নড়বড়ে নরেন্দ্র মোদির গদি!

প্রকাশ | ১৫ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
দিন গোনা শুরু হয়ে গেছে। লোকসভা নিবার্চনকে কেন্দ্র করে ভারতের রাজনীতি এখন সরগরম। একদিকে বিজেপিবিরোধী নতুন নতুন জোট হচ্ছে, অন্যদিকে বিরোধীদের লক্ষ্য করে তীক্ষè বাক্যবাণ ছুড়ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে শুধু কথায় আটকে থাকতে চাইছেন না গুজরাটের এই সাবেক মুখ্যমন্ত্রী। ভোট বাগাতে সংবিধান অমান্য করতেও পিছপা হচ্ছেন না তিনি। আগামী মে মাসে অনুষ্ঠিত হবে ভারতের লোকসভা নিবার্চন। এর আগে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নিবার্চনে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে মোদির দল ভারতীয় জনতা পাটির্ (বিজেপি)। হাতছাড়া হয়েছে গোবলয়ের তিন বড় রাজ্য মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় ও রাজস্থান। অন্যদিকে হাসি ফুটেছে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর মুখে। ২০১৩ সালের বিধানসভা নিবার্চনে এই তিনটি রাজ্যেই কংগ্রেসকে গোহারা হারিয়েছিল বিজেপি। পরে ২০১৪ সালে কেন্দ্রেও সরকার গঠন করেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। ওই হিসাব মাথায় নিলে বলাই যায় যে ২০১৯ সালের লোকসভা নিবার্চনের আগে বেকায়দায় পড়েছে বিজেপি। কিন্তু ব্যক্তিগত ক্যারিশমায় বিশ্বাসী নরেন্দ্র মোদি অত সহজে ছেড়ে দেয়ার পাত্র নন। নিবার্চনের আগ দিয়ে তাই বিভিন্ন ‘লোকপ্রিয়’ সরকারি সিদ্ধান্ত নেয়া শুরু হয়েছে। তাতে আদালতের আদেশ বা সংবিধান চুলোয় যাক, ক্ষতি নেই! কিছুদিন আগেই মোদি সরকার দরিদ্রদের জন্য নতুন কোটা চালু করে আইন পাস করেছে। ফলে সংবিধান ও সবোর্চ্চ আদালতের পযের্বক্ষণ অমান্য করেই চালু হয়ে গেছে দরিদ্রদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের আইন। এই কোটা উচ্চবণের্র হিন্দুদের বেশি সুবিধা দেবে। ভারতের সংবিধানে বলা ছিল কোনো অবস্থাতেই কোটা ৫০ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। কিন্তু মোদির নতুন আইনের কারণে, সেটি হয়ে যাচ্ছে প্রায় ৬০ শতাংশ। এ তো গেল আইনের কথা। ভোটারদের ‘অবাস্তব’ নতুন সুবিধার প্রলোভন দেখানোর পাশাপাশি বিভিন্ন স্বাধীন প্রতিষ্ঠানেও নাক গলিয়ে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি। সমালোচকেরা বলছেন, বিজেপি সাংবিধানিক ও স্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর কাযর্ক্রমে নজিরবিহীন হস্তক্ষেপ করছে। খেলার ‘রেফারি’দের বশে রাখার চেষ্টা করছেন মোদি। গত সপ্তাহের শেষে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন কমিটির সিদ্ধান্তে অপসারিত হয়েছেন তদন্ত সংস্থা সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (সিবিআই) প্রধান অলোক ভামার্। আদালতের রায়ে পদ ফিরে পেয়েছিলেন অলোক। কিন্তু টিকতে পারলেন না ৪৮ ঘণ্টাও। আদালত বলেছিলেন, অলোক ভামাের্ক ছুটিতে পাঠানোর সরকারি সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল না। এতেই মনে হয় ‘ইগো’তে লেগে যায় প্রধানমন্ত্রী মোদির! আদালত বলেছিলেন, সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিটির (সিভিসি) সুপারিশে অলোককে সরানো যাবে না। তাই নিয়মের মধ্যে থেকেই প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন কমিটিতে অলোককে সরানোর সিদ্ধান্ত হয়। একই অবস্থায় কিছুদিন আগে পড়েছিলেন ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভনর্র উরজিত প্যাটেল। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মোদির সঙ্গে দ্ব›েদ্বর কারণেই মেয়াদ শেষের আগেই চাকরি ছেড়েছেন উরজিত।