ছেলের প্রতি সমথর্ন দেখাতে দেশের ভেতর সফরে সৌদি বাদশাহ

প্রকাশ | ০৯ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
বাদশাহ সালমান বিন আবদুলআজিজ
ছেলে যুবরাজ (ক্রাউন প্রিন্স) মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রতি নিজের সমথের্নর বিষয়টি জনসম্মুখে তুলে ধরতে তাকে নিয়েই সৌদি আরবের বিভিন্ন অঞ্চল সফরে বেরিয়েছেন বাদশাহ সালমান বিন আবদুলআজিজ। তুরস্কের সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর গত ২ অক্টোবর সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাÐের পর যে আন্তজাির্তক চাপ ও সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তার মধ্যেই চলতি সপ্তাহে বাদশাহর এই সফর করছেন। সংবাদসূত্র : রয়টাসর্ অভ্যন্তরীণ এ সফরের অংশ হিসেবেই মঙ্গলবার সালমান ও মোহাম্মদ মধ্যাঞ্চলীয় আল-কাসিম প্রদেশে পেঁৗছালে সেখানকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও শিশুরা ফুল দিয়ে তাদের অভ্যথর্না জানায়। বাদশাহর আগমন উপলক্ষে কাসিমের সড়কগুলোতে সারি করে লাগানো হয় সৌদি আরবের পতাকা; স্থান পায় বাদশাহ ও যুবরাজের বড় বড় ছবিও। সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বাতার্ সংস্থা ‘এসপিএ’ জানায়, কাসিম সফরে সালমান বেশ কয়েকটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন, যার আনুমানিক ব্যয় প্রায় ১১২ কোটি ডলার। বাদশাহর সফরকে স্মরণীয় করে রাখতে কট্টর রক্ষণশীল এ প্রদেশটির কারাগার থেকে বেশকিছু বন্দিকেও মুক্তি দেয়া হয়। পযের্বক্ষকরা বলছেন, ৮২ বছর বয়সী সালমানের সাম্প্রতিক এ জনসম্মুখে আসার প্রধান কারণ ছেলের প্রতি সমথর্ন দেখানো। সৌদি আরবের প্রতিদিনের শাসনকাজের প্রায় সবকিছুই যুবরাজ সালমান দেখভাল করলেও খাশোগি হত্যাকাÐকে কেন্দ্র করে আন্তজাির্তক অঙ্গনে তার ভাবমূতির্ এখন অনেকটাই তলানিতে। সৌদি যুবরাজই খাশোগি হত্যাকাÐের নিদের্শ দিয়েছেন বলে দাবি তুরস্কের। মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও সাংবাদিক হত্যার নৈতিক দায় সালমানের ওপরই বতার্য়, এমন ইঙ্গিতও দিয়েছেন। ২ অক্টোবরের ওই ঘটনার পর পশ্চিমা বেশ কয়েকটি দেশ সৌদি আরবে অস্ত্র বিক্রির বিষয়টি পুনবিের্বচনা করার কথা জানিয়েছে। কনস্যুলেটের ভেতর সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় পশ্চিমারা রিয়াদে অনুষ্ঠিত একটি বিনিয়োগ সম্মেলনও বয়কট করেছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় মাঠে নামতে হয় বাদশাহ সালমানকেই। তুরস্কের সঙ্গে কথা বলতে নিজের এক বিশ্বস্ত উপদেষ্টাকে দেশটিতে পাঠান তিনি। খাশোগি হত্যাকাÐে সন্দেহভাজন ১৮ জনকে গ্রেপ্তারের খবর জানায় এসপিএ; বরখাস্ত করা হয় যুবরাজের ঘনিষ্ঠ এক সহচরসহ ঊধ্বর্তন পঁাচ সৌদি কমর্কতাের্ক। কয়েক সপ্তাহ আড়ালে থাকার পর সামনে আসেন যুবরাজ সালমানও। ২৫ অক্টোবর এক অনুষ্ঠানে খাশোগি হত্যায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করা হবে বলেও প্রতিশ্রæতি দেন। সম্প্রতি ইয়েমেন সীমান্তের কাছে মোতায়েন করা সেনাদের সঙ্গেও যুবরাজ সালমান দেখা করেছেন। গত সোমবার অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে যুবরাজকে এক সেনার সঙ্গেও দেখা গেছে। ভিডিওতে সেনাটিকে ‘নায়ক’ হিসেবেও অ্যাখ্যায়িত করেন সিংহাসনের এই উত্তরাধিকার। লন্ডনভিত্তিক সৌদি লেখক মাদাউয়ি আল-রাশিদ বলেন, খাশোগি ঘটনার পর সৌদিদের মধ্যে নানা ধরনের ভয়, আশঙ্কা ও দুশ্চিন্তা কাজ করেছে। এ কারণেই বিভিন্ন অঞ্চলে বাদশাহর এই সফর, তিনি যে এখনো তার অবস্থানে আছেন এবং তিনিই সবোর্চ্চ ক্ষমতাধর, সফরে সেটি নিয়েই পুনরায় আশ্বস্ত করা হচ্ছে। টেক্সাসের এ অ্যান্ড এম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপসাগরীয় রাজনীতি বিষয়ক বিশ্লেষক গ্রেগ গস বলছেন, বাদশাহ ও যুবরাজের সফরও দেশটির রাজনৈতিক অস্থিরতাকে শান্ত করতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না। তবে কোনো কিছুই এখন আর সমস্যা হবে না, বাদশাহ সম্ভবত এ বিষয়ে আস্থা ফিরে পেয়েছেন।