মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
ডিক্রি আফগানিস্তানে

নারীর সম্মতি ছাড়া তাকে বিয়ে করা যাবে না

যাযাদি ডেস্ক
  ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০
আফগান নারী -ফাইল ছবি

আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবান গোষ্ঠী নারী অধিকার নিয়ে নতুন এক ডিক্রি জারি করেছে। শুক্রবার জারি করা সেই ডিক্রিতে বলা হয়েছে- নারীদের 'সম্পত্তি' ভাবা যাবে না এবং বিয়ের আগে অবশ্যই তাদের অনুমতি নিতে হবে।

তালেবান সরকারের অন্যতম মুখপাত্র জাবিহুলস্নাহ মুজাহিদ শুক্রবার এ ডিক্রির বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, 'নারী কোনো সম্পদ নয়, বরং স্বাধীন ও উন্নত চরিত্রের মানুষ। শান্তির জন্য বা শত্রম্নতার অবসানের জন্য কেউ কোনো নারীকে অন্য কারও হাতে তুলে দিতে পারে না।' 'সরকারের নতুন আদেশ অনুযায়ী, নারীদের বিয়ের জন্য জবরদস্তি করা যাবে না এবং সব বিধবা অবশ্যই তাদের মৃত স্বামীর সম্পত্তির অংশ পাবেন।'

'ডিক্রিতে আরও বলা হয়েছে, আদালতেরও সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এ বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন এবং ধর্ম ও তথ্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উচিত হবে এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রচার চালানো।'

গত ১৫ আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখলের মধ্য দিয়ে দেশটির জাতীয় ক্ষমতায় আসীন হয় তালেবান গোষ্ঠী। ক্ষমতার এই পটপরিবর্তনের ফলে আফগান নারীদের অবস্থা কী হবে তা নিয়ে উৎসুক গোটাবিশ্ব। আফগানিস্তান তালেবান দখলে যাওয়ার পর থেকেই নারীদের শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের অধিকার নিয়ে বিভিন্ন দেশ সরব হয়েছে; কিন্তু নতুন ডিক্রিতে নারীকে মানুষ বলে গণ্য করার কথা বলা হলেও শিক্ষা এবং ঘরের বাইরে কর্মক্ষেত্রে নারীর বিচরণের সুযোগ থাকা নিয়ে কিছু বলা হয়নি।

এদিকে, দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা দখলের পরপরই তালেবান নেতারা নারী অধিকার সমুন্নত রাখার আশ্বাস দিলেও বাস্তবিক অর্থে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি এই গোষ্ঠী। এই প্রথম ডিক্রির মাধ্যমে নারী অধিকারের ব্যাপারে সুস্পষ্ট বক্তব্য দিল তালেবান।

কট্টর ইসলামপন্থি এই গোষ্ঠী আদর্শগতভাবে নারীর শিক্ষা, পেশাগত কাজে অংশগ্রহণ ও নারী ক্ষমতায়নের বিরোধী। তালেবান গোষ্ঠী আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশটির সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন কার্যালয় থেকে নারীকর্মীদের বিতাড়নের পাশাপাশি বন্ধ করা হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের নারী স্কুলগুলোও। আফগানিস্তানে প্রথম মেয়াদে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল তালেবান। সে সময় তালেবান নারীদের কোনো পুরুষ সঙ্গী এবং পর্দা ছাড়া বাড়ির বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। মেয়েদের শিক্ষাও ছিল নিষিদ্ধ।

অবশ্য এবার তালেবান গোষ্ঠী ক্ষমতায় এসেই বলেছে, তারা বদলে গেছে। কয়েকটি প্রদেশে মেয়েদের হাইস্কুলও খুলে দেওয়া হয়েছে; কিন্তু এ ব্যাপারে তালেবানের সদিচ্ছা নিয়ে দেশটির অনেক নারীরই সংশয় আছে। আফগানিস্তানে ব্যাংকের কোটি কোটি ডলারের তহবিল জব্দ করা এবং উন্নয়ন তহবিল সহায়তা বন্ধ করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ভবিষ্যতে দেশটির তালেবান সরকারের সঙ্গে কাজ করার অন্যতম শর্ত হিসেবে সামনে এনেছে নারী অধিকারের বিষয়টিকে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে