শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রীর পদে ফিরলেন বিক্রমাসিংহে

পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিলেন তিনি

প্রকাশ | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রীর রনিল বিক্রমাসিংহে
প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার কাছে শপথবাক্য পাঠ করে ফের শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন রনিল বিক্রমাসিংহে। রোববার স্থানীয় সময় সকাল সোয়া ১১টার দিকে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। দিনের এই সময়টিকে বিক্রমাসিংহের জন্য ‘সুপ্রসন্ন’ সময় বলে বিবেচনা করেছেন সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীরা। এই নিয়ে পঞ্চমবারের মতো দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিলেন তিনি। এর মধ্যদিয়ে অক্টোবরের শেষ দিকে শুরু হওয়া দেশটির রাজনৈতিক সংকট শেষ হচ্ছে ধারণা সব মহলের। সংবাদসূত্র : রয়টাসর্, বিবিসি, আল-জাজিরা রোববার বিক্রমাসিংহের সাবেক সরকারের মন্ত্রিপরিষদ মুখপাত্র রাজিথা সেনারতেœ এর আগে রয়টাসের্ক বলেছিলেন, আজ (রোববার) এক ‘মঙ্গলজনক’ সময়ে তিনি শপথ গ্রহণ করবেন। প্রেসিডেন্ট দপ্তরের এক কমর্কতার্ও বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন। যা শপথ গ্রহণের মধ্যদিয়ে চ‚ড়ান্ত রূপ লাভ করল। গত ২৬ অক্টোবর বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে দ্ব›দ্ব তৈরি হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহেকে হঠাৎ করেই বরখাস্ত করেছিলেন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা। রোববারই দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিক্রমাসিংহে আবার ফিরে আসছেন বলে এর আগে জানিয়েছিলেন তার দলের এক আইনপ্রণেতা ও শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট দপ্তরের এক কমর্কতার্। বিক্রমাসিংহেকে বরখাস্ত করে প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা তার রাজনৈতিক প্রতিদ্ব›দ্বী মাহিন্দা রাজাপাকসেকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিলেও তাকে (রাজাপাকসে) পদে ধরে রাখতে পারেননি। সিরিসেনার সিদ্ধান্ত বিরোধিতার মুখে পড়ার পর তিনি পালাের্মন্টও ভেঙে দিয়েছিলেন। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোটর্ প্রেসিডেন্টের ওই পদক্ষেপ বেআইনি বলে রায় দেয়। সুপ্রিম কোটের্র রায় ও পালাের্মন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমথর্ন লাভে ব্যথর্ হওয়া রাজাপাকসে শনিবার পদত্যাগ করেন। অপরদিকে, বুধবার পালাের্মন্টে বিক্রমাসিংহের প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রতি আনা আস্থা প্রস্তাব পাস হয়। এ পরিস্থিতিতে বিক্রমাসিংহের প্রধানমন্ত্রিত্ব ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। সিরিসেনা প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহকে বরখাস্ত করে রাজাপাকসেকে নিয়োগ দিলে দেশটিতে রাজনৈতিক সংকট শুরু হয়। প্রেসিডেন্টের এ সিদ্ধান্ত পালাের্মন্টের ভোটে মুখ থুবড়ে পড়লেও সিরিসেনা তা মেনে নেননি। এরপরই পালাের্মন্টের স্পিকার শ্রীলংকায় কাযর্ত কোনো প্রধানমন্ত্রী নেই বলে ঘোষণা করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিক্রমাসিংহের এই ফিরে আসাটা প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার জন্য বিব্রতকর। কেননা, বিক্রমাসিংহেকে বরখাস্ত ও মাহিন্দা রাজাপাকসেকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়ে গত ৯ নভেম্বর পালাের্মন্ট ভেঙে দিয়েছিলেন। গত ৫ জানুয়ারি আগাম সাধারণ নিবার্চনের ঘোষণাও দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা। তবে ১৩ ডিসেম্বর দেশটির সুপ্রিম কোটর্ প্রেসিডেন্টের ওই ঘোষণাকে অসাংবিধানিক বলে রায় দেয়। আদালতের এই রায়ের ফলে শ্রীলংকার সাধারণ নিবার্চন ২০২০ সালের ফেব্রæয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে। ফলে সব মিলিয়ে প্রেসিডেন্টের এ সংক্রান্ত যাবতীয় প্রচেষ্টা ব্যথর্তায় পযর্বসিত হয়। উল্লেখ্য, বিগত কয়েক বছর ধরে দেশ পরিচালনার নানা নীতি নিয়ে প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহের বিরোধ চলছিল। অভিযোগ, সিরিসেনা চীনের কোম্পানিগুলোকে শ্রীলংকায় নানা কাজ পাইয়ে দিতে আগ্রহী ছিলেন। বিক্রমাসিংহের তাতে আপত্তি ছিল।