ইউক্রেনের জাপোরিঝজিয়া পরমাণু স্থাপনার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাশিয়া। দেশটি বলেছে, এই পারমাণবিক বিদু্যৎ কেন্দ্রটি চেরনোবিল বিপর্যয়ের ভাগ্য বরণ করতে পারে। রাশিয়া ও ইউক্রেন কিছুদিন ধরে ইউরোপের এই বৃহত্তম পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালানোর জন্য পরস্পরকে দায়ী করে আসছে। ইউক্রেনের অভিযোগ, পরমাণু কেন্দ্রে যুদ্ধাস্ত্র মজুত করে রেখেছে রাশিয়া। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, পার্স টুডে
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অস্ত্র বিস্তার রোধ ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সিনিয়র কর্মকর্তা ইগোর ভিশনেভেতস্কি বলেছেন, ইউক্রেনের জাপোরিঝজিয়া অঞ্চলে অবস্থিত পরমাণু স্থাপনাটিতে কামানের গোলাবর্ষণ করে যাচ্ছে ইউক্রেনের সেনারা। তিনি বলেন, এভাবে গোলাবর্ষণ অব্যাহত থাকলে স্থাপনাটি ১৯৮৬ সালের চেরনোবিল বিপর্যয়ের ভাগ্য বরণ করতে পারে। অবিলম্বে এই গোলাবর্ষণ বন্ধ করতে কিয়েভের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা আইএইএর প্রতি আহ্বান জানান।
এর দুদিন আগে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছিল, ইউক্রেনের গোলাবর্ষণের কারণে জাপোরিঝজিয়া স্থাপনার কিছু যন্ত্রপাতিতে বিদু্যৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ইউক্রেনের সেনাদের গোলাবর্ষণে স্থাপনাটিতে ছোটখাটো আগুন ধরে গিয়েছিল, যা দ্রম্নত নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, 'নিছক ভাগ্যের কারণে' ওই আগুন একটি বড় ধরনের পারমাণবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেনি।
জাপোরিঝজিয়া বিদু্যৎ কেন্দ্রটি ইউরোপের সর্ববৃহৎ পারমাণবিক স্থাপনা। আর পুরো পৃথিবীর মধ্যে এটি তৃতীয় সর্ববৃহৎ কেন্দ্র। গত ৪ মার্চ স্থাপনাটি দখল করে রুশ সেনারা। এরপর এটি তাদের তত্ত্বাবধানেই চলছে। এই কেন্দ্র থেকে ইউক্রেনে বিদু্যৎ সরবরাহ করা হয়।
জাপোরিঝজিয়া পরমাণু কেন্দ্রের পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ইউক্রেনের সরকারি সংস্থা 'এনারগোয়াটম'। তারা জানিয়েছে, 'শুক্রবার তিনটি হামলা হয়েছে এই এলাকায়। একেবারে চুলিস্নর কাছাকাছি বোমা পড়েছে।' এনারগোয়াটম জানিয়েছে, এভাবে হামলা চললে যেকোনো সময় হাইড্রোজেন চুঁইয়ে বেরোতে শুরু করবে। তেজস্ক্রিয় পদার্থও ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাতে আগুন ধরে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল।
কয়েকদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের কর্মকর্তারা দাবি করছেন, বিদু্যৎ কেন্দ্রকে ঘাঁটি বানিয়ে সেখান থেকে হামলা চালাচ্ছে রুশ সেনারা। কিন্তু বিপদের কথা চিন্তা করে সেখানে পাল্টা হামলা করতে পারছে না ইউক্রেনের সেনারা। তবে রাশিয়া বলছে, ইউক্রেনের সেনারা ওই স্থাপনায় নিয়মিত গোলাবর্ষণ করে যাচ্ছে।