নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে উত্তাল ভারতের উত্তর-পূবার্ঞ্চল

হ এই ইস্যুতে শুধু জোট জটিলতাই নয়, ভাঙছে বিজেপির ঘরও হ সামনেই ভারতের লোকসভা নিবার্চন তাই পরিস্থিতি থেকে ফায়দা নিতে মাঠে নেমেছে কংগ্রেসও।

প্রকাশ | ১০ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
অমুসলিম শরণাথীের্দর নাগরিকত্ব দেয়ার জন্য মঙ্গলবার ভারতের পালাের্মন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় একটি বিল পাস হওয়ার প্রতিবাদে আসামে বিক্ষোভ হরতাল শুরু হয়েছে। ত্রিপুরাও উত্তেজনায় টগবগ করছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সাময়িক বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। Ñআউটলুক ইনডিয়া
বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে ভারতে চলে আসা অমুসলিম শরণাথীের্দর নাগরিকত্ব দেয়ার জন্য মঙ্গলবার ভারতের পালাের্মন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় একটি বিল পাস হওয়ার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশটির উত্তর-পূবার্ঞ্চল। আসামের পাশাপাশি ত্রিপুরাও উত্তেজনায় টগবগ করছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সাময়িক বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। সংবাদসূত্র: এনডিটিবি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, বিলটির বিরোধিতায় পুরো উত্তর-পূবর্ ভারতে গোলমাল শুরু হয়েছে। আসামে শুরু হয়েছে তীব্র আন্দোলন। হরতাল ও প্রতিবাদ সমাবেশ পালিত হয় রাজ্যজুড়ে। বিভিন্ন জায়গায় হরতাল সমথর্কদের সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীদের সংঘষর্ও হয়েছে। বিজেপির সঙ্গ ছাড়ারও হিড়িক লেগেছে। আসামের আঞ্চলিক দল অসম গণপরিষদের পর মেঘালয়ের এনপিপিও বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছে। পরিস্থিতি থেকে ফায়দা নিতে মাঠে নেমে পড়েছে কংগ্রেস। সামনেই ভারতের লোকসভা নিবার্চন। শুধু জোট-জটিলতাই নয়, ভাঙছে বিজেপির ঘরও। দলের প্রদেশ মুখপাত্র মেহেদি আলম বরা মঙ্গলবার বিজেপি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তার সাফ কথা, রাজ্যবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করে বিজেপি করা সম্ভব নয়। বুধবার নাগরিকত্ব বিলটি রাজ্যসভায় পাস হয়ে গেলে যেসব অমুসলিম ২০১৪ সাল পযর্ন্ত মূলত আসাম এবং উত্তর-পূবর্ ভারতের রাজ্যগুলিতে চলে এসেছেন, তারা ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকারী হবেন। ক্ষমতাসীন বিজেপি এই বিলটি পেশ করলে পালাের্মন্টে বিরোধীদলগুলো যেমন প্রবল বিরোধিতা করেছে, তেমনই আসামসহ উত্তর-পূবর্ ভারতে ১২ ঘণ্টার বন্ধ পালন করেছে বিজেপি বিরোধীরা। লোকসভায় সরকার যে বিলটি পাস করিযেছে, সেটি আসলে ২০১৬ সালেও একবার পেশ করা হয়েছিল। তখনো তীব্র আপত্তির কারণে একটি যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠন করা হয়, যারা নানা রাজ্যে ঘুরে বিভিন্ন স্টেক-হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে। কিন্তু শেষপযর্ন্ত সংসদীয় কমিটিতে থাকা বিরোধীদলীয় সদস্যদের বেশিরভাগ সাজেশন না মেনেই বিলটি পাস করানো হলো। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং মঙ্গলবার সংসদে যা বলেছেন বিলটি সম্বন্ধে, তা হলো: পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে সেসব দেশের হিন্দু, জৈন, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান যারা ২০১৪ সাল পযর্ন্ত ভারতে চলে এসেছেন, সেই দেশ থেকে নিযার্তনের বলি হয়ে, তাদের ভারতের নাগরিকত্ব দেয়া হবে। তবে চলতি আইন অনুযায়ী ১২ বছর ভারতে বসবাস করার পরে নাগরিকত্ব পাওয়ার যে নিয়ম ছিল, সেটাও কমিয়ে সাত বছর করা হয়েছে। প্রথম থেকেই আসামের মানুষ এবং অসমীয়া জাতীয়তাবাদী দলগুলো এই বিলের বিরোধিতা করছে। এখন কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, এমনকি বিজেপির শরিক দল শিবসেনাও এই বিলের বিরোধিতা করেছে। অসমীয়াদের বক্তব্য হলো: ১৯৮৫ সালের আসাম চুক্তির সম্পূণর্ বিপরীত অবস্থান এই নাগরিকত্ব বিলের। চুক্তি অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২৪ মাচের্র পরে যে কেউ আসামে এসেছেন, তাকে বিদেশি বলে চিহ্নিত করা হবে, যে কারণে কয়েক বছর ধরে ওই রাজ্যে নাগরিক পঞ্জী তৈরির কাজ চলছে।