আরেকটি কঠিন পরীক্ষা পাস করলেন আইনস্টাইন

প্রকাশ | ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
অ্যালবাটর্ আইনস্টাইন
আবার পরীক্ষায় পাস। বলতে গেলে দারুণ ‘রেজাল্ট’। ছাত্রের নাম অ্যালবাটর্ আইনস্টাইন। বিজ্ঞানীদের পক্ষ থেকে সদ্য প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, ২৬ হাজার আলোকবষর্ দূরেও নক্ষত্রের আলো খবর দিচ্ছেÑ অক্ষরে-অক্ষরে ঠিক আইনস্টাইনের ‘জেনারেল থিয়োরি অব রিলেটিভিটি’ বা ‘সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত¡’। ১০২ বছর আগে প্রকাশিত তার তত্তে¡ আইনস্টাইন জানিয়েছিলেন, প্রচÐ মহাকষীর্য় টান যে এলাকায় বিদ্যমান, সেখানে আলো প্রতি সেকেন্ডে কম তরঙ্গ সৃষ্টি করে ছড়াবে। বিজ্ঞানের পরিভাষায় এই ঘটনাকে বলে ‘রেড শিফ্ট’। কারণ, প্রতি সেকেন্ডে কম তরঙ্গ সৃষ্টি করে ছড়ালে আলো লাল রঙের দিকে এগোয়। মিল্কি ওয়ে বা ছায়াপথের কেন্দ্রে উপস্থিত এবং সূযের্র চেয়ে ৪০ লাখ গুণ বেশি ভারী এক বø্যাক হোলের (কৃষ্ণগহŸর) পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে ‘এস-টু’ নামের একটি তারা ঠিক ওই রকম ঘটনার সম্মুখীন কি-না, তা জানার চেষ্টা করেছেন গবেষকরা। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জামাির্নর গাশির্ং-এ অবস্থিত ‘ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইন্সটিটিউট ফর এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল ফিজিক্স’-এর বিজ্ঞানী রেইনহাডর্ গেনজেল। জামাির্ন তো বটেই, ফ্রান্স, পতুর্গাল, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাষ্ট্র এবং আয়ারল্যান্ডের কয়েকশ বিজ্ঞানী প্রায় তিন দশক ধরে ওই বø্যাক হোলের পাশ দিয়ে ‘এস-টু’-র চলন লক্ষ্য করছিলেন চিলিতে অবস্থিত ‘অবজারভেটরি’ গবেষণাগার থেকে। উল্লেখ্য, উত্তর চিলিতেই আছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় টেলিক্সোপ। গেনজেল এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, প্রচÐ ভারী ওই বø্যাক হোলের পাশ দিয়ে যখন ‘এস-টু’ ছুটছিল সেকেন্ডে সাত হাজার ৬০০ কিলোমিটার বেগে, তখন তার আলো পরীক্ষা করা হয়েছে। দেখা গেছে, সেই আলো লালের দিকে ঘেঁষে যাচ্ছে ঠিক ততটা পরিমাণে, যতটা ‘জেনারেল থিয়োরি অব রিলেটিভিটিতে আইনস্টাইন অনুমান করেছিলেন। পৃথিবীর চারপাশে যেহেতু প্রচÐ মহাকষীর্য় প্রভাব নেই, তাই জ্যোতিবির্জ্ঞানীদের খুঁজতে হয়েছিল এমন এক বø্যাক হোল, যা সূযের্র তুলনায় অনেক ভারী। এমন বø্যাক হোল যে আমাদের গ্যালাক্সির কেন্দ্রেই আছে, তা বিজ্ঞানীরা জানেন। আর দরকার ছিল, এমন এক নক্ষত্রের, যা সে রকম ভারী বø্যাক হোলের পাশ দিয়ে যাবে। ‘এস-টু’ হলো, সে রকমই এক তারা। ১৯৯০ সাল থেকে গবেষকরা ওই তারার চলন লক্ষ করেছেন। দূর থেকে বø্যাক হোলের কাছে এসে আবার দূরে চলে যাবে ‘এস-টু’। কাছে এবং দূরে, মহাকষীর্য় টানের প্রভেদে কতটা বাড়ছে-কমছে, ‘এস-টু’ থেকে নিগর্ত আলোর লাল রঙের দিকে ঘেঁষা, তা পরীক্ষা করাই ছিল বিজ্ঞানীদের উদ্দেশ্য। এখনো শেষ হয়নি তাদের পরীক্ষা। চলবে আগস্ট মাস পযর্ন্ত। তবে, ২৮ বছর ধরে পরীক্ষাতেও ‘জেনারেল থিয়োরি অব রিলেটিভিটি’ যখন সসম্মানে পাস করেছে, তখন কি আর তা কোনোদিন ভুল প্রতিপন্ন হবে? গেনজেল এবং তার সতীথর্রা উড়িয়ে দিচ্ছেন তেমন সম্ভাবনা। সংবাদসূত্র : বিবিসি