পোল্যান্ড সম্মেলন শেষ

জলবায়ু চুক্তি নীতিমালায় একমত বিশ্ব

সমালোচকরা বলছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির বিপদ ঠেকাতে নীতিমালাটি যথেষ্ট নয় প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে আরও উদ্যোগী হওয়ার আহŸান জাতিসংঘ মহাসচিবের

প্রকাশ | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
পোল্যান্ডের কাতোভিসে অনুষ্ঠিত এবারের জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে সপ্তাহ দুই ধরে চলা ম্যারাথন আলোচনার পর শনিবার রাতে চুক্তি বাস্তবায়নের নীতিমালা নিয়ে ঐকমত্যে পেঁৗছেছেন বিশ্বনেতারা। ‘কনফারেন্স অব দ্য পাটির্স’ বা কপ নামে পরিচিত জাতিসংঘের এই বাষির্ক সম্মেলনের ২৪তম আয়োজন এটি। নীতিমালা বাস্তবায়নে নেতারা একমত হওয়ায় শনিবার একই ফ্রেমে বন্দি হন বিশ্বের ১৮৩ দেশের হাস্যোজ্জ্বল প্রতিনিধিরা Ñসিনহুয়া
তিন বছর আগে প্যারিসে স্বাক্ষরিত জলবায়ু পরিবতর্ন রোধ চুক্তি কী উপায়ে বাস্তবায়িত হবে, তার নীতিমালা নিয়ে একমত হয়েছে বিশ্বের প্রায় ২০০টি দেশ। পোল্যান্ডের কাতোভিসে সপ্তাহ দুই ধরে চলা ম্যারাথন আলোচনার পর শনিবার রাতে দেশগুলোর মন্ত্রীরা এ সমঝোতায় পেঁৗছান। এবারের জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনের নিধাির্রত সময়সীমা পার হওয়ার একদিন পর শনিবার এই ইস্যুতে মতৈক্যে পেঁৗছাতে সমথর্ হন সম্মেলনে অংশ নেয়া প্রতিনিধিরা। রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে বিভিন্ন দেশের এ সমঝোতা প্যারিস চুক্তিতে ‘প্রাণ সঞ্চার’ করেছে বলে অনেকে মন্তব্য করলেও সমালোচকরা বলছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির বিপদ ঠেকাতে নীতিমালাটি মোটেও যথেষ্ট নয়। এর মাধ্যমে কাবর্ন নিঃসরণ প্রয়োজনীয় মাত্রায় কমানো সম্ভব হবে না বলেও আশঙ্কা তাদের। সংবাদসূত্র : রয়টাসর্, বিবিসি ২০১৫ সালে প্যারিসে স্বাক্ষরিত ওই জলবায়ু চুক্তিতে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি প্রাক-শিল্পায়ন যুগের পযাের্য়র ওপরে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে বিশ্বনেতারা একমত হয়েছিলেন। ক্ষমতায় আসার পর গত বছরের জুনে মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দেশকে চুক্তিটি থেকে সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিলে উষ্ণতা রোধে বিশ্বের উদ্যোগ সাফল্য পাবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ দানা বাধতে থাকে। এবারের সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ছিল, ২০১৫ সালে প্যারিসে স্বাক্ষরিত চুক্তি বাস্তবায়নের নীতিমালা তৈরি করা, যাকে ‘রুলবুক’ বলছেন আলোচকরা। কিন্তু শুক্রবার আলোচনার শেষ দিনে এসেও আলোচকরা নিশ্চিত হতে পারেননি, একটি রুলবুক পাওয়া যাবে। কারণ কাবর্ন নিঃসরণের হার, প্রতিশ্রæতি অনুযায়ী দেশগুলো গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানো ও নিঃসরণ পরিকল্পনার আধুনিকীকরণের প্রতিবেদন ও পযাের্লাচনার পাশাপাশি জলবায়ু তহবিলে বরাদ্দ নিয়ে অন্যান্য দেশের মধ্যেও তুমুল মতপাথর্ক্য দেখা যায়। কাতোভিস সম্মেলনেও এ মতপাথর্ক্যগুলো উঠে এলে নিধাির্রত সময়ের মধ্যে বিশ্ব প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নের নীতিমালা বা ‘রুলবুকে’ পৌঁছাতে পারবে কি-না, তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছিল। জলবায়ু পরিবতের্নর ফলে ঝুঁকিতে থাকা দরিদ্র দেশগুলোও প্যারিস চুক্তিতে ২০২০ সাল পযর্ন্ত প্রতিবছর জলবায়ু তহবিলে যে ১০০ বিলিয়ন ডলার রাখার বাধ্যবাধকতা ছিল, তা কীভাবে বিতরণ করা হবে, সে বিষয়ে আরও সুস্পষ্ট নীতিমালা চেয়েছিল। তহবিলে অথের্র পরিমাণ এ দশকের শেষ থেকে কীভাবে বাড়বে তাও জানতে চেয়েছিলেন ওই দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। কাবর্ন ক্রেডিট পযাের্লাচনায় জবাবদিহিতার নীতি কেমন হবে তা নিয়ে ব্রাজিল ও অন্যান্য দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিধাবিভক্তিসহ বেশ কিছু বিষয়ের আলোচনা আগামী বছরের জন্য তুলে রাখার পর শনিবার রাতে ‘কপ২৪’ এই ১৫৬ পৃষ্ঠার নীতিমালায় একমত হয়। এবারের সম্মেলনের প্রেসিডেন্ট মিচেল কুতির্কা বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে বলেন, চুক্তি নিয়ে সুনিদির্ষ্ট ও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে একটি সমঝোতায় পেঁৗছানো সহজ নয়। তবে এই প্যাকেজের (নীতিমালা) মাধ্যমে আপনারা কয়েক হাজার পদক্ষেপ এগিয়ে গেলেন। আপনারা গবির্ত হতে পারেন। সমঝোতায় পেঁৗছানোর সংকেত দিয়ে এ পোলিশ একটি হাতুড়ির আঘাত করার পরপরই বিভিন্ন দেশের মন্ত্রীরা মঞ্চে এসে একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন। তাদের হাসিমুখে ছিল সপ্তাহ কয়েকের ম্যারাথন আলোচনার পর স্বস্তির চিহ্ন। প্যারিসে স্বাক্ষরিত জলবায়ু চুক্তি বাস্তবায়নের এ নীতিমালার সবকিছু নিয়ে সবাই যে সন্তুষ্ট নয়, তাও মানছেন বেশ কয়েকটি দেশের মন্ত্রীরা। তারা বলছেন, এবারের সম্মেলনের ওপর ভিত্তি করেই চুক্তি বাস্তবায়নের কাযর্ক্রম এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে। ‘ইউনিয়ন অব কনসানর্ড সাইয়েন্টিস্ট’র আল্ডেন মেয়ার বলেন, নীতিমালার অনেক কিছুই এখনো বিস্তারিত নয়। মূলত এটি প্যারিস চুক্তিকে শক্ত কিছুর ওপর দঁাড় করানোর একটি ভিত্তিপ্রস্তর। প্রেসিডেন্টদের নিয়ে ভবিষ্যৎ সম্মেলনে এটি যুক্তরাষ্ট্রকে ফের চুক্তিতে ফেরাতেও সহায়ক হতে পারে।’ এর আগে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বাস্তবায়নে সদস্য দেশগুলোকে আরও উদ্যোগী হওয়ার আহŸান জানিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘এখন থেকে আমার পঁাচটি অগ্রাধিকার হচ্ছেÑ উচ্চাকাক্সক্ষা, উচ্চাকাক্সক্ষা, উচ্চাকাক্সক্ষা, উচ্চাকাক্সক্ষা এবং উচ্চাকাক্সক্ষা।