খাশোগি হত্যার বিচারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন জাতিসংঘের

সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় দায়মুক্তি পেতে সৌদির প্রহসণমূলক বিচারের আয়োজন এ ঘটনার মূল হোতা সৌদি যুবরাজকে কাঠগড়ায় না তোলায় প্রশ্ন তুলেছে জাতিসংঘসহ আন্তজাির্তক মানবাধিকার সংগঠনগুলো

প্রকাশ | ০৬ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সাংবাদিক জামাল খাশোগি
সৌদি আরবে সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাÐের যে বিচার চলছে, এর স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে এই বিচারের নিরপেক্ষতা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে বলে মনে করে জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশন। আদালতে সৌদি আরবের সরকারি কেঁৗসুলিরা জামাল খাশোগি হত্যার দায়ে পঁাচজনের মৃত্যুদÐ চেয়েছেন। দেশটির রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত বাতার্ সংস্থাগুলো জানিয়েছে, রিয়াদের আদালতে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত শুনানিতে সরকারি কেঁৗসুলি ১১ অভিযুক্তকে ‘যথাযথ শাস্তি’ দেয়া এবং সরাসরি হত্যাকাÐে জড়িত থাকার দায়ে পঁাচজনকে ‘সবোর্চ্চ শাস্তি’ দেয়ার আবেদন জানিয়েছেন। সংবাদসূত্র: রয়টাসর্, আল-জাজিরা এ সম্পকের্ জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি শুক্রবার বলেছেন, তার সংস্থা খাশোগি হত্যাকাÐের ব্যাপারে আন্তজাির্তক মহলের সংশ্লিষ্টতায় একটি নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাচ্ছে। একই সঙ্গে তিনি অভিযুক্তদের জন্য মৃত্যুদÐের আবেদনের বিরোধিতা করেন। ২ অক্টোবর ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে নৃশংস হত্যাকাÐের শিকার হন সাংবাদিক জামাল খাশোগি। খুনের নিদের্শদাতা হিসেবে আঙ্গুল উঠে খোদ সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে। সৌদি আরবের পক্ষ থেকে প্রথমে এই হত্যাকাÐের খবর অস্বীকার করা হয়। পরে আন্তজাির্তক চাপের মুখে হত্যাকাÐের ঘটনা স্বীকার করলেও এর সঙ্গে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সম্পৃক্ততার খবর অস্বীকার করা হয়। ওই ঘটনায় দুনিয়াজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়েন এমবিএস নামে পরিচিত সৌদি যুবরাজ। বতর্মানে ওই হত্যাকাÐে জড়িত থাকার দায়ে একদল সৌদি নিরাপত্তাকমীর্র বিচার চলছে। তুরস্কের মাটিতে খাশোগি খুন হয়েছেন বলে তুকির্ কমর্কতার্রা ঘাতক বাহিনীর সদস্যদের বিচারের জন্য আঙ্কারার হাতে সোপদর্ করার আহŸান জানালেও সৌদি আরবের পক্ষ থেকে সেটা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার জামাল খাশোগি হত্যাকাÐের ঘটনায় গ্রেপ্তার সন্দেহভাজন ১১ জনের মধ্যে পঁাচজনের মৃত্যুদÐ চেয়েছিল সৌদি আরবের সরকারি কেঁৗসুলি। রাজধানী রিয়াদে এই মামলার প্রথম শুনানির দিন আদালতে আসামিদের উপস্থিতিতে এই আবেদন জানান রাষ্ট্রীয় কেঁৗসুলি। এদিকে, তুরস্ক দাবি করে, ঘটনার দিন বিশেষ উড়োজাহাজে করে সৌদি থেকে ১৫ সদস্যের দল কনস্যুলেটে গিয়ে খাশোগিকে হত্যার পর ওইদিনই ফিরে যায়। শুধু তাই নয়, মরদেহ এসিডে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ায় ঘটনার এতদিন পরও খাশোগির মরদেহ পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া এই হত্যাকাÐের বহু প্রমাণ তাদের কাছে থাকার দাবিও করে তুরস্ক। তবে অ্যাটনির্ জেনারেল বলেছেন, তুরস্কের কাছে থাকা তথ্য-প্রমাণ সৌদিকে দেয়ার জন্য দুইবার আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করেছে তারা। তবে তুরস্কের পক্ষ থেকে সাড়া মেলেনি। আদালতে হাজির করা ১১ আসামির নাম প্রকাশ করেনি সৌদি কতৃর্পক্ষ। ফলে, জাতিসংঘসহ আন্তজাির্তক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর কাছে মনে হয়েছে, এটা কেবল ঘটনা ধামাচাপা দিতে ও মূল হোতাকে রক্ষা করতে এক প্রহসনমূলক বিচারের আয়োজন।