জাভা সাগরে ইন্দোনেশিয়ার বিমান বিধ্ব¯

Í উড্ডয়নের আগেই সমস্যা ছিল

বø্যাকবক্স রেকডার্র এবং যাত্রীদের খেঁাজে সাগরের নিচে বøুটুথ রেডিও ট্রান্সমিটার ও ড্রোন মোতায়েন

প্রকাশ | ৩১ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ইন্দোনেশিয়ার জাকাতার্ থেকে সুমাত্রা দ্বীপে যাওয়ার পথে সোমবার জাভা সাগরে বিধ্বস্ত বিমানের কয়েকজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া, শিশুর জুতাসহ বেশ কিছু জিনিসও উদ্ধার হয়েছে। তল্লাশির সময় মঙ্গলবার এভাবে সাগরে একটি ‘পাসর্’ ভাসতে দেখা যায় Ñসিনহুয়া
ইন্দোনেশিয়ার জাকাতার্ থেকে সুমাত্রা দ্বীপে যাওয়ার পথে সোমবার সাগরে বিধ্বস্ত হওয়া যাত্রীবাহী বিমানে উড্ডয়নের আগে থেকেই যান্ত্রিক সমস্যা ছিল। বিমানটির দৈনন্দিন কাজের বিবরণ রাখার রেকডর্ বই থেকে জানা গেছে, বিধ্বস্ত হওয়ার একদিন আগে এতে যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দিয়েছিল। এদিকে, বিধ্বস্ত ‘লায়ন এয়ার’ বিমানের বø্যাকবক্স রেকডার্র ও যাত্রীদের খেঁাজে সাগরের নিচে অনুসন্ধানকারী বøুটুথ রেডিও ট্রান্সমিটার (বিকন) ও ড্রোন মোতায়েন করেছে ইন্দোনেশিয়া। কী কারণে প্রায় নতুন এই বিমানটি বিধ্বস্ত হলো, বø্যাকবক্স পেলে সে সম্পকের্ ধারণা করা যাবে বলে জানিয়েছেন কমর্কতার্রা। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টাসর্ বিধ্বস্তের আগের দিন গত রোববারও ইন্দোনেশিয়ার বালি থেকে জাকাতার্ যায় বিমানটি। সেই ফ্লাইটের বিবরণী থেকে জানা যায়, বিমানটির একটি যন্ত্র ‘অনিভর্রযোগ্য’ ছিল এবং পাইলট বিমানটিকে প্রথম কমর্কতার্র কাছে হস্তান্তর করতে বাধ্য হয়েছিলেন। বিমানটির রেকডর্ বই থেকে দেখা যায়, রোববার বিমানটি বালি থেকে জাকাতার্ যাওয়ার সময় পাইলটের যন্ত্রে গতিসীমা পঠন ছিল ‘অনিভর্রযোগ্য’। এমনকি উচ্চতা পঠনেও পাইলটের যন্ত্র আর প্রথম কমর্কতার্র যন্ত্রে তারতম্য দেখা যায়। তা সত্তে¡ও ওই বিমানের নাবিকরা বালি থেকে জাকাতার্ সফর অব্যাহত রাখেন এবং বিমানটি জাকাতার্য় নিরাপদে অবতরণ করে। এর আগে লায়ন এয়ারের প্রধান নিবার্হী এডওয়াডর্ সিরেইট জানান, বালির দেনপাসার থেকে জাকাতার্ সফরের সময় বিমানের একটি অনিদির্ষ্ট যান্ত্রিক সমস্যা ছিল, যেটা পরে ‘সমাধান করা হয়’। তিনি বলেন, ‘বিমানটি যদি ভাঙা হতো, তাহলে দেনপাসার থেকে জাকাতার্ আসা কখনোই সম্ভব হতো না। আমরা যখন বিমানের নাবিকদের (ক্রু) প্রতিবেদন হাতে পাই, সঙ্গে সঙ্গে সমস্যার সমাধান করি।’ বিধ্বস্ত বিমানটি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স-এর, যেটা বোয়িং ৭৩৭-এর সবের্শষ ভাসর্ন (সংস্ক্ররণ)। এই ভাসর্নটি ২০১৬ সালে প্রথম বাজারে আসে। সোমবার সকালে ১৮৯ আরোহী নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকাতার্ থেকে উড্ডয়নের একটু পর বিমানটি সাগরে বিধ্বস্ত হয়। লায়ন এয়ারের বোয়িং ৭৩৭ বিমানটির জেটি-৬১০ ফ্লাইট জাকাতার্ থেকে সুমাত্রার পাংকাল পিনাং যাচ্ছিল। এই দুঘর্টনায় কারো বেঁচে থাকার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন দেশটির কমর্কতার্রা। এরই মধ্যে কয়েকজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া, শিশুর জুতাসহ বেশ কিছু জিনিসও উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ শনাক্তের জন্য বিমান যাত্রীদের স্বজনকে হাসপাতালে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। যাত্রীদের খেঁাজে সাগরে তল্লাশি এদিকে, নিখেঁাজ যাত্রীদের খেঁাজে মঙ্গলবার থেকে জাভা সাগরে জোর তল্লাশি ও উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়েছে। সাগরের যে এলাকায় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে পানির নিচে ৩০-৩৫ মিটার গভীরে অনুসন্ধান চালাচ্ছেন ডুবুরিরা। ১৮৯ জন আরোহী নিয়ে বিমানটি জাভা সাগরে বিধ্বস্ত হয় বলে পরে নিশ্চিত হয় কতৃর্পক্ষ। ইন্দোনেশিয়ার যোগাযোগ নিরাপত্তা-বিষয়ক প্যানেলের প্রধান সোয়েরজানতো তিজাহজোনো বলেন, ‘আশা করছি শিগগিরই আমরা ধ্বংসাবশেষ কিংবা বিমানটির কাঠামো খুঁজে পাবো।’ বিমানের মূল কাঠামোর খেঁাজ পেতে পানির নিচে কাজ করতে সক্ষম একটি বিকন মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। সোমবার পশ্চিম জাভার কারাওয়াং উপক‚লের কাছে যেখানে বিমানটির কিছু ধ্বংসাবশেষ মিলেছিল, সেখানকার পানির নিচেও চারটি অনুসন্ধানকারী যন্ত্র মোতায়েন করা হয়েছে বলে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী সংস্থাগুলো জানিয়েছে। ধ্বংসাবশেষ ও নিখেঁাজদের সন্ধানে ১৫টি নৌযানও অভিযান চালাচ্ছে। রাতে উদ্ধার অভিযান বন্ধ থাকলেও অনুসন্ধানকারী যন্ত্রগুলো ও আন্ডারওয়াটার বিকনটি অনুসন্ধান অব্যাহত রেখেছিল। সাগরে বিধ্বস্ত বিমানটির কেউই বেঁচে নেই বলে এর আগে আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী সংস্থার মুখপাত্র ইউসুফ লতিফ। সন্ধান পাওয়া সামান্য ধ্বংসাবশেষ ও মৃতদেহের অংশ দেখে ‘জীবিত কারও খেঁাজ পাওয়া অলৌকিক’ হবে বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। বিমানটি যে সময় বিধ্বস্ত হয়েছিল, সে সময় সমুদ্রসৈকত থেকে একটি বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়ার কথা জানান স্থানীয় কারাওয়াং জেলার এক প্রত্যক্ষদশীর্ দাদাং হামবালি। এটিকে বিদ্যুৎচমক মনে করেছিলাম, যদিও সেটা ছিল বিদ্যুৎচমকের চেয়ে আলাদা। ‘বুম’ শব্দটি বেশ জোরালো ছিল বলে জানান তিনি।