'অকাস' থেকে বাদ ফ্রান্স-ভারত

চীনের উত্থান ঠেকাতে ত্রিদেশীয় জোট

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া প্রযুক্তি ভাগাভাগি করবে জোট গঠনের নিন্দায় চীন

প্রকাশ | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
চীনের উত্থান মোকাবিলায় ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিজেদের নিরাপত্তা জোরদারে নতুন একটি ত্রিদেশীয় জোট গড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত প্রযুক্তি ভাগাভাগি করে নিতে বিশেষ এই নিরাপত্তা জোটে অন্য দুটি দেশ হলো যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া। এর ফলে দেশ তিনটি নিজেদের উন্নত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি পরস্পরের সঙ্গে বিনিময় করতে পারবে। এ ছাড়া নতুন এই অংশীদারিত্বমূলক নিরাপত্তা চুক্তির কারণে প্রথমবারের মতো পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন (ডুবোজাহাজ) নির্মাণ করতে পারবে অস্ট্রেলিয়া। তবে জোটে ফ্রান্স ও ভারতকে রাখা হয়নি। সংবাদসূত্র : বিবিসি, আল-জাজিরা ত্রিদেশীয় এই চুক্তির নাম দেওয়া হয়েছে- এইউকেইউএস বা 'অকাস'। তারা নিজেদের মধ্যে যেসব প্রযুক্তি ভাগাভাগি করে নেওয়ার কথা বলছে, তার মধ্যে রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টাম ও সাইবার প্রযুক্তি। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক উপস্থিতি ও শক্তি বৃদ্ধির বিষয়ে এই তিনটি দেশই খুব উদ্বিগ্ন। নতুন নিরাপত্তা চুক্তির ঘোষণা উপলক্ষে বুধবার ভার্চুয়াল এক যৌথ বিবৃতি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। বিবৃতিতে বলা হয়, 'অকাস চুক্তির অধীনে প্রথম উদ্যোগ হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার রাজকীয় নৌবাহিনীর পারমাণবিক সাবমেরিন সক্ষমতা অর্জনে দেশটিকে সহায়তা দিতে আমরা কাজ করব।' বলা হয়, 'অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনীতে পারমাণবিক সাবমেরিন যুক্ত হলে সেটি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বাড়াবে এবং আমাদের তিন দেশের যৌথ মূল্যবোধ ও স্বার্থরক্ষায় সেটি ব্যবহার করা হবে।' নতুন এ প্রতিরক্ষা জোট সাইবার সক্ষমতা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং 'সমুদ্রের তলদেশে অতিরিক্ত সক্ষমতার' ওপরও নজর দেবে বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বরিস জনসন এবং স্কট মরিসনও। অবশ্য তিন নেতার কেউই সরাসরি চীনের নাম উলেস্নখ করেননি। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, আগামী দেড় বছরের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় পরমাণু শক্তিচালিত সাবমেরিন তৈরি করার একটি যৌথ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে অকাস। এটি বাস্তবায়ন করা হলে বিশ্বের পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন থাকা সপ্তম দেশে পরিণত হবে অস্ট্রেলিয়া। এদিকে, নতুন বিশেষ নিরাপত্তা চুক্তিকে খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা সমঝোতা হিসেবে উলেস্নখ করেছে ব্রিটিশ সরকার। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, 'যে তিন দেশ মিলে অকাস করেছে, তারা একে অপরের স্বাভাবিক মিত্র এবং নতুন এ জোট তাদের আরও কাছাকাছি নিয়ে আসবে। এই অংশীদারিত্ব আমাদের নিজেদের স্বার্থ ও দেশে আমাদের জনগণের সুরক্ষায় ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।' বিগত কয়েক বছর ধরে দক্ষিণ চীন সাগরে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরির মাধ্যমে ওই অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়ে চলেছে বেইজিং। ঐতিহাসিকভাবে সাগরটির বেশির ভাগ অংশ নিজেদের বলে দাবি করে তারা। এ জন্য সেখানে কোস্টগার্ড ও নৌসেনাও মোতায়েন করেছে চীন। উত্তেজনা রয়েছে তাইওয়ান প্রণালিতেও। দুই কোরিয়ার মধ্যে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র তৈরির প্রতিযোগিতাও দুশ্চিন্তার অন্যতম কারণ। এর আগে এই অঞ্চলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদারে ভারত ও জাপানকে সঙ্গে নিয়ে 'কোয়াড' জোট গঠন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া। আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটনে তাদের পরবর্তী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এতে অংশ নেবেন কোয়াডভুক্ত দেশগুলোর সরকারপ্রধানরা। তার আগেই নতুন জোটের ঘোষণা সামনে এলো।