কানাডায় হুয়াইওর শীষর্ নিবার্হী আটক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র দ্ব›দ্ব

প্রকাশ | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
মেং ওয়ানঝৌয়েল
চীনের বৃহৎ মোবাইল ফোন নিমার্তা কোম্পানি হুয়াইওর শীষর্ নিবার্হী ও এর প্রতিষ্ঠাতার মেয়ে কানাডায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। দেশটির ভ্যাঙ্কুভারে ১ ডিসেম্বর হুয়াওয়ের ডেপুটি চেয়ারম্যান ও প্রধান ফিন্যান্সিয়াল কমর্কতার্ মেং ওয়ানঝৌয়েলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে। মেংয়ের বাবা ঝেংফেই চীনের ‘পিপলস লিবারেশন আমির্’র সাবেক প্রকৌশলী ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের বাণিজ্যযুদ্ধের উত্তেজনা কমানোর ঘোষণার মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই গ্রেপ্তারের ঘটনাটি ঘটল। এতে পরিস্থিতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংবাদসূত্র : এএফপি অনলাইন বিবিসি ইরানের সঙ্গে হুয়াইওয়ের সন্দেহজনক আথির্ক লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে মাকির্ন কতৃর্পক্ষ একটি তদন্ত শুরু করেছে। এই তদন্ত শুরুর পর শীষর্ কমর্কতার্ মেংকে আটক করা হয়। মেংয়ের এই আটকের খবর এশিয়ার শেয়ার বাজারে প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে সাংহাই ও হংকংয়ে শেয়ার বাজারে দরপতন ঘটেছে। সাংহাইয়ে ১.৩ শতাংশ ও হংকংয়ে ২.৬ শতাংশ দরপতন ঘটেছে। তেহরানের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের অবরোধের সঙ্গে এই গ্রেপ্তারের সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে মাকির্ন সিনেটর বেন সাসে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘চীন আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা স্বাথর্ বিঘিœত করতে সুকৌশলে কাজ করছে। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা নীরব দশর্ক হয়ে বসে থাকতে পারে না।’ কানাডার বিচার মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, মেংকে ১ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়। মন্ত্রণালয় আরও জানায়, কানাডার প্রতি যুক্তরাষ্ট্র মেংকে হস্তান্তর করতে বলেছে। শুক্রবার তার জামিনের শুনানি হবে। মেং বিস্তারিত কিছু প্রকাশ হওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আবেদন জানিয়েছেন এবং আদালত তা মঞ্জুর করে আদেশ জারি করায় এ বিষয়ে তারা আর বিস্তারিত কিছু জানাতে পারছে না বলে জানিয়েছে। আজেির্ন্টনায় জি-২০ সম্মেলনের এক ফঁাকে করা এক বৈঠকে মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে যেদিন বাণিজ্য যুদ্ধ বন্ধের চুক্তি করেছেন সেদিনই মেংকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদিকে, অটোয়ার চীনা দূতাবাস মেংয়ের মুক্তি দাবি করেছে। দূতাবাস থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘চীন এই ঘটনার তীব্র বিরোধিতা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এ ধরনের পদক্ষেপ আটককৃতের মানবিক অধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন।’ হুয়াইও এক বিবৃতিতে জানায়, ‘তাদের কোম্পানি জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ ও অবরোধ আইনসহ সকল বিদ্যমান আইন মেনেই ব্যবসা পরিচালনা করে।’ হুয়াইওয়ে জানিয়েছে, অভিযোগ সম্পকের্ তাদের কাছে প্রায় তেমন কোনো তথ্য নেই এবং ‘মেং অন্যায় কোনো কিছু করেছেন বলেও তাদের জানা নেই।’ ওয়াল স্ট্রিট জানার্ল জানিয়েছে, এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ হুয়াইও ইরানের ওপর অথৈর্নতিক অবরোধ লঙ্ঘন করছে সন্দেহ করে একটি তদন্ত শুরু করে। এক প্রতিবেদনে নিউইয়কর্ টাইমস জানিয়েছে, হুয়াওয়ে ইরান ও উত্তর কোরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার লঙ্ঘন করেছে, এমন সন্দেহে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ও অথর্ বিভাগ প্রতিষ্ঠানটির কাছে প্রয়োজনীয় নথি দাবি করেছে। এই কোম্পানিটিকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে বারবার অভিযুক্ত করেছেন মাকির্ন আইনপ্রণেতারা। প্রতিষ্ঠানটির প্রযুক্তি চীন সরকারের গোয়েন্দাগিরির কাজে ব্যবহৃত হতে পারে বলেও যুক্তি দেখিয়েছেন তারা।