোন আগেই সেখানে অবস্থান করছিলেন। সালাহ যুক্তরাষ্ট্রে পেঁৗছানোর কয়েক ঘণ্টা পর মাকির্ন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী মুখপাত্র রবাটর্ পালাদিনো জানান, সালাহর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে মাইক পম্পেও রিয়াদকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। পম্পেও সৌদি নেতাদের বলেছিলেন, ‘তিনি চান সালাহ খাশোগি যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসুক। আমরা এ ব্যাপারটিতে সন্তুষ্ট।’ মুখপাত্র পালাদিনো জানান, ‘২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলের কনস্যুলেটের ভেতর কী ঘটেছিল, তা জানতে সৌদি আরবের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। খাশোগি হত্যাকাÐে দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে অন্যান্য দেশের সঙ্গে কাজ ও মাকির্ন কংগ্রেসের সঙ্গে পরামশর্ করতে ইচ্ছুক আমরা।’