আজকের যায়যায়দিন

যুক্তরাষ্ট্রসহ ১০ দেশের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করেছে তুরস্ক। তাদের 'অপরাধ' সরকারবিরোধী বিক্ষোভে যুক্ত সে দেশের এক মানবতাবাদী কর্মীর মুক্তির দাবিতে বিবৃতি দেওয়া। শনিবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়ে্যপ এরদোয়ান বহিষ্কারের এই নির্দেশ দিয়েছেন। এই দেশগুলোর অন্যতম যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া আরও ৯টি পশ্চিমা দেশের রাষ্ট্রদূতকে দেশ থেকে বহিষ্কার করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন এরদোয়ান। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স

বিচারাধীন ব্যবসায়ী ৬৪ বছরের ওসমান কাভালার মুক্তি দাবি করায় শনিবার তিনি নিজেই এ নির্দেশ দিয়েছেন বলে এরদোয়ান জানিয়েছেন। এরদোয়ান যে ১০ দেশের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করতে বলেছেন, তার সাতটিই তুরস্কের ন্যাটো জোটের মিত্র।

এরদোয়ান জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও যে দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সে দেশগুলো হলো- কানাডা, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে ও সুইডেন। শনিবার এই ১০ দেশের রাষ্ট্রদূতকে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ডেকে পাঠায়। পরে তাদের বহিষ্কার করার বিষয়ে ঘোষণা দেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।

২০১৭ সাল থেকে সে দেশের জেলে বন্দি ওসমান কাভালা নামের ওই ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ২০১৩ সালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পরে ২০১৬ সালে এক ব্যর্থ সামরিক অভু্যত্থানে আর্থিক মদদও দিয়েছিলেন তিনি। ৬৪ বছর বয়সি ওসমান কাভালা অবশ্য তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

ইসরাইলের হামলা / এখনই প্রতিশোধে যাচ্ছে না ইরান

গত ১৮ অক্টোবর কাভালার মুক্তি দাবি করে যৌথ বিবৃতি দেয় যুক্তরাষ্ট্রসহ ১০ দেশের রাষ্ট্রদূত। সেই বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ইচ্ছাকৃতভাবে কাভালার বিচার প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করা হচ্ছে। এতে তুরস্কের বিচার ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও গণতান্ত্রিক কাঠামো নিয়ে সন্দেহ থেকে যাচ্ছে।

এই বিবৃতি প্রকাশের পরই ওই রাষ্ট্রদূতদের ডেকে পাঠানো হয় তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। তারা যৌথ বিবৃতিটিকে 'দায়িত্বজ্ঞানহীন' বলেও অ্যাখ্যা দেয়। শনিবার এরদোয়ান জানিয়েছেন, 'আমি আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছি ওই ১০ রাষ্ট্রদূতকে যত দ্রম্নত সম্ভব 'অবাঞ্ছিত' ঘোষণা করতে। তুরস্ককে যদি ওরা চিনতে না পারে, তাহলে সেটি কী, তারা তা জানতে ও বুঝতে পারবে, যেদিন ওদের এই দেশ ছাড়তে হবে।'

স্বাভাবিকভাবেই তুরস্কের প্রেসিডেন্টের এমন হুঁশিয়ারিকে ভালোভাবে নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট দেশগুলো। এরই মধ্যে জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তরফে জানানো হয়েছে, 'আমরা বাকি ৯টি দেশের সঙ্গে পুরো বিষয়টি নিয়েই আলোচনা চালাচ্ছি।' মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, রাষ্ট্রদূতদের বহিষ্কার করা হচ্ছে, এমন খবরের বিষয়ে তাদের মন্ত্রণালয় অবগত এবং তারা এ বিষয়ে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা চেয়েছেন। নরওয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য, 'আমাদের রাষ্ট্রদূত এমন কিছু করেননি, যার জন্য তাদের এভাবে বহিষ্কার করার হুঁশিয়ারি দেওয়া যায়।'