দিল্লিতে নিভর্য়া কাÐে ফঁাসি বহাল

জ্জ তবে এখনই স্বস্তি পাওয়ার কিছু নেই। লড়াই এখনো বাকি: নিভর্য়ার মা

প্রকাশ | ১০ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
নিভর্য়ার মা আশা দেবী
যাযাদি ডেস্ক ভারতের রাজধানী দিল্লিতে বাসে প্যারামেডিকেল কলেজছাত্রী নিভর্য়াকে গণধষের্ণর মামলায় ফঁাসির সাজা বহাল রেখেছে সবোর্চ্চ আদালত। সোমবার সুপ্রিম কোটর্ সাজা বহাল রাখার এ আদেশ দিয়েছে। এ মামলায় আগেই চারজনকে ফঁাসির সাজা দিয়েছিল সুপ্রিম কোটর্। সাজাপ্রাপ্ত চারজনের মধ্যে তিনজন একটি রিভিউ পিটিশনে ফঁাসির সাজা বদলে যাবজ্জীবন কারাদÐের আজির্ জানায়। সেই আজির্ খারিজ করে সোমবার ফঁাসির সাজাই বহাল রাখে সুপ্রিম কোটর্। সংবাদসূত্র : এবিপি নিউজ, এনডিটিভি, ইনডিয়ান এক্সপ্রেস, এএনআই প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি আর ভানুমতি এবং বিচারপতি অশোক ভ‚ষণের বেঞ্চে রায় পুনবিের্বচনার আবেদনের শুনানি হয়। কিন্তু দোষীদের আইনজীবীরা নতুন কোনো যুক্তিই দিতে পারেননি। ফলে দোষীদের আবেদন খারিজ করে দেন বিচারপতিরা। বেঞ্চ তাদের রায়ে বলে, ‘আমাদের আদেশ রিভিউ করার মতো কোনো কিছু পাওয়া যায়নি।’ ফলে আপাতত ফঁাসির সাজাই বহাল রাখল শীষর্ আদালত। ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে সিনেমা দেখে বন্ধুর সঙ্গে ফেরার সময় চলন্ত বাসে ধষের্ণর শিকার হন ওই প্যারামেডিকেল ছাত্রী। ছয় পাষÐ ধষের্ণর আগে তার বন্ধুকে পিটিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখে। পরে তাদের দুজনকেই চলন্ত বাস থেকে ফেলা দেয়া হয়। মারাত্মক আহত ওই ছাত্রী ঘটনার ১৩ দিন পর সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ওই ধষর্ণ ও হত্যার ঘটনায় ভারতজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, ধষর্কদের সবোর্চ্চ শাস্তির দাবিতে আন্দোলন শুরু করে ছাত্র-জনতা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম মেয়েটির নাম দেয় ‘নিভর্য়া’। বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে নারীর সুরক্ষা নিয়ে জাতীয় পযাের্য়ও বিতকর্ তৈরি হয়। প্রবল বিতকের্র মুখে আইন সংশোধন করে নারী নিযার্তনের জন্য করা হয় সবোর্চ্চ শাস্তির বিধান। মামলায় অভিযুক্ত ছয়জনের মধ্যে প্রধান আসামি বাসচালক রাম সিং কারাগারে মারা যান। পরে তার নাম মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়। দোষী সাব্যস্ত আরেক অপরাধী সে সময় অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় কিশোর অপরাধীদের জন্য প্রযোজ্য আইনে ২০১৫ সালে তাকে তিন বছরের জন্য সংশোধনাগারে পাঠায় আদালত। আইন অনুযায়ী, সেটাই ছিল অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সবোর্চ্চ সাজা। শাস্তির মেয়াদ কাটিয়ে ২০১৫ সালে সেই কিশোর মুক্তি পেলে নতুন করে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরপর ধষের্ণর মতো গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সীদেরও ‘প্রাপ্তবয়স্ক’ বিবেচনা করে বিচারের আইন হয় ভারতে। ভারতের একটি দ্রæত বিচার আদালত ২০১৩ সালে বাকি চার আসামির ফঁাসির রায় দেয়। ২০১৪ সালে হাইকোটর্ এবং গতবছর আপিল ওই সাজাই বহাল রাখে। এরপর তিন আসামি শাস্তি কমানোর জন্য রিভিউ আবেদন করেন। গত বছর নভেম্বরে তাদের আবেদন শুনতে রাজি হয় শীষর্ আদালত। সেই শুনানির জন্য সাজা কাযর্করের প্রক্রিয়া এতদিন স্থগিত থাকলেও রিভিউ খারিজ হওয়ায় এখন দÐ কাযর্করের পথ খুলল। নিভর্য়ার বাবা-মা ধষর্কদের ফঁাসির দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সুপ্রিম কোটের্র চ‚ড়ান্ত রায়কে তারা স্বাগত জানিয়েছেন। তবে নিভর্য়ার মা আশা দেবী এটাও জানিয়েছেন, বিচারে অনেক দেরি হয়েছে। দেশের অন্য মেয়েদের ওপর এর প্রভাব পড়বে। বিচার বিভাগের কাছে তিনি আবেদন জানিয়েছেন, বিচার ব্যবস্থা যেন আরও দ্রæত করা হয়। নিভর্য়ার দোষীদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফঁাসিতে ঝোলানোর আবেদন জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘ওরা নাবালক নয়। তাও ওরা একাজ করেছে। এটাই দুভার্গ্য। আমরা যে ন্যায়বিচার পাবো, আদালতের এই সিদ্ধান্ত আমাদের সেই বিশ্বাস ধরে রেখেছে।’ সোমবার সুপ্রিম কোটের্ নিভর্য়া মামলা ওঠার আগে তার মা জানিয়েছিলেন, ধষর্কদের জন্য মৃত্যুদÐের আদেশও যথেষ্ট নয়। আদালতের রায়ের পর তিনি বলেন, সুপ্রিম কোটর্ যা রায় দিয়েছে, তাতে নিভর্য়ার ন্যায়বিচার হয়েছে। আদালতের রায়ে তিনি খুশি। তবে এখনই স্বস্তি পাওয়ার কিছু নেই। লড়াই এখনো বাকি। মৃত্যুদÐের আগে দোষীদের নিয়ে অনেক আইনি জটিলতা ও প্রক্রিয়া থাকে। সেগুলোর দিকেই ইঙ্গিত করেন আশা দেবী। দোষীদের কাছে এখনো একটি রাস্তা খোলা রয়েছে। সুপ্রিম কোটের্র রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দোষীরা রাষ্ট্রপতির কাছে মৃত্যুদÐাদেশ খারিজ করার জন্য আবেদন জানাতে পারে। এই বিষয়টি নিয়েও এখন চিন্তায় রয়েছেন তিনি।