শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রাণ গেছে ৪৪ ফিলিস্তিনির

মিসরের মধ্যস্ততায় গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধবিরতি

যুদ্ধবিরতির ফলে অন্তত কিছুদিন লড়াই বন্ধ থাকবে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো
ম যাযাদি ডেস্ক
  ০৯ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

মিসরের মধ্যস্ততায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে ইসরাইল ও সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদ। টানা তিন দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর রোববার গভীর রাতে উভয়পক্ষ যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয়। তবে এর আগেই প্রাণ হারিয়েছেন ৪৪ জন ফিলিস্তিনি। অবশ্য যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পর গাজা সীমান্তে এক বছরের বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর সংঘর্ষের অবসানের আশা দেখা দিয়েছে। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, এএফপি

গত শুক্রবার ইসরাইল 'ব্রেকিং ডন' নামে একটি 'অপারেশন' শুরু করেছিল। ফিলিস্তিনের বহু অঞ্চলে তারা হামলা চালাতে শুরু করেছিল। যার জেরে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক জিহাদের নেতার মৃতু্য হয়েছে বলে ইসরাইল দাবি করেছে। তার মধ্যে কমান্ডার খালেদ মনসুর এবং তায়সির আল-জাবারিও আছেন। এই দুই ব্যক্তি ইসলামিক জেহাদের গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোর পুরোটা সময়জুড়ে ইসরাইলি বাহিনী ফিলিস্তিনি লক্ষ্যস্থলগুলোতে একের পর এক আক্রমণ চালানোর পর স্থানীয় সময় রোববার রাত সাড়ে ১১টায় (বাংলাদেশ সময় রাত আড়াইটায়) অস্ত্রবিরতি শুরু হলে হামলা বন্ধ হয়। প্রথমে এক বিবৃতিতে যুদ্ধবিরতির কথা ঘোষণা করে ইসলামিক জিহাদ। পরে পৃথক এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করে ইসরাইলও। উভয়পক্ষই যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করার জন্য মিসরকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।

এর আগে গত শুক্রবার থেকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এই ভূখন্ডের নানা লক্ষ্যবস্তুতে হামলা শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। গাজার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টানা তিন দিন ধরে চলা ইসরাইলের এই হামলায় ৪৪ ফিলিস্তিনি নিহত হন। নিহতদের প্রায় অর্ধেকই বেসামরিক ফিলিস্তিনি এবং তাদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। এছাড়া গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, ইসরাইলের আগ্রাসনে তিন শতাধিক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে।

অন্যদিকে, টানা তিন দিনের এই সংঘর্ষের সময় ইরান সমর্থিত সশস্ত্রগোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদের নিক্ষেপ করা রকেটগুলো দক্ষিণ ইসরাইলের বেশিরভাগ অংশকে হুমকির মুখে ফেলে দেয় এবং এতে করে তেল আবিব ও অ্যাশকেলনসহ দক্ষিণাঞ্চলীয় অন্য শহরগুলোর বাসিন্দারা আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে বাধ্য হয়।

এই লড়াইয়ে গাজার হামাসের ভূমিকা সেভাবে ছিল না বলে জানা যাচ্ছে। লড়াই হচ্ছিল মূলত ফিলিস্তিন ইসলামিক জিহাদের সঙ্গে ইসরাইলের। তবে হামাস জানিয়েছে, ঘটনায় অন্তত ৩১১ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে বহু মানুষই গাজা উপত্যকার। এদিকে ইসরাইল জানিয়েছে, হামলার ফলে গাজা এবং ইসরাইলের সীমান্তে যে চেকপোস্ট আছে, তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

এই যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে মিসর সরকার মধ্যস্থতা করেছে। যুদ্ধবিরতির পর ইসলামিক জিহাদের অন্যতম শীর্ষ নেতা মুহাম্মদ আল-হিন্দ এক বিবৃতিতে জানান, মিসরের মধ্যস্থতায় ইসরাইলের সঙ্গে কিছুক্ষণ আগে যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে পৌঁছানো হয়েছে। তবে যুদ্ধবিরতি হলেও ইসরাইলের যেকোনো আগ্রাসনের জবাব দেওয়ার অধিকার ফিলিস্তিনিরা রাখে বলেও জানিয়েছেন সশস্ত্র এই গোষ্ঠীটির অন্যতম শীর্ষ এই নেতা।

যুদ্ধবিরতির ফলে অন্তত কিছুদিন লড়াই বন্ধ থাকবে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সাম্প্রতিক লড়াই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে