শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
তৃণমূলের ব্যাখ্যা

দ্রৌপদীকে নিয়ে ভুল বলেননি মমতা লড়াই বিজেপির বিরুদ্ধে

যাযাদি ডেস্ক
  ০৪ জুলাই ২০২২, ০০:০০
দ্রৌপদী মুর্মু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভুলটা কী বলেছেন, এমনটা দাবি করছেন তৃণমূল সমর্থকরা? বলা হচ্ছে, কেনই বা তার বক্তব্যকে বিকৃত করে সস্তা রাজনৈতিক প্রচারের চেষ্টা করছে কংগ্রেস, সিপিএম? তৃণমূল নেত্রী বলেছেন, 'রাষ্ট্রপতি পদে আদিবাসী নারীকে প্রার্থী করবে বিজেপি, এটা আগে বললে সর্বসম্মত করা যায় কি-না, ভাবা যেত। রাজনাথ সিং যখন ফোন করেছিলেন, তখনো নাম বলেননি। এখন আমাদের অ-বিজেপি বিরোধীদের বিকল্প প্রার্থী যশবন্ত সিনহা।' সংবাদসূত্র : ইনডিয়ান এক্সপ্রেস

সিপিএম, কংগ্রেস আর কিছু তারকাটা বিশেষজ্ঞ এই কথাকে বিকৃত করে বাজারে নেমেছেন বলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। তারা বলছে, এমন প্রচার হচ্ছে যেন মমতা বিজেপি প্রার্থীর প্রতি দুর্বল বা বিজেপির প্রতি নরম ইত্যাদি। অথচ বাস্তবটা উলটো। দ্রৌপদী মুর্মুকে প্রার্থী করে বিজেপি যে আদিবাসী ও নারী আবেগের দাবা খেলতে যাচ্ছে, তৃণমূলনেত্রী সেখানে একটি কৌশলী বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি কোথাও বলেননি, তিনি বা তৃণমূল এখন দ্রৌপদীকে সমর্থন করবেন। তার প্রার্থী যশবন্ত সিনহাই। কিন্তু বিজেপি যেভাবে নারী আদিবাসী প্রার্থীকে সামনে রেখে প্রচার করছে, তার উত্তরে মমতা দুটি রাজনৈতিক বার্তা দিয়েছেন।

এক. ব্যক্তিগতভাবে রাষ্ট্রপতি পদে নারী আদিবাসী প্রার্থীতে তার কোনো আপত্তি নেই। লড়াই বিজেপি প্রার্থীর সঙ্গে। দেশের বিপুল সংখ্যক আদিবাসী ও নারী নাগরিকদের কাছে বিজেপির একতরফা প্রচারের মোকাবিলায় এটি তার সঠিক বার্তা।

দুই, দ্রৌপদী মুর্মুকে যে সর্বসম্মত প্রার্থী করা গেল না, তার পুরো দায় বিজেপির। বিজেপি কেন আগে বিরোধী দলগুলোর কাছেও এই নাম উপস্থাপন করেনি। তারা ফোন করতে পারছে, আর নাম বলতে পারল না? অর্থাৎ, এই আদিবাসী মহিলা প্রার্থীর ক্ষেত্রে উদার হয়ে সর্বসম্মতির কথা ভাবতেও পারত বিরোধীরা। বিজেপির জন্যেই সেটা হলো না। তৃণমূলনেত্রীর এই বিবৃতি গভীর রাজনৈতিক তাৎপর্যপূর্ণ।

তৃণমূল বলছে, 'আদিবাসীদের প্রতি যখন বিজেপি বলবে, আমরা দ্রৌপদীকে প্রার্থী করেছি, তখন বিরোধীরা বলবে, তোমরা আগে নামটি বলোনি কেন? কেন সর্বসম্মতির চেষ্টা করোনি? এখন আমাদের আলাদা প্রার্থী মিলিত সিদ্ধান্তে। তাই সেভাবেই লড়াই হবে।'

তৃণমূলনেত্রীর এই বক্তব্যের সঙ্গে বিজেপির প্রতি বা বিজেপি প্রার্থীর প্রতি দুর্বলতার কোনো সম্পর্ক নেই। এই বিবৃতি বিজেপির প্রচারে ব্যারিকেড তৈরির বিবৃতি। বাম, কংগ্রেস বুঝে বা না-বুঝে অন্ধ তৃণমূল বিরোধিতা করতে গিয়েই বিকৃত প্রচার করছে বলে দাবি তৃণমূলের।

আদিবাসী নারী প্রার্থী নিয়ে বিজেপির প্রচার আটকে দিয়েছেন মমতা, তাতেই তাদের শ্বাসকষ্ট বলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, দ্রৌপদীকেই যখন প্রার্থী করল বিজেপি, ২০১৭ সালে করেনি কেন? তখন তো এমপি হিসেবে তিনি লিখিতভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দ্রৌপদীর নাম প্রস্তাব করেছিলাম। সেই চিঠি তখন থেকেই মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়। যদি নারী প্রার্থী চায় বিজেপি, ২০১৭-তেই কেন মীরা কুমারকে তারা সমর্থন করেনি? আসলে আদিবাসী মহিলা দ্রৌপদীকে সম্মান দেওয়া ওদের মূল উদ্দেশ্য নয়, বিজেপির গোষ্ঠী বিন্যাসে ভেঙ্কাইয়া নায়ডুকে রাষ্ট্রপতি হতে না দেওয়ার দাবার চালই আসল কথা। এখন মুখে আদিবাসী নারীর কথা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে