শেষটা ভালো হলো না মোদি-ট্রাম্পের

প্রকাশ | ০৭ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
নরেন্দ্র মোদি ও ডোনাল্ড ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের হিন্দুত্ববাদী প্রবাসী সংগঠনগুলো উচ্ছ¡সিত হয়েছিল। উল্লাস প্রকাশ করেছিলেন রাম মাধবের মতো আরএসএস থেকে আসা বিজেপি নেতারাও। মুসলমান বিরোধিতাসহ বিভিন্ন প্রশ্নে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ট্রাম্পের রসায়ন জমে উঠবে- এমনটাই ছিল তাদের প্রত্যাশা। কিন্তু ঘটেছে ঠিক উল্টোটা। মোদি সরকারের মেয়াদের শেষপ্রান্তে এসে দেখা যাচ্ছে, ক্ষমতায় বসার পর থেকে তাচ্ছিল্য এবং বিদ্রæপই প্রধান অস্ত্র থেকেছে ট্রাম্পের মোদি নীতির। সূত্র জানায়, চলতি বছরের প্রজাতন্ত্র দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতে ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মোদি। সেই আমন্ত্রণও ফিরিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। মাকির্ন প্রেসিডেন্টের গ্রীষ্মের অবকাশ কেন্দ্র ডেভিড এ যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন মোদি। সেই ইচ্ছাও পূরণ করার কোনো আগ্রহ দেখায়নি ট্রাম্প প্রশাসন। সংবাদসূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস এখানেই শেষ নয়। গত দু’বছরে একাধিক বার মোদি সম্পকের্ বিদ্রæপাত্মক আচরণ করতে দেখা গেছে ট্রাম্পকে। ক‚টনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বারাক ওবামাও ভারতের মাটিতে দঁাড়িয়ে মোদি জমানার উত্তাপ নিয়ে সরব হয়েছিলেন। রাজনৈতিক আদের্শর দিক দিয়েও তিনি ছিলেন মোদির ভিন্ন মেরুর। তবে তাকে কখনও ব্যক্তিগতভাবে ঠাট্টা তামাশা করতে দেখা যায়নি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে। বরঞ্চ হায়দরাবাদ হাউসে তাকে পাশে বসিয়ে যখন ‘বারাক’ বলে সম্বোধন করেছিলেন মোদি, তখন স্মিত হাসিই দেখা গিয়েছিল প্রাক্তন মাকির্ন প্রেসিডেন্টের মুখে। এর আগে হালের্ ডেভিডসন মোটরবাইকের শুল্ক ছাড় সংক্রান্ত মন্তব্য থেকে শুরু করে মোদির জন্য ভালো পাত্রী খেঁাজা নিয়ে ঠাট্টা অথবা মোদির ইংরেজি বলার ভঙ্গি নকল করে দেখানো-সব ক্ষেত্রেই মোদি সম্পকের্ ট্রাম্পের তাচ্ছিল্য ফুটে উঠেছে। সম্প্রতি আফগানিস্তানে ভারতের লাইব্রেরি বানানোর বিষয়টি নিয়ে তিনি যেভাবে প্রধানমন্ত্রীকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছেন, তাতে প্রতিবাদ জানাতে বাধ্য হয়েছে বিরোধীদলও। ক‚টনীতিকরা বলছেন, মোদির শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পকর্ ভালোভাবেই শুরু হয়েছিল। কিন্তু এই ক’বছরে মিঠে ভাবটা কেটে গিয়ে বেশ খানিকটা তিক্ততা ও হতাশা তৈরি হয়েছে। ট্রাম্প-মোদির রসায়ন ঠিকমতো না জমাটাও এর জন্য দায়ী। এইচ১-বি ভিসা থেকে আফগানিস্তান নীতি- কোনো ক্ষেত্রেই ভারতের অনুরোধকে যে ওয়াশিংটন অগ্রাধিকার দিচ্ছে না, সেটা স্পষ্ট। ইরান থেকে তেল কেনা বা রাশিয়া থেকে অস্ত্র আমদানির ওপরে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সাময়িক ছাড় দেয়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু উঠতে বসতে লাল চোখ দেখিয়ে যাচ্ছে মাকির্ন প্রশাসন। কোনো কৌশলগত বন্ধু রাষ্ট্রের নেতার প্রতি এতটা ব্যক্তিগত বিতৃষ্ণা কাজ করলে দ্বিপাক্ষিক সম্পকর্ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া খুব সহজ নয় বলে মনে করছেন সাউথ বøকের কতার্রা। গত কয়েকদিন আগে আফগানিস্তানে গ্রন্থাগার তৈরির জন্য সাহায্য দেয়া নিয়ে ভারতকে রীতিমতো বিদ্রæপ করেছিলেন ট্রাম্প। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর ভালই জমে, সেই কথা বছরের প্রথম ক্যাবিনেট মিটিংয়ে জানিয়ে হঠাৎ মাকির্ন প্রেসিডেন্ট স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বলে বসেন, মোদী পঁাচ ঘণ্টার কথাবাতার্য় আমায় শুধু বলে গেলেন, উনি আফগানিস্তানে একটা গ্রন্থাগার তৈরি করে দিয়েছেন।