অবশেষে পদত্যাগ রাজাপাকসের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন বিক্রমাসিংহে

শ্রীলংকায় রাজনৈতিক সংকটের অবসান

প্রকাশ | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
বিতকির্তভাবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়া শ্রীলংকার সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসে পদত্যাগ করেছেন। শনিবার তিনি পদত্যাগ করেন বলে নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে ও দলের একজন আইনপ্রণেতা। রাজাপাকসে পদত্যাগ করায় সাত সপ্তাহ ধরে চলা দেশটির ক্ষমতা দখলের লড়াই শেষ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সাত সপ্তাহ আগে প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে বরখাস্ত করে রাজপাকসেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। আজ (রোববার) ফের প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেবেন বিক্রমসিংহে। সংবাদসূত্র : রয়টাসর্, এনডিটিভি, আল-জাজিরা শ্রীলংকার সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা বিক্রমাসিংহেকে নতুন প্রধানমন্ত্রী করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী পদে বসানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে সিরিসেনা বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসেছিলেন স্পিকার কারু জয়সূযর্ এবং বিক্রমাসিংহের সঙ্গে। গত ২৬ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা হঠাৎ করেই তৎকালীন প্রধানমনন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে বরখাস্ত করেন এবং একসময়কার শত্রæ রাজাপাকসেকে প্রধানমন্ত্রী পদে বসান। পরবতীর্ সময়ে সিরিসেনা পালাের্মন্ট ভেঙে দেয়ার কথা জানান। মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রায় ২০ মাস আগেই পালাের্মন্ট ভেঙে দেয়ার কথা জানিয়ে মধ্যবতীর্ নিবার্চনের কথাও জানান। যদিও সে দেশের সুপ্রিম কোটর্ প্রেসিডেন্টের এই সিদ্ধান্ত উল্টে দেয়। ৩ ডিসেম্বর দেশটির আদালত রাজাপাকসের বিরুদ্ধে অন্তবর্তীর্কালীন আদেশ দিয়ে, ক্যাবিনেটের সিদ্ধান্ত ঘোষণায় বাধা দেয়ার কথা জানিয়ে দেয়। যদিও এরপরে রাজাপাকসে আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আবেদন জানান। রাজাপাকসে ক্ষমতা দখলের পরপরই শ্রীলংকার সুপ্রিম কোটর্ জানায়, প্রেসিডেন্ট যেভাবে পালাের্মন্ট ভেঙে দিয়েছেন, তা বেআইনি। এর পরই বোঝা গিয়েছিল, বেশি দিন আর গদি অঁাকড়ে থাকা রাজাপাকসের কাছে অত্যন্ত দুরূহ কাজ। দ্বীপরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোটর্ রায় দেয়, মাহিন্দা রাজাপাকসে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তিনি বা তার মন্ত্রিসভার কেউ ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন না। তার আগে তাদের প্রমাণ করতে হবে ক্ষমতা দখলের বৈধতা। যা তার কাছে অসম্মানজনক। এরপর রাজাপাকসের কাছে পদত্যাগ ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। যদিও পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে স্থায়ী সরকারের জন্যই তার এই পদত্যাগ।’ বিগত কয়েক বছর ধরে দেশ পরিচালনার নানা নীতি নিয়ে প্রেসিডেন্ট সিরিসেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহের বিরোধ চলছিল। অভিযোগ, সিরিসেনা চীনের কোম্পানিগুলোকে শ্রীলংকায় নানা কাজ পাইয়ে দিতে আগ্রহী ছিলেন। বিক্রমাসিংহের তাতে আপত্তি ছিল। এরপর চলতি বছরের ২৬ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা হঠাৎ প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহেকে বরখাস্ত করেন। কিন্তু একেবারে বরখাস্ত? স্বপ্নেও ভাবেননি অনেকে। রাজাপাকসে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ব্যাপক বিরোধিতার মুখে পড়েন। তার বিরুদ্ধে পালাের্মন্টে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়। দুই বার চেষ্টা করেও তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে ব্যথর্ হন। তারপরও ক্ষমতা ধরে রাখার প্রশ্নে অনড় রাজাপকসেকে শেষ পযর্ন্ত ক্ষমতা ছাড়তেই হলো।