খাশোগি খুনে সৌদি যুবরাজকে দুষল মাকির্ন সিনেট

ইয়েমেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রিয়াদের ওপর থেকে সমথর্ন প্রত্যাহারের পক্ষে ভোট

প্রকাশ | ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে খুনের ঘটনায় সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে দোষারোপ করেছে মাকির্ন সিনেট। একই সঙ্গে সৌদি আরবের ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থানের নিন্দা জানিয়ে ইয়েমেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রিয়াদের ওপর থেকে সমথর্ন প্রত্যাহারের পক্ষে ভোট দিয়েছে সিনেট। সিনেটররা এ দিন জাতিসংঘ সমথির্ত শান্তি আলোচনার দিকে ইঙ্গিত করেন এবং জানান যুক্তরাষ্ট্রেরও চাপ প্রয়োগ করা উচিত। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টাসর্ বৃহস্পতিবার সিনেটের এই ভোটদান অনেক বড় প্রতীকী পদক্ষেপ। কারণ এই প্রস্তাবটি আইনে পরিণত করতে হলে প্রতিনিধি পরিষদের অনুমোদন প্রয়োজন। আর রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিনিধি পরিষদ সৌদি আরবের বিরুদ্ধে আনা যেকোনো প্রস্তাবই আটকে দেয়। ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের হামলায় মাকির্ন সমথর্ন বন্ধে সিনেটের ঐতিহাসিক এই প্রস্তাবটি ৫৬-৪১ ভোটে পাস হয়েছে। এই রায়ে সমথর্ন জানানো শীষর্ রিপাবলিকান সিনেটর মাইক লি বলেন, ‘যুদ্ধ শুধু একটি স্থানে থেমে থাকে না। কিংবা এটি শুধু দুই সেনাসদস্যের গুলির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। আধুনিক যুদ্ধে এতে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উল্লেখ্য, ইয়েমেনের এই যুদ্ধে এখন পযর্ন্ত কয়েক লাখ লোকের মৃত্যু হয়েছে। দুভিের্ক্ষর মুখে পড়া এই দেশটিকে এখন চরম মানবিক সংকট মোকাবেলা করতে হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধক্ষমতা অ্যাক্টের আওতায় এবারই প্রথম কংগ্রেসের চেম্ব^ার প্রথমবারের মতো সামরিক হস্তক্ষেপ বন্ধে কোনো প্রস্তাবে ভোট দিলো। ১৯৭৩ সালে পাস করা আইনটিতে কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়া মাকির্ন সামরিক বাহিনী ব্যবহারে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সীমিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ডেমোক্রেট পাটির্র আনা এই প্রস্তাবে ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পাটির্র সাত আইনপ্রণেতাও ভোট দিয়েছেন। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদিকে উচ্ছেদ করে রাজধানী দখলে নেয় ইরান সমথির্ত হুথি বিদ্রোহীরা। সৌদি রাজধানী রিয়াদে নিবার্সনে যেতে বাধ্য হন হাদি। হুথিদের ক্ষমতা দখলের পর থেকেই হাদির অনুগত সেনাবাহিনীর একাংশ তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। ২০১৫ সালের মাচের্ হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে মিত্রদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ‘অপারেশন ডিসাইসিভ স্টমর্’ নামে সামরিক অভিযান শুরু করে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। সৌদি জোটের অভিযান শুরুর পর এখন পযর্ন্ত ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে অনেক নারী-শিশুও রয়েছে। অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তাম্বুল কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার পর এই যুদ্ধের সমালোচনা তীব্র হতে থাকে। ডিসেম্বরের গোড়ার দিকে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনে মানবিক সহায়তার জন্য ৪০০ কোটি মাকির্ন ডলার প্রয়োজন। ইয়েমেন ভোটের পরপর খাশোগি হত্যায় সৌদি যুবরাজের সংশ্লিষ্টতার নিন্দা জানিয়ে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এটি সবর্সম্মতিতে পাস হয়। প্রস্তাবের উত্থাপক ও সিনেটের পররাষ্ট্র সম্পকির্বষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান রিপাবলিকান সিনেটর বব ককার্র বলেন, ‘সবর্সম্মতিতে মাকির্ন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট বলেছে, জামাল খাশোগি খুনের ঘটনায় যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান দায়ী। এটি কড়া বিবৃতি। আমি মনে করি যে মূল্যবোধ আমরা ধারণ করি, এটা তার কথা বলেছে।’