আটক ২৪৪ জন

ফের বিক্ষোভে উত্তাল ফ্রান্স দফায় দফায় সংঘষর্

হ জ্বালানি পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি মূল ইস্যু হলেও পরে অন্যান্য ইস্যুতেও আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে হ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বিতকের্র আয়োজন করেছে ম্যাখেঁা সরকার

প্রকাশ | ১৪ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
জ্বালানি পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ফের বিক্ষোভে কঁাপছে ফ্রান্স। শনিবার সরকারি ছুটির দিনে রাজধানী প্যারিসসহ বিভিন্ন শহরে হাজারো ‘ইয়েলো ভেস্ট’ আন্দোলনকারী রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘষের্র ঘটনা ঘটে। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ও কঁাদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ Ñএএফপি
ফের বিক্ষোভে উত্তাল ফ্রান্স। শনিবার রাজধানী প্যারিসসহ বিভিন্ন শহরে হাজারো ‘ইয়েলো ভেস্ট’ আন্দোলনকারী রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন। এ নিয়ে টানা ৯ম সরকারি ছুটির দিনে বিক্ষোভে নামলেন তারা। এদিন বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘষের্র ঘটনা ঘটে। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ও কঁাদানে গ্যাসের শেলও নিক্ষেপ করে পুলিশ। এছাড়াও অন্তত ২৪৪ জন ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলনকারীকে আটক করেছে পুলিশ। শুধু রাজধানী প্যারিসেই আটক করা হয়েছে ১৫৬ জনকে। সংবাদসূত্র: এএফপি জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর কারণে গত ১৭ নভেম্বর থেকে ব্যাপক গণআন্দোলনের মুখে পড়েছে ফ্রান্সের এমানুয়েল মাখেঁার সরকার। ‘ইয়েলো ভেস্ট’ আন্দোলনের চাপে পড়ে গত ১০ ডিসেম্বর জ্বালানি তেলের কর বৃদ্ধি বাতিল এবং অবসর ভাতা ও ওভারটাইমের আয়ের ওপর থেকে কর প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। তবে এরপরও থেমে নেই আন্দোলন। পুরোদমে ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। প্রথমে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি মূল ইস্যু হলেও পরে জীবনযাত্রার খরচ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন বিষয়ের প্রতিবাদে এ আন্দোলন চলতে থাকে। সারা দেশে প্রায় ৮৪ হাজার মানুষ এদিন রাস্তায় নামেন। শুধু দেশটির রাজধানী প্যারিসের রাস্তায় নামেন ৮ হাজার মানুষ। দেশজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ৮০ হাজার সদস্য। ফ্রান্সের মোটরযান আইন অনুযায়ী, বেশি আলো প্রতিফলিত করে এমন এক ধরনের বিশেষ নিরাপত্তামূলক জ্যাকেট গাড়ির চালকদের গাড়িতে রাখতে হয়। এর রং সবুজাভ হলুদ (ইয়েলো)। গত নভেম্বরে আন্দোলনকারীরা এই জ্যাকেট (ভেস্ট) পরে বিক্ষোভের সূচনা করেছিল বলে আন্দোলনটি পরিচিতি পায় ‘ইয়েলো ভেস্ট’ আন্দোলন নামে। জ্বালানির কর বৃদ্ধির প্রতিবাদে সড়কগুলোর সংযোগস্থল ও গোলচত্বরগুলোতে ‘ইয়েলো ভেস্ট’ আন্দোলন শুরু হয়েছিল, কিন্তু দ্রæতই এটি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখেঁার অথৈর্নতিক নীতিবিরোধী একটি বৃহত্তর আন্দোলনের রূপ নেয়। আগের বিক্ষোভের দিনগুলোতে প্যারিসের রাস্তায় সংঘষর্, লুটপাট ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটায় এদিন কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। প্রতিবাদকারীদের নিয়ন্ত্রণ করতে হাজার হাজার পুলিশ কমর্কতাের্ক রাজধানীর রাস্তায় মোতায়েন করা হয়েছিল। দাঙ্গা পুলিশ নগর কেন্দ্রের কয়েকটি এলাকা বন্ধ করে দিয়েছিল। দক্ষিণ ফ্রান্সের বোদোর্ ও তুলুজ শহরে কয়েক হাজার প্রতিবাদকারী রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে অংশ নিয়েছে। পূবার্ঞ্চলীয় শহর স্ট্রাসবুগের্ও কয়েক হাজার প্রতিবাদকারী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। অপরদিকে মধ্যাঞ্চলীয় শহর বোসের্ ছয় হাজারেরও বেশি লোক রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। কিছুদিন আগে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের চালানো এক জরিপে দেখা গেছে, ফ্রান্সের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাখেঁা ও তঁার সরকারের ওপর অখুশি। বেশির ভাগ লোকজন পরিবারের আয় ব্যাপক হারে বাড়াতে সরকারের আরও পদক্ষেপ চায়। জরিপে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের মাত্র ২৫ শতাংশ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। উক্ত জরিপে অংশ নিয়েছিলেন এক হাজার চারজন। ২০১৮ সালের এপ্রিলেও একটি জরিপ চালায় তারা। ওই সময়ে ৫৯ শতাংশ সরকারের ব্যাপারে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। আর এবার সরকারের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশের সংখ্যা বেড়ে ৭৫ শতাংশে দঁাড়িয়েছে। জরিপে অংশগ্রহণকারী ৫৪ শতাংশ মানুষ ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নেয়াকে সবোর্চ্চ অগ্রাধিকার দিতে বলেছেন। এর আগের জরিপগুলোতে বেকারত্বের বিষয়টি দীঘির্দন পযর্ন্ত সবোর্চ্চ উদ্বেগের জায়গায় ছিল।