শাটডাউনের ২৪তম দিন

দুই পক্ষই অনড়, দিশাহীন যুক্তরাষ্ট্রের অচলাবস্থা

প্রকাশ | ১৬ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের চলমান অচলাবস্থা চতুথর্ সপ্তাহে গড়ালেও কোনো পক্ষই ছাড় না দেয়ায় শিগগিরই সংকট নিরসনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নিমাের্ণর অথার্য়নকে ঘিরে ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতবিরোধে ডিসেম্বরের ২২ তারিখ থেকে এ অচলাবস্থা শুরু হয়। নিবার্চনে জয়ী হওয়ার আগ থেকেই ট্রাম্প সীমান্তে দেয়াল নিমাের্ণর প্রতিশ্রæতি দিয়ে আসছিলেন। ডেমোক্র্যাটরা বলছে, জনগণের করের টাকায় তারা প্রেসিডেন্টের প্রতিশ্রæতি পূরণের অযৌক্তিক দাবিতে অনুমোদন দেবে না। দুই পক্ষের অনড় অবস্থানের কারণে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও বিভাগের লাখ লাখ কমীর্ টানা ২৪ দিন ধরে বেতনহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন বলে জানা গেছে। সংবাদসূত্র: রয়টাসর্ প্রভাবশালী রিপাবলিকান লিন্ডসে গ্রাহাম চলতি সপ্তাহেই অচলাবস্থার কারণে বন্ধ সরকারি সংস্থা ও বিভাগগুলো সাময়িক সময়ের জন্য খোলার ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। সীমান্তে নিরাপত্তা নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে মধ্যস্থতাকে উৎসাহিত করতে তিনি এ পদক্ষেপ নিয়েছিলেন বলে প্রকাশ। কিন্তু সোমবার ট্রাম্প গ্রাহামের এ অনুরোধও প্রত্যাখ্যান করেন। মেক্সিকো সীমান্তে একটি নিরাপত্তা দেয়াল নিমাের্ণর লক্ষ্যে চলতি বছর কংগ্রেসের কাছে ৫৭০ কোটি ডলার চেয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতাদের সম্মতি ছাড়া কংগ্রেস এ বরাদ্দ অনুমোদন করতে পারবে না। ট্রাম্প বলেছেন, চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ না পাওয়া পযর্ন্ত তিনি কোনো ধরনের বাজেট বিলে স্বাক্ষর করবেন না। ব্যয় নিবাের্হর বাজেট অনুমোদিত না হওয়ায় তহবিল ঘাটতিতে ২২ ডিসেম্বর থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের এক-চতুথার্ংশ বিভাগ ও সংস্থার কাযর্ক্রম বন্ধ হয়ে যায়। কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাটশাসিত প্রতিনিধি পরিষদ দেয়াল বাদ দিয়ে সীমান্ত সুরক্ষায় ড্রোনসহ নানা ধরনের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি মোতায়েনে ১৩০ কোটি ডলার দিতে রাজি হলেও তাতে মন গলেনি ট্রাম্পের। ডেমোক্র্যাটরা দেয়াল নিমাের্ণর অথর্ দিতে রাজি না হওয়ায় হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের ডেমোক্র্যাট স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ও সিনেটের ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমারের সঙ্গে এক বৈঠক থেকেও তিনি ‘ওয়াক আউট’ করেছেন। সোমবার নিউ অরলিয়ন্সে আমেরিকান ফামর্ ব্যুরোর সম্মেলনে দেয়া বক্তৃতাতেও ট্রাম্প ফের কংগ্রেসের কাছে দেয়াল নিমাের্ণর জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ চেয়েছেন। বলেছেন, অবৈধ উপায়ে সীমান্ত পাড়ি দেয়া ঠেকাতে দেয়াল যা করতে পারবে, ড্রোন, সেন্সরস ও অন্যান্য টেকনোলজি তার অনেক কিছুই পারবে না। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের ইতিহাসের সবচেয়ে দীঘর্ এ অচলাবস্থা ট্রাম্পের সমথর্ক হিসেবে খ্যাত কৃষকদের ওপরও বড়সড় আঘাত হেনেছে। কৃষিঋণ ও সহায়তার আবেদনে সাড়া মিলছে না, পাওয়া যাচ্ছে না কৃষি ও শস্য সম্পকির্ত তথ্যের সেবাও। আপনি যদি কৃষকদের সাহায্য করতে চান, তাহলে সরকারের কাযর্ক্রম পুনরায় চালু করুন’, টুইটারে ট্রাম্পের উদ্দেশে এমনটাই বলেছেন সিনেটের সংখ্যালঘু ডেমোক্র্যাট অংশের নেতা চাক শুমার। অচলাবস্থার কারণে বেতন ছাড়া কাজ করে যাওয়া বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কমীের্দর কাজে আসার হার দিন দিন কমে আসছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, পরিবহন নিরাপত্তা প্রশাসনের (টিএসএ) বেশিরভাগ কমীর্ কাজে হাজিরা দিলেও তহবিল ঘাটতি থাকায় তাদের বেতন দেয়া যাচ্ছে না। টিএসএ-র মুখপাত্র মাইকেল বিলেলো বলেছেন, দেশব্যাপী তাদের প্রতিষ্ঠানের কমীের্দর অনিধাির্রত অনুপস্থিতির হার ৭ দশমিক ৬ শতাংশে পেঁৗছেছে, বছরখানেক আগে যা ছিল ৩ দশমিক ২ শতাংশ। অনেক নিরাপত্তা কমর্কতার্ই বোধগম্য কারণে অন্যান্য কাজের খেঁাজ করছেন, বলেছেন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের চেয়ারম্যান বেনি থম্পসন। সীমান্তে দেয়াল নিমাের্ণর অথের্র জন্য কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে ‘জরুরি অবস্থা’ জারি এবং সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কপের্সর তহবিলের অথর্ দেয়াল নিমাের্ণর কাজে স্থানান্তর করা যায় কি না, গত সপ্তাহে মাকির্ন প্রশাসন তাও খতিয়ে দেখছিল বলে জানা গেছে। তবে তিনি শিগগিরই জরুরি অবস্থা জারির মতো পদক্ষেপ নিতে চান না বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।