মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
সুইডেন-পাকিস্তানের সতর্কতা

দ্রম্নত ধসের মুখে আফগানিস্তান

ম 'অর্থনৈতিক ধস নামলে সন্ত্রাসী গ্রম্নপগুলো মাথাচাড়া দেবে' ম 'টাইম বোমার ঘড়ি এরই মধ্যে চলতে শুরু করেছে'
যাযাদি ডেস্ক
  ২৫ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০

দ্রম্নত অর্থনৈতিক ধস নামতে যাচ্ছে আফগানিস্তানে। শনিবার সুইডেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা-বিষয়ক মন্ত্রী এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। আন্তর্জাতিক মহল আশু পদক্ষেপ না নিলে আফগানিস্তানে শিগগিরই বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে বলে সতর্ক করা হয়েছে। গত ১৫ আগস্ট পশ্চিমা সমর্থিত সরকারকে হটিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। এর পরপরই দেশটি থেকে সহায়তা ও বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নেয় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। এরই পরিপ্রেক্ষিতে অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়তে হয়েছে তালেবান সরকারকে। সংবাদসূত্র : রয়টার্স

দুবাইতে বার্তা সংস্থা 'রয়টার্স'কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সুইডিশ মন্ত্রী পির ওলসন ফ্রিড বলেন, 'আমার উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, দেশটি পতনের প্রান্তসীমায় দাঁড়িয়ে এবং আমরা যা ভেবেছিলাম, এর চেয়েও দ্রম্নত সময় এই ধস নামতে যাচ্ছে।' আফগানিস্তানের অর্থনীতির পতন ঘটলে দেশটিতে সন্ত্রাসী গ্রম্নপগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। তবে এরপরও সুইডেন তালেবানের হাত দিয়ে দেশটিতে টাকা পাঠাবে না বলে মনে করেন তিনি। আফগান নাগরিক সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মাধ্যমেই সেখানে মানবিক সাহায্য কার্যক্রম বাড়াবে বলে জানিয়েছেন ফ্রিড। তালেবান শাসকদের বৈধতা দিতে নারাজ বিভিন্ন দেশ ও বহুপক্ষীয় প্রতিষ্ঠান আগস্ট থেকেই আফগানিস্তানে তাদের উন্নয়ন সহযোগিতা স্থগিত রেখে বাড়িয়েছে মানবিক ত্রাণ সাহায্য। ফ্রিড বলেন, এর কারণ তালেবান এখন পর্যন্ত প্রমাণ দিতে পারেনি, তারা তাদের ১৯৯৬-২০০১ সালের নিপীড়নমূলক নীতিগুলো থেকে বেরিয়ে এসেছে।

ইউরোপীয় দেশগুলোর জন্য কাবুলে ফের দূতাবাস খোলার পরিস্থিতি এখনো হয়নি বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। কাবুলের বদলে কাতারেই আফগানিস্তান কেন্দ্রিক কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়বে বলেও অনুমান তার। উলেস্নখ্য, পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে তালেবানের কথা চালাচালির গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হচ্ছে কাতার। কয়েকদিন আগে ফ্রিড দোহায় কাতারে কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন।

এদিকে, পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী পরে বলেন, তালেবানের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপনই আফগানিস্তানের মানবিক বিপর্যয় ঠেকানোর একমাত্র উপায়। বিভিন্ন দেশ আফগানিস্তানের যে কয়েক বিলিয়ন ডলার আটকে রেখেছে, সেটা ছাড়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। ফাওয়াদ চৌধুরী বলেন, 'আমরা কি আফগানিস্তানকে বিশৃঙ্খলায় ঠেলে দিতে যাচ্ছি, নাকি দেশটিকে স্থিতিশীল বা তা করার চেষ্টা করতে যাচ্ছি?' তালেবানের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে সেখানে মানবাধিকার সুরক্ষা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক, সাংবিধানিক সরকার প্রতিষ্ঠায় উৎসাহিত করা যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

পাকিস্তানের সঙ্গে তালেবানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। দুই দশক ধরে কাবুলের যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সরকারের বিরুদ্ধে কট্টরপন্থি গোষ্ঠীটির লড়াইয়েও ইসলামাবাদ সহায়তা করেছে বলে প্রায়ই অভিযোগ উঠেছে। পাকিস্তান অবশ্য আগে থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। পাকিস্তানের মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী বলেন, আফগানিস্তানের নতুন শাসকদের স্বীকৃতি এবং নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যসহ তালেবান সদস্যদের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও অন্যান্য বিশ্বশক্তির একটি 'ফ্রেমওয়ার্ক' ঠিক করার এখনই সময়। এই কাঠামো এবং সরাসরি অর্থনৈতিক সহায়তাই দেশটির অস্থিতিশীলতা দূর করতে পারে। তিনি বলেন, টাইম বোমার ঘড়ি কিন্তু এরই মধ্যে চলতে শুরু করেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে