সু চিকে মাইক পেন্স

রোহিঙ্গা নিপীড়ন ক্ষমার অযোগ্য

যারা দায়ী, তাদের বিচারে অগ্রগতি কী, যুক্তরাষ্ট্র তা জানতে চায়

প্রকাশ | ১৫ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সিঙ্গাপুরে সু চির সঙ্গে বৈঠকে মাকির্ন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স
রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নিপীড়ন-নিযার্তনকে ক্ষমার অযোগ্য অ্যাখ্যা দিয়ে এর জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর কড়া সমালোচনা করেছেন মাকির্ন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। সিঙ্গাপুরে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় সম্মেলনে এক পাশ্বৈর্বঠকে (সাইডলাইন) বুধবার মিয়ানমারের ‘স্টেট কাউন্সিলর’ অং সান সু চির সঙ্গে আলোচনায় পেন্স এ সমালোচনা করেন। সংবাদসূত্র : রয়টাসর্ গণমাধ্যমের সামনে উন্মুক্ত আলোচনায় মাকির্ন ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, গত বছরের ওই ববর্রতার জন্য দায়ীদের ‘জবাবদিহিতার’ আওতায় আনা হয়েছে, এমনটা শুনতে অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন তিনি। আর সু চির সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের আগে পেন্স বলেন, ‘সামরিক বাহিনী ও দুষ্কৃতকারীদের সৃষ্ট সহিংসতা ও নিপীড়ন, যা সাত লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে চলে যেতে বাধ্য করেছে, তার কোনো ক্ষমা নেই। সহিংসতা, যা লাখ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত ও প্রাণহানিসহ অবণর্ণীয় ক্ষতি ডেকে এনেছে, তার জন্য যারা দায়ী, তাদের বিচারে কী অগ্রগতি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র তা জানতে আগ্রহী।’ সংখ্যালঘু মুসলমান রোহিঙ্গাদের ওপর ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ চালানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে আগেই দায়ী করেছিল। আগস্টে জাতিসংঘের একটি তদন্ত দলও মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ‘গণহত্যার উদ্দেশ্যেই’ রাখাইনে বিস্তৃত আকারে হত্যাযজ্ঞ, ধষর্ণ ও অগ্নিসংযোগ চালিয়েছিল বলে জানায়। পেন্সের বক্তব্যের জবাবে সু চি রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে তার আগের অবস্থানেই অটল থাকেন। গত বছরের আগস্টে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার প্রতিক্রিয়াতেই সেনাবাহিনী বৈধ অভিযান শুরু করে বলেও আবারও মন্তব্য করেন তিনি। সু চি বলেন, ‘অবশ্যই প্রত্যেক মানুষের দেখার দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন। ব্যাপারটা হচ্ছেÑ আপনি এসব দৃষ্টিভঙ্গির আদানপ্রদান ঘটাতে পারেন এবং একে অপরকে বোঝার চেষ্টা করতে পারেন।’ রোহিঙ্গা নিপীড়নের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান না নেয়ায় চলতি সপ্তাহেই অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সু চিকে দেয়া তাদের সবচেয়ে মযার্দাপূণর্ সম্মানানাটি প্রত্যাহার করে নেয়। মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ধারাবাহিক লড়াইয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ পশ্চিমের অন্যান্য দেশ ও সংস্থা তাকে যেসব সম্মানসূচক পুরস্কার দিয়েছিল তার অনেকগুলোও এরই মধ্যে ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে। সম্মেলনের পাশ্বৈর্বঠকের আলোচনায় পেন্স সু চিকে জানান, ওয়াশিংটন মিয়ানমারে মুক্ত ও গণতান্ত্রিক গণমাধ্যম দেখতে চায়। গত বছর থেকে কারাগারে থাকা রয়টাসের্র দুই সাংবাদিকের ব্যাপারে লাখ লাখ মাকিির্ন ‘গভীর উদ্বিগ্ন’ বলেও মন্তব্য করেন মাকির্ন ভাইস প্রেসিডেন্ট। মিয়ানমারের ঔপনিবেশিক আমলে হওয়া আইন ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’ লঙ্ঘনের দায়ে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে সাত বছরের কারাদÐাদেশ পান রয়টাসের্র দুই সাংবাদিক ওয়া লোন ও কেয়া সোয়ে ও। ওই রায়ের বিরুদ্ধে গত ৫ নভেম্বর তাদের আইনজীবীরা আপিলও করেছেন। গত বছরের ডিসেম্বরে আটক হওয়ার সময় ওয়া লোন ও কেয়া সোয়ে রয়টাসের্র হয়ে রাখাইনে সেনাবাহিনীর অভিযানে ১০ রোহিঙ্গা মুসলমান গ্রামবাসীর হত্যার ব্যাপারটির অনুসন্ধান চালাচ্ছিলেন। চলতি বছরের ৮ ফেব্রæয়ারি রয়টাসর্ তাদের ওই অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছিল।