নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে আজ আসামে আবার বন্ধ

প্রকাশ | ১১ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
নাগরিকত্ব বিল প্রত্যাহারের দাবিতে বুধবার আসামের গুহাটিতে বিক্ষোভ হয়
ভারতীয় নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে আসামে আজ শুক্রবার আবার বন্ধ ডেকেছে নৃতাত্তি¡ক সংগঠনগুলোর যৌথ মঞ্চ। তারা অবিলম্বে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, ২০১৬ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। আসামে হিন্দু শরণাথীের্দর নাগরিকত্ব দেয়ার উদ্যোগের বিরোধিতা করে আন্দোলন চলছেই। গত মঙ্গলবার এ নিয়ে বন্ধ হয়েছে। এরপর একই ইস্যুতে কাল বন্ধ ডাকা হলো। আসামের বিভিন্ন এলাকায় অবরোধ, বিক্ষোভ, অগ্নিসংযোগ, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘষের্র ঘটনাও ঘটছে। গত মঙ্গলবার ভারতীয় জাতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় প্রবল বিরোধিতার মধ্যে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল কণ্ঠভোটে পাস হয়। ভারতীয় জনতা পাটির্ (বিজেপি) বাদে প্রায় সব দলই বিলটির বিরোধিতা করে। সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বুধবার বিলটি পাস হওয়ার কথা ছিল। এ জন্য এক দিন সভার মেয়াদও বাড়ানো হয়। কিন্তু দিনভর আলোচনার পর আথির্কভাবে দুবর্লদের ১০ শতাংশ সংরক্ষণের জন্য সংবিধান সংশোধনী বিল পাস হয়। নাগরিকত্ব বিলটি গৃহীত হয়নি। বিজেপি বলছে, ৩১ জানুয়ারি বাজেট শুরু হলে সরকার বিলটি পাস করার জন্য উদ্যোগ নেবে। রাজ্যসভায় বিজেপি এমনিতেই সংখ্যালঘু। শরিকেরাও বিলটির বিরোধী। তাই পাস হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ২৪৫ সদস্যের রাজ্যসভায় বিজেপির নিজস্ব সদস্যের সংখ্যা ৭৩। তবে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএর এখনো ৮৮ জন সদস্য আছেন রাজ্যসভায়। কংগ্রেসের নিজের সদস্য ৫০ হলেও ইউপিএর সদস্যসংখ্যা ৫৭। এর সঙ্গে বিজেপিবিরোধী তৃণমূল, সিপিএম, আরজেডিসহ অন্যান্য দল যোগ করলে বিজেপি শিবিরের ৮৮-এর বদলে বিরোধী শিবিরের এই মুহূতের্ সদস্যসংখ্যা ১৫৬। তাই বিলটির ভবিষ্যৎ অন্ধকার। তবু আসাম থেকে শুরু করে গোটা উত্তর-পূবার্ঞ্চল অশান্ত। সহিংস ঘটনাও ঘটছে। বিজেপির জোট শরিক অসম গণপরিষদের তিন মন্ত্রী রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়ে গতকালই সারা আসাম ছাত্র সংস্থা বা আসু নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। আসুই আসাম আন্দোলনের মূল হোতা। রাজ্যসভার বিবেচনাধীন নাগরিকত্ব সংশোধন বিলটিতে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে শরণাথীর্ হয়ে আসা অমুসলিমদের শতর্ সাপেক্ষে ভারতের নাগরিকত্ব দেয়ার বন্দোবস্ত রয়েছে। তাই এ নিয়ে বিরোধিতা শুরু হয়েছে। আসামের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসও বয়কট করেছেন শিক্ষাথীর্রা। বিক্ষোভের অঁাচ পৌঁছেছে দিল্লি, বেঙ্গালুরু প্রভৃতি শহরেও। বিলের প্রতিবাদে মঙ্গলবার ১১ ঘণ্টার বনধের ডাক দিয়েছিল আসু এবং নেসো। আসামে এ বনধে সবার্ত্মক সাড়া মেলে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত দ্রব্য পেট্রোপণ্য, কয়লা, বনজ দ্রব্য এবং চুণাপাথর রাজ্যের বাইরে নিয়ে যেতে দেওয়া হবে না। সোমবারই এই বিলের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন অসম সরকারের সঙ্গে জোট ভেঙে বেরিয়ে গেছে অসম গণ পরিষদ। তারাও এই বনধ সমথর্ন করেছে। বিজেপি-র মুখপাত্র মেহেদি আলম বোরা পদত্যাগ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই বিল অসমিয়া সমাজের পক্ষে ক্ষতিকর হবে এবং আসাম চুক্তিকে খারিজ করে দেবে। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা অগপ নেতা প্রফুল্ল কুমার মহান্ত বিজেপি সরকারের পদত্যাগ দাবি করে নতুন করে নিবার্চন চেয়েছেন। রাজ্যের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শমার্ অবশ্য বলেছেন এ বিল সমথর্ন না করে ঐতিহাসিক ভুল করল অসম গণ পরিষদ।