আসামে পঁাচ বাঙালি খুন ব্যাপক উত্তেজনা, বন্ধে অচল পুরো রাজ্যের জীবনযাত্রা

পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে মমতার উসকানিতেই :অনুপ চেটিয়া

প্রকাশ | ০৪ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
বন্ধ চলার সময় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ
ভারতের আসামে অজ্ঞাত পরিচয়ের বন্দুকধারীদের হামলায় পঁাচ বাংলাভাষী খুনের জের ধরে শনিবার সকাল থেকেই বন্ধ ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা চলছে রাজ্যটিতে। বন্ধের জেরে বরাক উপত্যকার কাছাড় ও করিমগঞ্জের বাংলাভাষীরা ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে। ফলে সেখানকার জনজীবন স্তব্ধ হয়ে পড়ে। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই ‘অল ইনডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট’র (এআইইউডিএফ) এমপি রাধেশ্যাম বিশ্বাসকে আটক করেছে পুলিশ। অন্যদিকে, উত্তেজনার মাঝেই বিতকির্ত মন্তব্য করা বিজেপির বিধায়ক শিলাদিত্য দেবের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও তিনি অধরাই রয়ে গেছেন। ফলে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সংবাদসূত্র : কে-২৪ নিউজ, ইনডিয়ান এক্সপ্রেস, এবিপি নিউজ গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর উজানি আসামের তিনসুকিয়ায় গুলি চালিয়ে পঁাচ বাংলাভাষীকে খুন করা হয়। অভিযোগ, এই খুনের পেছনে রয়েছে ‘ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম’ (ইনডিপেনডেন্ট)। যদিও বিবৃতি দিয়ে সংগঠনটি এই দায় অস্বীকার করেছে। এরই মাঝে দুই সাবেক উলফা নেতা মৃণাল হাজারিকা ও জিতেন দত্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অভিযোগ, এই দুই সাবেক বিদ্রোহী নাগরিক তালিকা (এনআরসি) প্রণয়ন হওয়ার পর থেকেই বার বার আসামবাসী বাঙালিদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেছেন। এদিকে, তিনসুকিয়ায় গণহত্যার প্রতিবাদে আসামজুড়ে একাধিক সংগঠনের ডাকা অনিদির্ষ্টকালের বন্ধ চলছে। বন্ধের প্রভাবে ছড়াচ্ছে সহিংসতা। দিসপুর, গুয়াহাটি, তিনসুকিয়া, ঢেকিয়াজুলি, করিমগঞ্জ, শিলচর, হাফলং, হাইলাকান্দি, কোকরাঝাড় এবং শোণিতপুরসহ রাজ্যের সবখানে চলছে সবার্ত্মক বন্ধ। রাস্তা ও রেল অবরোধের জেরে আসামের পরিবহন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বন্ধের জেরে আসাম থেকে ত্রিপুরা যাওয়া-আসা প্রায় বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিরাট নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বন্ধকে সমথর্ন করছে বিরোধী কংগ্রেস, তৃণমূলসহ বিভিন্ন দল। সরকারে থাকা বিজেপিও মুখে বন্ধকে সমথর্ন করছে বলে জানা গেছে। বিভিন্ন স্থানে চলছে মারামারি। বন্ধ সমথর্নকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘষর্ও হয়েছে বেশ কয়েক জায়গায়। এ সময় দুই শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে মমতার উসকানিতেই : অনুপ চেটিয়া তিনসুকিয়ায় গণহত্যা কারা ঘটিয়েছে, সেটা এখনো স্পষ্ট নয়। হত্যাকাÐের পর বৃহস্পতিবার রাতেই টুইট করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন। মমতার টুইটার পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘?আসাম থেকে ভয়ঙ্কর খবর এসেছে। এই নারকীয় হত্যার তীব্র প্রতিবাদ করছি। এটাই কী জাতীয় নাগরিক তালিকা করার সাম্প্রতিক উন্নয়ন’। এদিকে, উলফার আলোচনাপন্থি অংশের শীষর্ নেতা অনুপ চেটিয়া শনিবার জানান, সঠিক তদন্ত হলেই এ ঘটনার পেছনে কারা রয়েছে, সেটা জানা যাবে। তবে সহিংসতার মূল কারণ হিসেবে তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায়ের উসকানিমূলক মন্তব্যকেই দায়ী করেছেন। তার মতে, তৃণমূল আসলে গোটা বিষয়টার ফায়দা তুলতে চাইছে।