যুক্তরাষ্ট্রকে হুমকি দিয়ে চীনে কিম

হ ওয়াশিংটন-বেইজিং উত্তেজনার মধ্যেই কিমের এই সফর বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে

প্রকাশ | ০৯ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
মাকির্ন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করলে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘বিকল্প ব্যবস্থা’র হুমকি দিয়ে সোমবার বিকালে সস্ত্রীক চারদিনের চীন সফরে গেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। এ সময় তাদের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার ঊধ্বর্তন কমর্কতার্রাও ছিলেন। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর আমন্ত্রণে এ সফরে পিয়ংইয়ংয়ে লাল গালিচায় অভ্যথর্না দেয়া হয় উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম ও তার স্ত্রী রি সোল জিউকে Ñএপি/আউটলুক ইনডিয়া
মাকির্ন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করলে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘বিকল্প ব্যবস্থা’র হুমকি দিয়ে চীন সফরে গেলেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। চার দিনের সফরে সোমবার বিকালে সস্ত্রীক চীনের উদ্দেশে যাত্রা করেন তিনি। এ সময় তাদের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার ঊধ্বর্তন কমর্কতার্রাও ছিলেন। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে তার এ সফর। উভয় দেশের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা গেছে। সংবাদসূত্র : আল-জাজিরা, বিবিসি নিউজ এবারের সফরে চতুথর্বারের মতো চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন উত্তর কোরিয়ার নেতা। এর আগে ইংরেজি নতুন বছরের বাতার্য় উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে মাকির্ন নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকলে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন কিম জং উন। তিনি বলেন, পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের ব্যাপারে তার দেশ অঙ্গীকারবদ্ধ। তবে মাকির্ন নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকলে তার হাতে বিকল্প পথ অনুসন্ধান ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকবে না। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে কিম জং উনের এ বক্তব্য সম্প্রচার করা হয়। বক্তব্যে কিম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে ইতিবাচক পদক্ষেপ এলে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত হবে। উল্লেখ্য, উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে বড় অথৈর্নতিক ও ক‚টনৈতিক সহযোগী চীন। গত বছর থেকে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও সম্পকোর্ন্নয়ন হয়েছে তাদের। গত জুনে সিঙ্গাপুরে মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উন। সেখানে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের ওপর জোর দেওয়া হয়। তবে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে চীনের বাণিজ্যিক সম্পকর্ নিয়ে অস্বস্তি রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিযোগ, উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে চীন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। তার ভাষায়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে চীন হয়তো উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সমঝোতাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করার ক্ষেত্রে দেশটি প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে বেইজিং। মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্ভাব্য দ্বিতীয় শীষর্ বৈঠকের মধ্যস্থতার মধ্যেই উত্তরের শীষর্ নেতার এ অঘোষিত বেইজিং সফরে আন্তজাির্তক মহলেরও কড়া নজর রয়েছে। গত বছরও কিম যতবার চীনে গেছেন, কোনোবারই তার সফরের বিষয়টি আগে থেকে জানানো হয়নি। হয় চীনে নামার পর কিংবা উত্তর কোরিয়ায় ফিরে যাওয়ার পর দুই দেশ কিমের সফরের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছে। সোমবার উত্তরের নেতা সশস্ত্র-সুসজ্জিত ব্যক্তিগত ট্রেনে সস্ত্রীক চড়ে বসার পর থেকেই তার চীন সফর নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়। মঙ্গলবার কিমের ৩৫তম জন্মদিন বলে দক্ষিণ কোরিয়ার বেশ কিছু গণমাধ্যম জানালেও পিয়ংইয়ং কখনোই তার জন্মতারিখ বা বয়স নিশ্চিত করেনি। চীন উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূণর্ মিত্র। দেশটির সঙ্গে পিয়ংইয়ংয়ের বাণিজ্য ও সহযোগিতার সম্পকর্ প্রবল। দায়িত্ব নেয়ার প্রথম ছয় বছরে একবারও কিমের চীন সফরের কথা শোনা যায়নি। যদিও গেল বছরেই তিনি তিনবার বেইজিং গিয়েছিলেন। গত বছরের জুনে সিঙ্গাপুরে ট্রাম্পের সঙ্গে ঐতিহাসিক বৈঠকের আগেও কিম চীন সফরে গিয়ে শির সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন। এবারের সফরে উত্তরের শীষর্ নেতা চীনা কমিউনিস্ট পাটির্র (সিপিসি) সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পকর্ এবং কোরীয় উপদ্বীপের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের অগ্রগতি ও কৌশল প্রসঙ্গে কথা বলবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিমের চীন সফর তার সঙ্গে ট্রাম্পের দ্বিতীয় বৈঠকের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলেছে। চলতি সপ্তাহে মাকির্ন প্রেসিডেন্টও দুই দেশের দ্বিতীয় শীষর্ বৈঠকের স্থান শিগগিরই ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছিলেন। রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনে ট্রাম্প জানান, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ভালো সংলাপ চলছে। পিয়ংইয়ংয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকছে বলেও ধারণা দিয়েছেন তিনি।