সালমানের পতন চান রাজপরিবারের অনেকে!

জ্জ তবে সৌদি বাদশাহ বেঁচে থাকা অবস্থায় তা সম্ভব নয় জ্জ যুবরাজ আহমেদকে পরবতীর্ বাদশাহ হিসেবে পছন্দ অনেকের

প্রকাশ | ২১ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান
সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাÐের পর আন্তজাির্তকভাবে চাপে রয়েছেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এদিকে, এমন হত্যাকাÐে সৌদি রাজপরিবারের অনেকে যুবরাজ সালমানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন বলে জানা গেছে। সৌদি প্রশাসনের সঙ্গে নিযুক্ত থাকা রাজপরিবারের ১২ জনের মতো যুবরাজ এবং জ্ঞাতি ভাইরা সৌদি যুবরাজের পরিবতর্ন চান। কিন্তু সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুলআজিজ বেঁচে থাকা অবস্থায় সেটা সম্ভব নয় বলে রাজপরিবারের একটি সূত্র জানিয়েছে। সংবাদসূত্র : রয়টাসর্, আল-জাজিরা আল-সোউদ পরিবারের ওই সদস্যরা ‘ক্রাউন প্রিন্স’ সালমানের বাদশাহ হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে রাজপ্রাসাদ-সংশ্লিষ্ট তিনটি সূত্র জানিয়েছে। রাজপরিবারের বিভিন্ন শাখার যুবরাজ ও সালমানের জ্ঞাতি ভাইদের অনেকেই সিংহাসনের উত্তরাধিকার প্রশ্নে পরিবতর্ন দেখতে চান। পশ্চিমা বিশ্বে ‘এমবিএস’ (মোহাম্মদ বিন সালমান) নামে পরিচিত ক্রাউন প্রিন্স সালমান এখনো বাদশাহর প্রিয়পুত্র হওয়ায় তাকে সরিয়ে দেয়ার দাবি উঠলেও বাদশাহ এতে কান দেবেন না বলেই অনুমান করা হচ্ছে। রাজপরিবারের সদস্যরা এখন বাদশাহর মৃত্যুর পর তার ছোট ভাই ৭৬ বছর বয়সী প্রিন্স আহমেদ বিন আবদুলআজিজকে সিংহাসনে বসাতে আগ্রহী। বাদশাহ হলে ক্রাউন প্রিন্স সালমানের এই চাচা পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থা এবং কিছু পশ্চিমা দেশেরও সমথর্ন পাবেন বলে সৌদি একটি সূত্র জানিয়েছে। আড়াই মাস বিদেশে কাটিয়ে যুবরাজ আহমেদ গত মাসে রিয়াদে ফিরেছেন। বিদেশে থাকাকালে লন্ডনে তার বাসভবনের সামনে সোউদ সাম্রাজ্যের পতন চেয়ে বিক্ষোভকারীদের ¯েøাগানের প্রতিক্রিয়ায় সৌদি আরবের বতর্মান নেতৃত্বের সমালোচনাও করেছিলেন বাদশাহ সালমানের এই ছোট ভাই। ২০১৭ সালে উত্তরাধিকার নিধার্রণ কমিটির যে তিন জ্যেষ্ঠ সদস্য এমবিএসকে ক্রাউন প্রিন্স বানানোর বিরোধিতা করেছিলেন, আহমেদ তাদের একজন ছিলেন বলেও দুটি সূত্র সে সময় নিশ্চিত করেছিল। এ বিষয়ে যুবরাজ আহমেদ কিংবা তার প্রতিনিধিদের কারও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। রিয়াদের কোনো কমর্কতার্ও উত্তরাধিকার প্রসঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেননি। সৌদি রাজবংশে কয়েকশ যুবরাজ রয়েছে। ইউরোপীয় রাজপরিবারের মতো সেখানে রাজার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার জ্যেষ্ঠ পুত্র সিংহাসনের উত্তরাধিকার হতে পারেন না। সৌদি রাজপরিবারের ঐতিহ্য অনুযায়ী, বাদশাহ এবং পরিবারের বিভিন্ন শাখার জ্যেষ্ঠ সদস্যরা মিলে তাদের দৃষ্টিতে সিংহাসনের জন্য সবচেয়ে বেশি যোগ্য ব্যক্তিকেই উত্তরাধিকার হিসেবে মনোনীত করেন। তবে ওই মনোনয়নই শেষ কথা নয়। বাদশাহর মৃত্যু কিংবা তিনি রাজকাযর্ পরিচালনায় অক্ষম হলে ৩৪ সদস্যের কাউন্সিলই নতুন বাদশাহ ঠিক করবেন। আগে থেকে ঠিক করে রাখা উত্তরাধিকারের বাদশাহ হতে হলেও কাউন্সিলের সম্মতি লাগবে। এমবিএসের ওপর থেকে সমথর্ন প্রত্যাহার করে নেয়া প্রভাবশালীরা এখন সেই ক্ষণেরই অপেক্ষা করছেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের ঊধ্বর্তন কমর্কতার্রাও সৌদি রাজপরিবারের উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনায় যুবরাজ আহমেদকে পরবতীর্ বাদশাহ বানালে সমথর্ন দেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে সরাসরি সম্পকর্ রয়েছে, এমন বেশ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে। প্রায় চার দশক সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা আহমেদ দায়িত্ব পেলে এমবিএসের সামাজিক ও অথৈর্নতিক সংস্কারে কোনো রকম বদল আনবেন না বলেও আস্থাশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে। বাদশাহর এই ভাই পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে রিয়াদের সামরিক চুক্তিগুলো বহাল রাখার পাশাপাশি রাজপরিবারের মধ্যে একতাও ফিরিয়ে আনবেন বলে মত তাদের। যুক্তরাষ্ট্রের এক জ্যেষ্ঠ কমর্কতার্ বলেছেন, খাশোগি হত্যাকাÐের ঘটনায় জ্যেষ্ঠ আইনপ্রণেতাদের চাপ ও সিআইএর মূল্যায়নের পরও হোয়াইট হাউস এখনই এমবিএসের সঙ্গে দূরত্ব তৈরিতে আগ্রহী নয়। তবে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর পূণার্ঙ্গ প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ অবস্থান বদলেও যেতে পারে। গত সোমবার রিয়াদে বাদশাহ সালমান তার ছেলের সমথের্ন যে ভাষণ দিয়েছেন, হোয়াইট হাউস সেটিকে গুরুত্বসহকারে দেখছে বলেও মত ওই মাকির্ন কমর্কতার্র। সোমবারের ভাষণে সৌদি সরকারি কেঁৗসুলির প্রশংসা ছাড়া খাশোগি হত্যাকাÐ নিয়ে সরাসরি কিছু বলেননি বাদশাহ। খাশোগি হত্যাকাÐের নিদের্শ ক্রাউন প্রিন্স সালমানের কাছ থেকেই এসেছিল বলে সিআইএর মূল্যায়নকে শনিবার ‘অসম্পূণর্, তবে হতে পারে’ বলেছিলেন মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। মঙ্গলবার এ বিষয়ে পূণার্ঙ্গ প্রতিবেদন পাওয়ার কথা বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। এ প্রসঙ্গে ‘নতুন কিছু যোগ করার নেই’ বলে সোমবার হোয়াইট হাউসের এক কমর্কতার্ জানিয়েছেন।