মানবাধিকার হরণ

শর্ত সাপেক্ষে জাতিসংঘের দূতকে জিনজিয়াং সফরের অনুমতি

ম সফরভিত্তিক কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করা যাবে না

প্রকাশ | ২৯ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

ম যাযাদি ডেস্ক
মিশেলে ব্যাশেলেট
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দপ্তরের প্রধান মিশেলে ব্যাশেলেটকে শর্ত সাপেক্ষে চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ জিনজিয়াংয়ে সফরের অনুমতি দিয়েছে বেইজিং। চীনের জাতীয় দৈনিক 'সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট'র শুক্রবার এক প্রতিবেদেনে এ তথ্য জানিয়েছে। সংবাদসূত্র : রয়টার্স চীনের সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, বেইজিং অলিম্পিকের আসর শেষ হবে ২০ ফেব্রম্নয়ারি। তারপর যেকোনো দিন জিনজিয়াং সফরে আসতে পারেন ব্যাশেলেট। তবে এক্ষেত্রে বেইজিংয়ের শর্ত হলো- এই সফরভিত্তিক কোনো প্রতিবেদন তিনি বা তার দলের কোনো সদস্য লিখিত আকারে প্রকাশ করতে পারবেন না। ধারণা করা হয়ে থাকে, জিনজিয়াংয়ের শিবিরে ১০ লাখের বেশি উইঘুর মুসলমানকে আটক করে রেখেছে চীন। তবে এই খবরের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি ব্যাশেলেটের কার্যালয়। শীতকালীন অলিম্পিক যত এগিয়ে আসছে, জিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার হরণের অভিযোগ নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা ততই বাড়ছে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ বেইজিং অলিম্পিকে কূটনীতিক না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংখ্যালঘু উইঘুর ও তুর্কিক (তুর্কমেনিস্তানের মানুষ) বংশোদ্ভূত মুসলমানদের অধিকাংশেরই বাস চীনর জিনজিয়াং প্রদেশে। গত কয়েক বছর ধরে দেশটির ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি ও জিনজিয়াং প্রাদেশিক সরকারি কর্মকর্তারা উইঘুরদের নির্যাতন করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, জিনজিয়াংয়ের বন্দিশিবিরে আটকে রাখা হয়েছে উইঘুর জাতিগোষ্ঠীর প্রায় ১০ লাখ মানুষকে এবং সেখানে তাদের বাধ্যতামূলক শ্রমদান, প্রহার, অঙ্গছেদন, বন্ধ্যাকরণ ও উইঘুর নারীদের ধর্ষণ করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, জিনজিয়াংয়ে গণহত্যা চালাচ্ছে চীন। চীন অবশ্য বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, উইঘুর মুসলমানদের কোনো ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়নি। বরং তারা যেন ধর্মীয় কট্টরপন্থার দিকে ঝুঁকে না পড়ে, সেজন্য সেখানে তাদের বিভিন্ন কারিগরি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। তবে চীনের এই বক্তব্যে একেবারেই আস্থা রাখতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র ও পাশ্চাত্য মানবাধিকার সংস্থাসমূহ। এই পরিস্থিতিতে গত বছরের ফেব্রম্নয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপীয় দেশগুলোর আঞ্চলিক সংস্থা ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুরদের পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখে আসার জন্য জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল পাঠানোর প্রস্তাব করে। তখন তাতে রাজি হয়নি চীন। জিনজিয়াংয়ের ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যাওয়া উইঘুররা সেখানে ভয়াবহ অত্যাচার চলছে বলে জানিয়েছেন। গত বছর 'বিবিসি'র এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিনজিয়াংয়ে উইঘুরদের জোরপূর্বক শ্রমিক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।