ন্যাটো সম্মেলন শেষ

আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আফগান যুদ্ধ

জ্জ অবসানে তৎপর হচ্ছে জোট জ্জ যুক্তরাষ্ট্রের উদারতার সুযোগ নিচ্ছে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো : ট্রাম্প

প্রকাশ | ১৩ জুলাই ২০১৮, ০০:০০ | আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৮, ০০:০৫

যাযাদি ডেস্ক
উল্টো দিকে তাকিয়ে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
ন্যাটো সম্মেলনে মিত্র দেশগুলোকে সামরিক ব্যয় বাড়ানোর মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তাগিদ দেয়ার পর দ্বিতীয় তথা শেষ দিনের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল আফগান সংকট। বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের আগেই ন্যাটো মহাসচিব জেন্স স্টোলটেনবাগর্ থেকে শুরু করে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে পযর্ন্ত কথা বলেছেন দেশটির পরিস্থিতি নিয়ে। দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় দীঘের্ময়াদি আফগান যুদ্ধ নিরসনের ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে। তবে আলোচনায় কী সিদ্ধান্ত হয়েছে, তার এই রিপোটর্ লেখা পযর্ন্ত জানা যায়নি। তবে এটুকু জানা গেছে, যুদ্ধ অবসানে তৎপর হচ্ছে সামরিক এই জোট। সংবাদসূত্র : বিবিসি, ট্রিবিউন, রয়টাসর্ যুক্তরাষ্ট্রে নাইন-ইলেভেন হামলার পর ২০০১ সালে সন্ত্রাসবিরোধী নতুন যুদ্ধের নামে আফগানিস্তানে শুরু হয় মাকির্ন নেতৃত্বাধীন জোটের আগ্রাসন। তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। আল-কায়েদাকে সমথর্ন ও আশ্রয় দেয়ার অভিযোগে চালানো আগ্রাসনে তালেবান ক্ষমতা থেকে উৎখাত হলে মাকির্ন সমথের্ন সেখানে নতুন সরকার গঠিত হয়। কয়েক দফা সাধারণ নিবার্চনে শাসকের পরিবতর্ন হলেও ১৭ বছরেও শেষ হয়নি কথিত ‘সন্ত্রাসবাদবিরোধী’ যুদ্ধ। ১৭ বছরের আফগান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রকে জড়িত রাখতে গত বছর সম্মত হন ট্রাম্প। মাকির্ন কমর্কতার্রা বলছেন, এক বছরের মাথায় এখন এ ব্যাপারে কৌশলগত পযাের্লাচনার পরিকল্পনা করছে ওয়াশিংটন। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে আফগান বাহিনীর সহায়তায় দেশটিতে অতিরিক্ত আরও তিন হাজার সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে আগেই মোতায়েন রয়েছে ১২ হাজার মাকির্ন সেনা। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে সম্মেলনের প্রথম দিন বুধবার নিশ্চিত করেন, তার দেশ আফগানিস্তানে আরও ৪৪০ সেনা মোতায়েন করবে। দৃশ্যত, যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানকে আরও সহযোগিতা দিতে ট্রাম্পের অনুরোধে সাড়া দিয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাজ্য। এর ফলে আফগানিস্তানে বতর্মানে থাকা ব্রিটিশ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বেড়ে এক হাজার ১০০-তে উন্নীত হবে। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী গেভিন উইলিয়ামসন জানিয়েছেন, নতুন করে মোতায়েন হতে যাওয়া ৪৪০ জন যুক্তরাজ্যের ওয়েলস গাডর্ রেজিমেন্টের সদস্য। তিনি বলেন, দুনিয়ার যে কোনো প্রান্ত থেকে ডাক আসুক না কেন, যুক্তরাজ্য তার মিত্রদের সহায়তায় অগ্রভাগে থাকবে। আর সম্মেলনের প্রথমদিনে ন্যাটো মহাসচিব স্টোলটেনবাগর্ আশা প্রকাশ করেন, পশ্চিমা এই সামরিক জোট ২০২৪ সাল পযর্ন্ত আফগান নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর জন্য তহবিল যোগাতে সম্মত হবে। সম্মেলনের প্রথমদিনে ২৯টি দেশের এই জোটের সদস্য দেশগুলোকে নিজেদের জিডিপির (গ্রস ডমেস্টিক প্রোডাক্ট) চার শতাংশ পযর্ন্ত ব্যয় বাড়াতে বলেছেন মাকির্ন প্রেসিডেন্ট। তবে জোটের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে সদস্য দেশগুলোর জিডিপির দুই শতাংশ ব্যয় বাড়ানো। দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় ইউরোপের দুই দেশ জজির্য়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে ন্যাটোর সম্পকর্ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দুই দেশই পশ্চিমা এ সামরিক জোটে যোগ দিতে আগ্রহী। তবে এ ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি। এর মূল কারণ দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার ভ‚খÐগত জটিলতা। ন্যাটোর নিয়ম অনুযায়ী, ভ‚খÐগত সংঘাত রয়েছে এমন দেশ সামরিক জোটটিতে যোগ দিতে পারে না। তবে এ অঞ্চলের আরেক দেশ মেসিডোনিয়া বুধবার জোটে যোগদান সম্পকির্ত আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ পেয়েছে। উল্টো দিকে তাকিয়ে ট্রাম্প! যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নিবাির্চত হওয়ার আগে থেকেই একের পর বিতকের্র জন্ম দিচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে বিবাদ তৈরি করে উল্টো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে সখ্যের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বুধবার ব্রাসেলসে ন্যাটো সম্মেলনে যোগ দিয়ে জামাির্নসহ পশ্চিমা মিত্রদের একহাত নিয়েছেন তিনি। ১১ জুলাই তোলা সম্মেলনের এক গ্রæপ ছবিতে দেখা যায়, সেখানে উপস্থিত ন্যাটো মহাসচিব জেন্স স্টোলটেনবাগর্, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখেঁা, জামার্ন চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মাকের্লসহ বিশ্বনেতারা এক দৃষ্টিতে সংস্থাটির সামরিক প্রদশর্নী উপভোগ করছিলেন। কিন্তু সেখানে থাকা একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে উল্টো দিকে তাকিয়েছিলেন ট্রাম্প। ইউরোপের সঙ্গে ট্রাম্পের দৃশ্যমান দূরত্বের প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে এই ছবিকে। বলা হচ্ছে, ন্যাটো সম্মেলনে যে বাতার্ দিয়েছেন তার প্রতীকী সারমমর্ হলো এই ছবি। ট্রাম্পের অভিযোগের সারবত্তা হলো, যুক্তরাষ্ট্রের উদারতার সুযোগ নিচ্ছে ন্যাটোভুক্ত অন্য দেশগুলো। অন্যদের একাই টেনে তুলতে হচ্ছে ওয়াশিংটনকে; যা অন্যায্য। ফলে এমন জোট ধরে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের লাভ কী?