খাশোগি হত্যা :সন্দেহভাজন খুনিদের হস্তান্তর করবে না সৌদি আরব

প্রকাশ | ১১ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবেইর

সাংবাদিক জামাল খাশোগির খুনের ঘটনায় সাবেক দুজন ঊধ্বর্তন সৌদি কমর্কতার্র বিরুদ্ধে তুরস্ক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেও তাদের হস্তান্তর করা হবে না বলে জানিয়েছে সৌদি আরব। রোববার রিয়াদে এক সংবাদ সম্মেলনে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবেইর একথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের নাগরিকদের হস্তান্তর করবো না।’ প্রায় এক সপ্তাহ আগে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান সন্দেহভাজনদের হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছিলেন। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টাসর্, এএফপি গত বুধবার ইস্তাম্বুলের প্রধান কেঁৗসুলি ওই দুই সাবেক ঊধ্বর্তন সৌদি কমর্কতার্র বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। তুরস্কের কমর্কতার্রা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে প্রধান কেঁৗসুলির দপ্তর এই সিদ্ধান্তে আসে, সৌদি যুবরাজ (ক্রাউন প্রিন্স) সালমানের শীষর্ সহযোগী সোউদ আল-কাহতানি ও বৈদেশিক গোয়েন্দা বিষয়ক উপপ্রধান জেনারেল আহমেদ আল-আসিরি খাশোগি খুনের পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে ছিলেন, তা সন্দেহ করার মতো যথেষ্ট তথ্য আছে। দ্বিতীয় বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে গত ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে গিয়ে হত্যার শিকার হন খাশোগি। ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক খাশোগি সৌদি সরকারের কঠোর সমালোচক ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছায় নিবাির্সত এই সাংবাদিক সৌদি আরবে ফেরার বিষয়ে রিয়াদের চাপ অগ্রাহ্য করে আসছিলেন। প্রথমে রিয়াদের পক্ষ থেকে খাশোগিকে হত্যার কথা অস্বীকার করা হলেও তুরস্কের সংবাদমাধ্যমগুলো সৌদি আরবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রমাণ হাজির করতে থাকে। এ ঘটনায় সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও ওঠে। এই হত্যাকাÐের জেরে গত মাসে ১৭ সৌদির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে যুক্তরাষ্ট্রের অথর্ মন্ত্রণালয়। তাদের ওই নিষেধাজ্ঞা তালিকায় কাহতানির নাম থাকলেও আসিরির নাম নেই। সৌদি আরবের প্রধান কেঁৗসুলি (পাবলিক প্রসিকিউটর) জানিয়েছেন, খাশোগিকে দেশে ফিরিয়ে নেয়ার আদেশটি আসিরির কাছ থেকে এসেছিল এবং কাহাতানির ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বতর্মানে এই দুজন আটকাবস্থায় আছেন কি-না, সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্নের জবাব দিতে রাজি হননি সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুবেইর। এদিকে, জাতিসংঘে নিযুক্ত বিদায়ী মাকির্ন দূত নিকি হ্যালি বলেছেন, খাশোগি হত্যার ঘটনায় সৌদি আরবকে যুক্তরাষ্ট্রের সমথর্ন দেয়া উচিত নয়। কেননা, এটি যুক্তরাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য নয়। মাকির্ন সাময়িকী ‘দি আটলান্টিক’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমন মন্তব্য করেন। হ্যালি আরও বলেন, ‘আমরা এ হত্যাকাÐকে উপেক্ষা করতে পারি না, আমরা কখনও বলতে পারি না যে, এটা ঠিক আছে, আমরা কখনও হিংস্র আচরণকে সমথর্ন করতে পারি না এবং এগুলো আমাদেরকে বলতে হবে।’ ‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না’ মৃত্যুর আগে জামাল খাশোগির শেষ কথা ছিল, ‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না।’ সৌদি এ সাংবাদিকের জীবনের শেষ মুহ‚তের্র অডিও টেপের অনুলিপি পড়া এক সূত্রের বরাত দিয়ে রোববার সিএনএন একথা জানায়। উল্লেখ্য, এর আগেও তুরস্কের পক্ষ থেকে এই একই কথা বলা বলা হয়েছিল। সূত্রটি জানায়, অনুলিপিটি থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, হত্যাটি পূবর্পরিকল্পিত এবং এই হত্যার কাজ কীভাবে এগিয়ে নিতে হবে, সে সম্পকের্ কয়েকবার ফোনের মাধ্যমে ‘ব্রিফ’ করা হয়। তুকির্ কমর্কতাের্দর ধারণা, রিয়াদের শীষর্ কমর্কতার্রা ওই ফোনকলগুলো করেছিলেন।