খাশোগি হত্যাকাÐ ট্রাম্পের জন্য গলার কঁাটা হয়ে দঁাড়িয়েছে

প্রকাশ | ২১ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাÐের সঙ্গে সৌদি আরবের জড়িত থাকার বিষয়টি মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য গলার কঁাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ট্রাম্প এ ঘটনা নিয়ে দোটানায় পড়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র সৌদি আরব এ ঘটনা সম্পকের্ যে ব্যাখ্যা দিয়েছে, সেটা মেনে নেবেন, নাকি মাকির্ন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী সৌদি আরবের ‘ডি ফ্যাক্টো’ নেতা যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানকে খুনি হিসেবে ঘোষণা করবেনÑ এটিই তাকে দোটানায় ফেলেছে। সংবাদসূত্র : এএফপি অনলাইন খাশোগির হত্যার পর থেকে মাকির্ন প্রেসিডেন্ট যুবরাজ এ ঘটনার সঙ্গে যে জড়িত, সেটা একবারের জন্যও বলেননি। সৌদি ওই সাংবাদিক ‘ওয়াশিংটন পোস্টে’ রিয়াদের বতর্মান কমর্কাÐের কঠোর সমালোচনা করে কলাম লিখতেন। গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে তাকে হত্যা করে তার দেহ কেটে টুকরা টুকরা করা হয়। এই হত্যাকাÐের পর আন্তজাির্তক চাপে সৌদি আরব ২১ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তারের ঘোষণা দেয় এবং ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। এ ঘটনায় পঁাচজনকে মৃত্যুদÐ দেয়া হবে বলেও জানায় রিয়াদ। একই সময় যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবের ১৭ জনের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ করে। তারা ওই হত্যাকাÐের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের। অভিযুক্তদের মধ্যে সৌদি যুবরাজ সালমানের দুইজন ঘনিষ্ঠ সহকারী রয়েছেন। তবে কোনো পক্ষই এই হত্যাকাÐের প্রধান পরিকল্পনাকারীর নাম প্রকাশ করেনি। অবশ্য ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ ও ‘নিউইয়কর্ টাইমস’ জানিয়েছে, সিআইএর মতে সৌদি যুবরাজ সালমানই এই হত্যাকাÐের মূল পরিকল্পনাকারী। আর এটাই মাকির্ন প্রেসিডেন্টকে দোটানায় ফেলে দিয়েছে। তিনি সিআইএর কথা মেনে নিয়ে সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পকের্র অবনতি করার ঝুঁকি নেবেন কিনা। কারণ, বিশ্বের তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার স্বাথের্ এবং ইরানের বিরোধিতার ক্ষেত্রে তিনি সৌদি সরকারের সঙ্গে গভীর বন্ধুত্ব স্থাপন করেছেন। ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে ‘এমবিএস’ নামে পরিচিত সৌদি যুবরাজের ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। এ কারণেই এখন পযর্ন্ত ট্রাম্প খাশোগি হত্যাকাÐে যুবরাজ সালমানের দিকে আঙুল না তুলে বলেছেন, তিনি কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ পাননি। ‘কানেির্গ এন্ডোউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস’র মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মিশেল ড্যানি বলেন, ‘ট্রাম্পের সামনে দুটি রাস্তা রয়েছে। তিনি গোয়েন্দা সংস্থার ব্যাখ্যা মেনে নিয়ে কংগ্রেসের ওপর বিষয়টি ছেড়ে দিতে পারেন। এর অথর্ দঁাড়াবে যুক্তরাষ্ট্র আর এমবিএস-এর সঙ্গে কাজ করবে না।’ ড্যানি বলেন, অথবা তিনি সবকিছুর বিরুদ্ধে গিয়ে যুবরাজের সঙ্গে হোয়াইট হাউসের সম্পকর্ রক্ষার চেষ্টা করতে পারেন। তার মতে, বাদশাহ সালমান বিন আবদুলআজিজের ছেলের সঙ্গে সম্পকের্র অবনতি ঘটানো একটি চরম সিদ্ধান্ত হবে। তবে এর মানে এই নয় যে, এর ফলে দুই দেশের মধ্যে সম্পকর্ সম্পূণর্ শেষ হয়ে যাবে। ড্যানি বলেন, ‘সৌদি আরব এমবিএস নয়, আর এমবিএসও সৌদি আরব নন।’ অপরদিকে, ট্রাম্প যদি যুবরাজ সালমানের সমালোচনা না করেন, তবে ক্ষুব্ধ কংগ্রেস যুবরাজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে, যা উভয়ের সম্পকের্ অবনতি ঘটাবে। কংগ্রেস সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে। রোববার ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত রিপাবলিকান দলের জ্যেষ্ঠ সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম খাশোগি হত্যাকাÐ সম্পকের্ ‘এনবিসি’র ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে বলেন, ‘১৫-১৮ জন হত্যাকারী যুবরাজের অনুমতি না নিয়েই দুটি বিমানে করে তুরস্কে গিয়ে সৌদি কনস্যুলেটে ঢুকে যুবরাজের সমালোচককে হত্যার পর কেটে টুকরা টুকরা করেছে, প্রথম দিন থেকেই আমি এটা মানতে পারছি না।’ এই ঘটনা নিয়ে হোয়াইট হাউসও বিভক্ত হয়ে পড়েছে। কুশনার এ ঘটনা ও তার বন্ধু সালমানের ব্যাপারে কিছু বলছেন না। এদিকে, নিউইয়কর্ টাইমস জানিয়েছে, শুক্রবার হোয়াইট হাউসের কমর্কতার্ ক্রিস্টিন ফন্টেনরোজ এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পদত্যাগ করেছেন।