মন্তব্য মাকির্ন প্রেসিডেন্টের

খাশোগি হত্যা : সিআইএর ধারণা অসম্পূণর্

হত্যাসংক্রান্ত পূণার্ঙ্গ প্রতিবেদন মঙ্গলবার ট্রম্পের কাছে যাবে অস্ত্র বিক্রির স্বাথের্ সৌদি যুবরাজের সংশ্লিষ্টর বিষয়টি চেপে যাচ্ছেন

প্রকাশ | ১৯ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
সৌদি যুবরাজ (ক্রাউন প্রিন্স) মোহাম্মদ বিন সালমানই সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার নিদের্শ দিয়েছিলেন বলে সিআইএ যে ধারণার কথা জানিয়েছে, তাকে ‘অসম্পূণর্’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ঘটনার বিষয়ে মঙ্গলবার পূণার্ঙ্গ একটি প্রতিবেদন তার কাছে যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এর আগে, দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খাশোগি হত্যায় য্ক্তুরাষ্ট্র এখনো কোনো চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্তে পেঁৗছায়নি। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টাসর্ আন্তজাির্তক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, দাবানলের ক্ষয়ক্ষতি দেখতে শনিবার ক্যালিফোনির্য়ার যাওয়ার আগে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় ট্রাম্প বলেন, খাশোগি হত্যাকাÐের ঘটনাটি ‘কখনোই হওয়া উচিত ছিল না’। খাশোগি হত্যায় কারা দায়ী এবং এ ঘটনার সামগ্রিক প্রভাব কী, মঙ্গলবারের প্রতিবেদনেই মাকির্ন সরকার তা জানতে পারবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। তবে কারা ওই প্রতিবেদন জমা দিচ্ছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। রাজপরিবারের বেশকিছু নীতির সমালোচক খাশোগিকে হত্যার নিদের্শ সৌদি ‘ক্রাউন প্রিন্সই দিয়েছিলেন’, সিআইএর এই অনুমানকে ‘সম্ভব’ বলেও অভিহিত করেছেন মাকির্ন প্রেসিডেন্ট। এদিকে, ট্রাম্পের বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা আগে মাকির্ন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সরকার এখনো ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট খাশোগি হত্যায় দায়ীদের চিহ্নিত করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত যেসব প্রতিবেদনে মাকির্ন সরকার এ বিষয়ে চ‚ড়ান্ত উপসংহারে পেঁৗছেছে বলে ইঙ্গিত দেয়া হচ্ছে, তা সঠিক নয়। খাশোগির হত্যাকাÐ নিয়ে এখনো অসংখ্য অমীমাংসিত প্রশ্ন রয়ে গেছে বলে বিবৃতিতে বলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিদার নয়েতর্। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যে গুরুত্বপূণর্ কৌশলগত সম্পকর্ বজায় রেখেই’ সাংবাদিক হত্যার পেছনে কারা, তা খুঁজে বের করতে মাকির্ন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অন্যান্য দেশের সঙ্গে কাজ করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার এ পদক্ষেপ সৌদি আরবের মতো গুরুত্বপূণর্ মাকির্ন মিত্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পকর্ অক্ষুণœ রাখতে ট্রাম্পের চেষ্টাকে বিপত্তিতে ফেলবে বলেই ধারণা পযের্বক্ষকদের। সৌদি আরবের বতর্মান শাসন ব্যবস্থায় ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ সালমানের একচ্ছত্র আধিপত্যকে ‘পরোক্ষ প্রমাণ’ ধরে মাকির্ন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা খাশোগি হত্যাকাÐ বিষয়ে তাদের মূল্যায়ন টেনেছে বলে এ কাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছেন। মাকির্ন আইনপ্রণেতারাও তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় রিয়াদকে শাস্তি দেয়ার জন্য চাপ বাড়াচ্ছেন। শনিবারও বেশ কজন রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট সিনেটর সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে ট্রাম্পের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন। শনিবার টুইটারে সিনেটের বৈদেশিক সম্পকর্ কমিটির চেয়ারম্যান বব কোকার্র বলেন, সবই সৌদি আরবের যুবরাজকে ইঙ্গিত করছে। এমবিএস (মোহাম্মদ বিন সালমান) জামাল খাশোগিকে হত্যার নিদের্শ দিয়েছিলেন। ওই আদেশ যারা কাযর্কর করেছেন, এমবিএস তাদেরকে ফঁাসিতে ঝোলানোর আগেই ট্রাম্প প্রশাসনের উচিত এ বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ নেয়া।’ খাশোগি হত্যার ঘটনায় দায়ীদের জবাবদিহিতায় আনার কথা বলছেন ট্রাম্প প্রশাসনের শীষর্ কতার্রাও। এরই মধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ১৭ সৌদি নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ওয়াশিংটন। রিপাবলিকান এ প্রশাসন মাকির্ন প্রতিরক্ষা খাতের অন্যতম বড় বাজার সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পকর্ নষ্টে নারাজ। খাশোগি হত্যায় রিয়াদের ওপর কঠোর ব্যবস্থা নিতে কংগ্রেসের চাপ থাকা সত্তে¡ও মাকির্ন প্রেসিডেন্ট সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রির চুক্তি বহাল রাখতে চান। ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘চাকরি ও মাকির্ন অথৈর্নতিক অগ্রগতির বিষয়ে তারা খুবই অসাধারণ মিত্র। প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমাকে অনেক কিছুই বিবেচনায় নিতে হয় ।’ হেলিফ্যাক্সের নিরাপত্তা সম্মেলনে শনিবার মাকির্ন জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান মেরিন জেনারেল জোসেফ ডানফোডর্ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য নীতি বাস্তবায়নে সৌদি আরব গুরুত্বপূণর্ সামরিক ভ‚মিকা পালন করছে বলে জানান। তিনি বলেন, ‘অতীতেও সৌদি আরব এ অঞ্চলের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূণর্ অংশীদার ছিল, ভবিষ্যতেও তারা একই দায়িত্ব পালন করবে বলে আমার প্রত্যাশা।’ পযের্বক্ষকরা মনে করছেন, মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সৌদি আরবের কাছে ১১ হাজার কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রির স্বাথের্ খাশোগি হত্যায় সৌদি যুবরাজের হাত থাকার বিষয়টি চেপে যেতে চাইছেন। তবে সিআইএ’র অনুসন্ধানে এ-সংক্রান্ত যেসব প্রামাণ্য দলিল উঠে এসেছে, তাতে এ হত্যাকাÐে সৌদি যুবরাজকে আর নিদোর্ষ বলা কঠিন হয়ে পড়েছে।