নিরাপদ মাত্রার চেয়ে ২০ গুণ বেশি দূষিত দিল্লির বায়ু

দূষিত বাতাসকে মৃত্যুদÐের সঙ্গে তুলনা চিকিৎসকের

প্রকাশ | ০৬ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
দূষিত পরিবেশের মধ্যেই শিক্ষাথীের্দর স্কুল-কলেজে যেতে হচ্ছে
নিরাপদ মাত্রার থেকে ২০ গুণ বেশি দূষিত হয়ে পড়েছে দিল্লির বাতাস। সোমবার ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের এই তথ্য দিয়েছে। গত ১ নভেম্বর থেকে দিল্লির দূষণ কমাতে নেয়া হয় অনেক সিদ্ধান্ত। দিল্লিজুড়ে বন্ধ করে দেয়া হয় সব ধরনের নিমার্ণ প্রকল্পের কাজ। বায়ুদূষণ করতে পারে এমন প্রকল্প ও চালু করতে বাধা দেয় দিল্লি সরকার। এরপর আশাও দেখা দিয়েছিল। দিল্লির বাতাসে কমেছিল দূষণের পরিমাণ। কিন্তু দিন কয়েক পেরোতে না পেরোতেই ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। রাজ্যের কৃষকদের মধ্যে বিভিন্ন শস্য ঘরে তোলা ও খড় পোড়ার জন্য পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি, ইনডিয়ান এক্সপ্রেস, এএফপি গত মাসে দিল্লির পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, দিল্লির বায়ুদূষণ কমাতে প্রয়োজনে সব ধরনের প্রাইভেটকার বন্ধ করে দেয়া হবে। কাযর্কর না হলেও এই সিদ্ধান্তকে অনেকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। দিল্লির দূষিত বাতাসকে মৃত্যুদÐের সঙ্গে তুলনা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ভারতে প্রতিবছর ১০ লাখের বেশি লোক ধেঁায়ার কারণে মারা যায়। দেশটির রাজধানী দিল্লিই বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের নগরী। প্রতিবছর নভেম্বর মাসে দিল্লির হাসপাতালগুলোতে গুরুতর শ্বাসকষ্টের রোগী ভতির্ হয়। শহরটিতে দুই কোটি লোকের বাস। দিল্লির গঙ্গারাম হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক শ্রীনিবাশ কে. গোপীনাথ বলেন, ‘তার জন্য দিল্লির বাতাস মৃত্যুদÐের মতো।’ যেমন যোগেশ কুমার নামে এক ব্যক্তির জীবন বঁাচাতে সম্প্রতি তার রোগাক্রান্ত ফুসফুসে অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে। তবে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুতে তিনি কীভাবে এতদিন নিঃশ্বাস নিচ্ছিলেন, তা ভেবে চিকিৎসকরা অবাক হয়েছেন। তবে এ সময় তিনি হাসপাতালের বাইরে গেলে আবার অসুস্থ হয়ে পড়বেন। শীতল বাতাস দূষণকে ভ‚মির কাছাকাছি নিয়ে আসে। দিল্লির বাতাসে পিএম-এর মাত্রা দুই দশমিক পঁাচ। ফলে বাতাসের উপাদান এতটাই ছোট যে, এই কণিকাগুলো ফুসফুসে ঢুকে যেতে পারে এবং এর ফলে প্রায়ই রক্তপ্রবাহ নিরাপদ মাত্রার চেয়ে ৩০ গুণ কম হতে পারে। হিন্দুদের ধমীর্য় উৎসব দীপাবলীর সময় বাতাসে দূষণের মাত্রা সবচেয়ে বেশি থাকে। পটকা ও বাজির ধেঁায়া বাতাসকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। পাশাপাশি গাড়ি ও কারখানার কালো ধেঁায়া, নিমার্ণাধীন ভবনের ধূলা ও শস্য পোড়ানোর ধেঁায়া বাতাসকে দূষিত করে। আর এই সময় দিল্লিতে বায়ুদূষণের মাত্রা এতটাই বেড়ে যায় যে, বৈজ্ঞানিক পরিমাপ যন্ত্রে তা মাপা সম্ভব হয় না। দিল্লির এই অতিঝুঁকিপূণর্ ধেঁায়ায় শিশু, বয়স্ক ও হঁাপানির মতো শ্বাসকষ্ট রোগীদের ফেব্রæয়ারির শেষ পযর্ন্ত বাইরে বের হওয়া উচিত নয়। কারণ, শিশুরা বড়দের তুলনায় ঘনঘন শ্বাস নেয়, এতে দূষিত বাতাস তাদের ছোট্ট দেহে দ্রæত ছড়িয়ে পড়ে। চিকিৎসকরা জানান, দিল্লির বাতাস শিশুদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূণর্। অক্টোবর মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দূষিত বায়ুর কারণে প্রতিবছর হাজার হাজার শিশু মারা যায়।