প্রয়োজনে বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ করবেন ট্রাম্প

হুয়াওয়ের নিবার্হী মেং গ্রেপ্তার ইস্যু জ্জ দেশের জন্য ভালো হলে আমি অবশ্যই এ ব্যপারে হস্তক্ষেপ করব জ্জ জামিন পেয়েছেন মেং ওয়ানঝৌ

প্রকাশ | ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ডোনাল্ড ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি হুয়াওয়ের নিবার্হী মেং ওয়ানঝৌর মামলায় হস্তক্ষেপ করতে পারেন, যদি এ ধরনের পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্য সম্পকর্ আরও খারাপ হওয়া এড়াতে পারে। তিনি বলেন, ‘দেশের জন্য যা কিছু ভালো তার সবই আমি করব।’ এদিকে, যাকে ঘিরে ট্রাম্পের এই ঘোষণা, চীনের বৃহৎ টেলিকম কোম্পানি হুয়াওয়ের প্রধান অথৈর্নতিক কমর্কতার্ মেং মঙ্গলবার কানাডার একটি আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টাসর্ গত ১ ডিসেম্বর তাকে গ্রেপ্তার করেছিল কানাডা কতৃর্পক্ষ। ইরানের বিরুদ্ধে আরোপিত অবরোধ লঙ্ঘনের অভিযোগের একটি ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র তার বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ এনেছে। এ কারণে তাকে বন্দিপ্রত্যপর্ণ চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাতে পারে কানাডা সরকার। আথির্ক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে প্রতারণার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে প্রতিটি অভিযোগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে মেংয়ের সবোর্চ্চ ৩০ বছর করে কারাদÐ হতে পারে। ওইসব জালিয়াতির জন্য ব্যাংকগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ইরান নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন ও বিশাল অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দেয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। অবশ্য ৪৬ বছর বয়সী মেং তার বিরুদ্ধে আনা যেকোনো ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি এসব অভিযোগের বিরুদ্ধে লড়বেন। মেং ওয়ানঝৌ হুয়াওয়ের প্রতিষ্ঠাতার রেন ঝেংফেইয়ের মেয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের বাণিজ্যযুদ্ধে যখন চরমে, তখনই তাকে গ্রেপ্তার করে কানাডা, যা চীনকে ক্ষুব্ধ করেছে এবং এ বিষয়ে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সম্পকর্ খারাপ হয়। এদিকে, মঙ্গলবার এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, প্রয়োজন হলে এই মামলায় তিনি বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ করবেন। যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে মেংকে গ্রেপ্তার করেছিল কানাডা। ট্রাম্প বলেন, ‘আমার যদি মনে হয়, এটা (হুয়াওয়ের সিএফওর বিষয়ে বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ) আমাদের দেশের জন্য ভালো, তাহলে প্রয়োজনে আমি অবশ্যই এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করব। এটি খুবই গুরুত্বপূণর্ এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ইতিবাচক।’ ওভাল অফিসে বসে ‘রয়টাসর্’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মাকির্ন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যদি আমি মনে করি, এখন পযর্ন্ত সবচেয়ে বড় বাণিজ্য চুক্তির জন্য এই হস্তক্ষেপ ইতিবাচক হবে, তাহলে তাই করা হবে।’ নানা প্রতিবন্ধকতা সত্তে¡ও চীনের সঙ্গে একটি ভালো বাণিজ্যচুক্তি সম্পাদনের আশাবাদের কথাও জানান ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, হুয়াওয়ের প্রধান অথির্বষয়ক কমর্কতার্ মেং ওয়ানঝৌ ইরানের সঙ্গে তার প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক লেনদেনের বিষয়ে একটি বহুজাতিক ব্যাংককে বিভ্রান্ত করে ঋণদাতাদের ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞা অমান্যের ঝুঁকিতে ফেলেছেন। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রত্যপের্ণর অনুরোধে সাড়া দিয়ে গত ১ ডিসেম্বর ভ্যাঙ্কুভার বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে কানাডা কতৃর্পক্ষ। মঙ্গলবার ভ্যাঙ্কুভার আদালতে শুনানি শেষে বিভিন্ন শতের্ তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারক উইলিয়াম এচরেক। এখন মেংকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হবে কিনা, তা নিয়ে কানাডায় মামলা চলছে। বিচারক ওই বহিঃসমপের্ণর পক্ষে রায় দিলে হুয়াওয়ের এই শীষর্ নিবার্হীকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হবে কিনা, সে বিষয়ে কানাডার বিচারমন্ত্রীকে চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সমপর্ণ করা হবে কিনা, এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের আগ পযর্ন্ত ভ্যাঙ্কুবারে নিজের বাড়িতেই রাত ১১টা থেকে পরদিন সকাল পযর্ন্ত অবস্থান করতে হবে হুয়াওয়ের এই শীষর্ নিবার্হীকে। বাইরে বের হলে সঙ্গে নিতে হবে পাহারায় নিয়োজিত রক্ষীদের। ব্রিটিশ কলাম্বিয়া আদালতের বিচারক মেংকে জামিনের অথের্র সাত লাখ কানাডিয়ান ডলার নগদ দিতে নিদের্শ দিয়েছেন; বাকি তিন লাখ ডলারের জামিন হয়েছেন কানাডায় থাকা মেংয়ের ৫ বন্ধু। হুয়াওয়ের প্রতিষ্ঠাতার মেয়ে ৪৬ বছর বয়সী মেংকে গ্রেপ্তারের পর আথির্ক বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়। এ ছাড়া বিশ্বের দুই বৃহৎ অথর্নীতি চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বাণিজ্য বিরোধ নিরসনের পথে বাধা হয়ে দঁাড়ায় এই গ্রেপ্তারের ঘটনা। দ্রæত কানাডা তাকে মুক্তি না দিলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুশিয়ারি দেয় চীন। এদিকে, এরই মধ্যে চীনে সাবেক এক কানাডীয় ক‚টনীতিককে আটক করা হয়েছে। হুয়াওয়ের ঘটনার সঙ্গে ওই আটকের দৃশ্যমান কোনো সংযোগ না থাকলেও চীন এ ইস্যুতে প্রতিশোধ হিসেবে তাকে আটক করেছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। মাইকেল কভরিগ নামের সাবেক ওই কানাডীয় ক‚টনীতিক বতর্মানে ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রæপ’-এ কাজ করছেন। তাকে নিরাপদে মুক্ত করে আনতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আন্তজাির্তক এই প্রতিষ্ঠানটি। মাইকেল কভরিগের গ্রেপ্তারে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে কানাডা কতৃর্পক্ষ।