শ্রদ্ধা-স্মরণানুষ্ঠানে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির শতবষর্ পালিত

প্যারিসে ৭০ দেশের নেতা

প্রকাশ | ১২ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
অনুষ্ঠানে আবেগময় মুহ‚তের্ মাকের্ল ও ম্যাখেঁা
দেশে দেশে শ্রদ্ধা-স্মরণানুষ্ঠান অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে রোববার পালিত হয়েছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ অবসানের শতবষর্। তবে সবচেয়ে বড় স্মরণানুষ্ঠান পালিত হয়েছে ফ্রান্সে। এদিন রাজধানী প্যারিসে জড়ো হন বিশ্বের প্রায় ৭০টি দেশের নেতারা। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখেঁা ও বিশ্বনেতারা যে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে প্রথম মহাযুদ্ধের অবসান হয়েছিল, তার শতবষর্ উদযাপন করেন এবং ওই মহাযুদ্ধে নিহত সেনাদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানান। এই অনুষ্ঠানে মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, জামাির্নর চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মাকের্ল, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনসহ বহু রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদসূত্র : রয়টাসর্ শতবষর্ আগে ১৯১৮ সালের ১১ নভেম্বর ফ্রান্সের স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় ইউরোপের পশ্চিম রণাঙ্গনের কামানগুলো নীরব হয়ে গিয়েছিল, এর মাধ্যমে চার বছর ধরে চলা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘোষিত হয়েছিল। ওই যুদ্ধ এক কোটি সেনা ও লাখ লাখ বেসামরিকের জীবন কেড়ে নিয়েছিল। ১০০ বছর পরে প্রেসিডেন্ট ম্যাখেঁা প্যারিসের ‘আক দ্য ত্রিয়ুফ’র নিচে দঁাড়িয়ে ওই সেনা ও তাদের পরিবারের প্রতি সম্মান জানিয়ে ভাষণ দেন। ১৮০৬ সালে সম্রাট নেপোলিয়নের তৈরি এই স্মৃতিস্তম্ভটিতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহত অজ্ঞাত এক সেনাকে কবর দেয়া হয়েছিল। শত বছর আগে প্যারিসের উত্তরে কমপিয়েনে বনে ফ্রান্স ও জামাির্নর প্রতিনিধিরা যুদ্ধবিরতিতে স্বাক্ষর করে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছিলেন। শনিবার ওই একই জায়গায় এক অনুষ্ঠানে ম্যাখেঁা ও মাকের্ল পরস্পরের হাত ধরে আবেগের এক বিরল প্রদশর্নী দেখিয়েছেন, যা এর আগে দুটি বিশ্বশক্তির নেতাদের মধ্যে দেখা যায়নি। ১৯১৮ সালের ১১ নভেম্বর যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর প্রামাণিক বিবৃতি লিখেছিলেন সেনারা। রোববারের অনুষ্ঠানে ১০০ বছর আগে সেনাদের লেখা ওইসব বিবৃতি ফরাসি ইংরেজি ও জামার্ন ভাষায় পাঠ করে শোনায় হাই স্কুলের শিক্ষাথীর্রা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে বিশ্ব ইতিহাসের অন্যতম সবচেয়ে রক্তাক্ত লড়াই ছিল। ওই যুদ্ধ ইউরোপের রাজনীতি ও মানচিত্র বদলে দিয়েছিল। যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষরিত হলেও তা মাত্র দুই দশক টিকেছিল, এরপর নাৎসি জামাির্নর উত্থান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা করেছিল। রোববার বিকালে ম্যাখেঁা প্যারিস পিস ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্বনেতাদের স্বাগত জানান। এই ফোরাম শাসনপ্রক্রিয়া ও বহুপক্ষীয় নিরাপত্তা উদ্যোগের উন্নয়ন ও যেসব ভুলের কারণে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হয়েছিল, সে ধরনের ভুল এড়ানোর কৌশল উদ্ভাবনে কাজ করছে। তবে মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যিনি ‘আমেরিকা ফাস্টর্’ জাতীয়তাবাদী নীতিকেই সবোর্চ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন, তিনি এই ফোরামের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। শ্রদ্ধা জানাতে পারেননি ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘বৃষ্টির কারণে’ ফ্রান্সে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহত মাকির্ন সেনাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে যেতে পারেননি বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। শনিবার একেবারে শেষ মুহ‚তের্ তার এ যাত্রা বাতিলকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল সমালোচনা চলছে। বিশ্বযুদ্ধে নিহত সেনাদের কবরস্থানে না গিয়ে ট্রাম্প নিহত মাকির্ন সেনাদের ‘অসম্মান’ করেছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। স্ত্রী মেলানিয়াকে নিয়ে প্যারিসের ৮৫ কিলোমিটার পূবের্ বেলুর এন্না-মানের্ ‘আমেরিকান সিমেট্রি’তে শ্রদ্ধা জানাতে যাওয়ার সূচি ছিল মাকির্ন প্রেসিডেন্টের। কিন্তু টানা হালকাবৃষ্টি ও স্বল্প উচ্চতায় নেমে আসা মেঘ তার হেলিকপ্টারটির সেখানে যাওয়া আটকে দেয়।